টাওয়ার অফ লন্ডনের সামনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফির প্রতিমূর্তি। ছবি: রয়টার্স।
ইতিহাস তারা তৈরি করেছে অনেক আগেই। ১৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ধারেকাছে কেউ নেই। সেই রিয়াল মাদ্রিদ শনিবার নামছে নতুন ইতিহাস তৈরি করতে। রিয়াল সমর্থকদের আগাম উচ্ছ্বাস ভেস্তে দিতে চাইছে ডর্টমুন্ড। অঘটন ঘটাতে মরিয়া তারা। শনিবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল দেখতে চলেছে স্পেনের সেরা ক্লাব বনাম জার্মানির লড়াকু যোদ্ধাদের দ্বৈরথ।
রিয়ালের চোখে ১৫তম ইউরোপিয়ান কাপ। গত ১০ বছরে ষষ্ঠ বার এই ট্রফি জেতার লক্ষ্যে নামবে তারা। রিয়ালকে এক সময় ‘ইউরোপের রাজা’ বলা হত। ১৯৫৬ সালে এই প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার পর থেকে টানা পাঁচ বার ট্রফি জিতেছিল তারা। আরও একটি জিতেছিল ১৯৬৬ সালে।
আলফ্রেডো ডি’স্টেফানো, ফেরেঙ্ক পুসকাস, পাকো জেন্তো এবং রেমন কোপার সেই দল ছিল অপ্রতিরোধ্য। ষষ্ঠ ট্রফি জেতার পর রিয়ালকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ৩২ বছর। ১৯৯৮ সালে সপ্তম ট্রফি জেতে তারা। তত দিনে ইউরোপিয়ান কাপের নাম বদলে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। সেই সময় পাঁচ বছরে তারা তিন বার এই ট্রফি জিতেছিল।
কিন্তু নয়ের গেরোয় আটকে দশমটি পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল আরও ১২ বছর। মাঝের সময়ে বড় রোনাল্ডো, জ়িনেদিন জ়িদান, রবার্তো কার্লোস, ডেভিড বেকহ্যাম, রাউল, ফিগো সবাইকে এক দলে খেলিয়েও সাফল্য পায়নি। কয়েক হাজার কোটি টাকার দল বার বার ব্যর্থ হয়েছিল।
২০১৪ সালে ব্যর্থতা কাটে। অর্থ দিয়ে বড় নামের পিছনে না ছুটে করিম বেঞ্জেমা, সের্জিয়ো রামোস, মার্সেলো, কাসেমিরো, লুকা মদ্রিচের মতো ফুটবলারকে কম টাকায় সই করানো হয়। বেশি দামে নেওয়া হয় শুধু ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে।
তাতেই কেল্লা ফতে। ২০১৪-য় প্রতিবেশী এবং চরমশত্রু আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ফাইনালে শেষ মুহূর্তে রামোসের সেই হেড অনেকের চোখে এখনও ভাসে। তখন যাঁর অধীনে রিয়াল ট্রফি জিতেছিল, সেই কার্লো আনচেলোত্তিই এখন রিয়ালের কোচ।
২০১৬-২০১৮ রিয়ালের স্বর্ণযুগ। টানা তিন বার ট্রফি জিতেছিল তারা। জ়িনেদিন জ়িদানের অধীনে রিয়াল আক্ষরিক অর্থেই ইউরোপের রাজা হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ২০১৮-য় জ়িদান, রোনাল্ডো এবং একাধিক ফুটবলার ক্লাব ছাড়ায় রিয়াল আবার দুর্বল হয়ে পড়ে।
২০২২-এ আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতে তারা। তখন কোচ ছিলেন এই আনচেলোত্তিই। তবে এ বার বড় নাম নয়, ব্রাজ়িলের তরুণদের দিকে নজর দেওয়া হয়। নিয়ে আসা হয় ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রদ্রিগোকে। তরুণদের দিয়েই বাজিমাত করে রিয়াল। সঙ্গে মদ্রিচ, টনি ক্রুস, কাসেমিরোর মতো অভিজ্ঞরা তো ছিলেনই।
এ বার অনেক অভিজ্ঞদের কাছে শেষ মরসুম হতে চলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালই মাদ্রিদ জার্সি গায়ে ক্রুসের শেষ ম্যাচ। পরের মরসুমে থাকবেন না নাচোও। অভিজ্ঞদের অবদান কতটা সেটা বোঝাতে গিয়ে আনচেলোত্তি বলেছেন, “দায়বদ্ধতা এবং ইতিবাচক মানসিকতা কী ভাবে দেখাতে হয়, সেটা ওদের দেখলে বোঝা যায়। ওরাই দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখন তরুণেরাও বাড়তি দায়িত্ব নিচ্ছে দেখতে পাচ্ছি। রিয়াল ক্লাবটা কেমন, সেটা প্রমাণ করতে ওরা মরিয়া।”
তবে ডর্টমুন্ডকে বাদ দিলে চলবে না। এদিন তারজিচের দল ‘পার্টি’ ভেস্তে দিতে চাইছে। ১৯৯৭ সালে এক বারই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে তারা। ২০১৩-য় ফাইনালে উঠেও হেরেছে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে। এ বার জার্মানির ঘরোয়া লিগে মরসুমটা খারাপ গেলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আতলেতিকো, প্যারিস সঁ জরমেঁর মতো ক্লাবকে হারিয়েছে তারা। ফাইনালে নামার আগে সেটাই ভরসা।
খেলা ক’টা থেকে শুরু?
ভারতীয় সময় রাত ১২.৩০টা থেকে।
কোন চ্যানেলে দেখা যাবে?
সোনি টেন ২, টেন ৩ এবং টেন ২ এইচডি এবং টেন ৩ এইচডি-তে দেখা যাবে। সোনি লিভ অ্যাপের সাবস্ক্রিপশন থাকলে সেখানেও দেখা যাবে।
কোথায় হবে ম্যাচ?
ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy