মধ্যমণি: নিজের তৃতীয় গোলের পরে বেঞ্জেমাকে (বাঁ-দিক থেকে তৃতীয়) অভিনন্দন সতীর্থদের। বুধবার। ছবি রয়টার্স।
এই মরসুমে তিনি রয়েছেন স্বপ্নের ছন্দে। বুধবার স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ফের ঝলসে উঠলেন করিম বেঞ্জেমা। উপহার দিলেন চোখধাঁধানো হ্যাটট্রিক। তাঁর দাপটে ঘরের মাঠে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হল টমাস টুহলের চেলসি।
অ্যাওয়ে ম্যাচে ৩-১ গোলে এগিয়ে থাকার সুবাদে সেমিফাইনালে ওঠা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদের। চেলসির ভবিষ্যৎ নিয়ে সঙ্কট অব্যাহত। শেষ পর্যন্ত নতুন মালিক হিসেবে কে বা কারা এই ক্লাবের দায়িত্ব তুলে নেবেন, তা নিয়ে চর্চা অব্যাহত। তারই মধ্যে বুধবারের একপেশে ম্যাচে রিয়াল প্রথম ধাক্কা দেয় ম্যাচের ২১ মিনিটে। ব্রাজিলীয় তারকা ভিনিসিয়াস জুনিয়রের বাড়ানো বল ধরে গোল করে যান ফরাসি স্ট্রাইকার। তিন মিনিটের মধ্যে ফের গোল। এ বার গোলের বল সাজিয়ে দেন অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ।
বিরতির আগে জার্মান তারকা কাই হার্ভাৎজ় গোল করে চেলসিকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। তবে সেই প্রয়াস সফল হয়নি। ৪৬ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে ফেলেন বেঞ্জেমা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই নিয়ে চার নম্বর হ্যাটট্রিক হয়ে গেল বেঞ্জেমার। তবে রিয়ালের জয়ের রাতে বড় ধাক্কা খেয়েছে টমাস মুলারদের বায়ার্ন মিউনিখ। অ্যাওয়ে ম্যাচে তারা ০-১ হেরে গিয়েছে ভিয়ারিয়ালের বিরুদ্ধে। ম্যাচের আট মিনিটে গোল করে যান নাইজিরিয়ার ২৫ বছরের উইঙ্গার আর্নট দানজু়মা। ফলে শেষ চারে ওঠা নিশ্চিত করতে হলে ঘরের মাঠে জিততেই হবে রবার্ট লেয়নডস্কিদের।
এ দিকে, মঙ্গলবার ৫-৫-০ ছকে দল সাজিয়েও শেষরক্ষা করতে পারলেন না দিয়েগো সিমিয়োনে। ভয়ঙ্কর রক্ষণের জঙ্গল ভেঙে ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে মূল্যবান এবং কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দিলেন কেভিন দ্য ব্রুইন। ম্যাচ শেষ হওয়ার ২০ মিনিট আগে নিজের পঞ্চাশতম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে খেলতে নামা বেলজিয়াম তারকা গোল করে স্বস্তি ফেরালেন দলের। গোলের নেপথ্যের কারিগর ফিল ফডেন। পরিবর্ত হিসেবে নেমে তিনি রেইনিলডোর পায়ের ফাঁক দিয়ে অবিশ্বাস্য থ্রু বাড়িয়েছিলেন ব্রুইনকে। বেলজিয়াম তারকা সেই বল ধরে বাকি কাজ হাসিল করতে ভুল করেননি।
ম্যাচের পরে পেপ যে ভাবে উৎসব মাতেন, তাতেই পরিষ্কার যে এই ম্যাচ জিতে তিনি কতটা তৃপ্ত। আগামী ১৩ এপ্রিল দু’দলের ফিরতি ম্যাচ মাদ্রিদে। সম্ভবত সেই কারণেই সিমিয়োনে মঙ্গলবারের ম্যাচ যে কোনও ভাবে ড্র রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাঁর পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।
ম্যাচের শুরু থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে, গোলের জন্য ম্যান সিটিকে রীতিমতো কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। কারণ আতলেতিকো রক্ষণে কোনও ফাঁকই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আক্ষরিক অর্থে দশ জন মিলে ম্যান সিটিকে রুখে দিতে প্রাণপাত করেছে মাদ্রিদের ক্লাব। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে প্রবল গতিতে প্রতিআক্রমণের কৌশল নিয়ে ম্যান সিটিকেই চাপে ফেলে আতলেতিকো। কিন্তু সেই চাপ কাটিয়ে ম্যান সিটিই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে।
গুয়ার্দিওলা প্রথম পর্বের ম্যাচ জিতে খুশি। বলেছেন, ‘‘একঅবিশ্বাস্য কঠিন প্রতিপক্ষকে হারিয়েছি। যাদের রক্ষণ কার্যত ভেদই করা যায় না। তাই ওদের বিরুদ্ধে ১-০ ফলকেও আমি ভাল বলব। চেষ্টা করব, মাদ্রিদেও যেন আমরাই ম্যাচটা বার করতে পারি। নিজেদের সমস্ত আবেগ এবং আনন্দকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘তবে আমরা আরও দু’টি গোল প্রায় করে ফেলেছিলাম। দশ জনকে দিয়ে রক্ষণ করাচ্ছে এমন একটা দলের বিরুদ্ধে সুযোগ তৈরি করাটাও বিরাট ব্যাপার। এমনিএ ভেবেছিলাম ওরা ৩-৫-২ ফর্মেশনে খেলবে। তাই প্রাগৈতিহাসক সময়ের ৫-৫-০ ফর্মেশনে খেলতে দেখে সত্যিই চমকে গিয়ছিলাম। যা যে কোনও দলের আক্রমণই ভোঁতা করে দেওয়া ক্ষমতা রাখে।’’
সিমিয়োনে মনে করছেন, তাঁর দলের এখনও সেমিফাইনালে খেলার সম্ভবনা উজ্জ্বল, ‘‘মানতেই হবে, ম্যান সিটি অসাধারণ দল। এমনিতেও পরিসংখ্যানই বলে দেয়, ওরা ঠিক কতটা ভাল। তা ছাড়া সিটির ফুটবলে অদ্ভুত একটা চোরা তীক্ষ্ণতা থাকে। তা-ই মাদ্রিদে আমাদের জেতার জন্য সব ধরনের অস্ত্রই প্রয়োগ করতে হবে। আর সেটা কিন্তু আমাদের আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy