Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
ISL 2022-23

গোয়ার গ্যালারিতেও সমর্থকদের চান জুয়ান

বৃহস্পতিবার গোয়া পৌঁছনোর কথা মোহনবাগানের। তবে হায়দরাবাদ ম্যাচ শেষ হতেই ফাইনালের নকশা তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন জুয়ান।

A Photograph of Pritam Kotal

হুঙ্কার: সোমবার টাইব্রেকারে শেষ গোল করে মোহনবাগানকে ফাইনালে তুলে প্রীতম কোটাল।  ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৩ ০৮:৩৪
Share: Save:

বছর দু’য়েক আগে গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামে এটিকে-মোহনবাগান যখন আইএসএলের ফাইনাল খেলছিল মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে, তিনি তখন ছিলেন এফসি গোয়ার দায়িত্বে। সেমিফাইনালে মুম্বইয়ের কাছে হেরেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়েই প্রীতম কোটালদের হার দেখেছিলেন জুয়ান ফেরান্দো। সে মুহূর্ত থেকেই হয়তো মনে মনে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, যদি কখনও সুযোগ পান, সবুজ-মেরুনকে চ্যাম্পিয়ন করবেন।

গোয়া ছেড়ে এটিকে-মোহনবাগানে যোগ দিলেও অভিষেক মরসুমে অল্পের জন্য লক্ষ্য পূরণ হয়নি জুয়ানের। গতবার সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয় হায়দরাবাদ এফসি-র কাছে হেরে। সোমবার রাতে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে সেই হায়দরাবাদকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে উঠে অধরা স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষায় সবুজ-মেরুনের স্পেনীয় কোচ। শনিবার গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামে সুনীল ছেত্রীদের বেঙ্গালুরু এফসিকে হারিয়ে মোহনবাগান কি পারবে চ্যাম্পিয়ন হতে?

বৃহস্পতিবার গোয়া পৌঁছনোর কথা মোহনবাগানের। তবে হায়দরাবাদ ম্যাচ শেষ হতেই ফাইনালের নকশা তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন জুয়ান। সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘আইএসএলে এই মরসুমে বেঙ্গালুরুকে একবার হারিয়েছি। ওরাও আমাদের হারিয়েছে। ফাইনালে আকর্ষণীয় লড়াই হবে। বেঙ্গালুরু দলে একাধিক দুর্দান্ত ফুটবলার রয়েছে। আশা করব, দল হিসেবে আমরা আরও ভাল খেলব। তা হলেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।’’

বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে মোহনবাগানের রণকৌশল কী হবে? সতর্ক জুয়ানের জবাব, ‘‘প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আছে হাতে। দু-তিন রকমের রণকৌশল তৈরি করতে হবে। আমার বিশ্বাস, ছেলেরা সেই পরিকল্পনার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে সব কিছু ঠিক হয়েছে। তাই আমি খুব খুশি।’’

এই মুহূর্তে তাঁর প্রধান চিন্তা টানা ম্যাচে ক্লান্ত ফুটবলারদের কী ভাবে দ্রুত তরতাজা করে তোলা যায় তা নিয়েই। বলছিলেন, ‘‘হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ৭৫ মিনিট খেলার পরে ফুটবলারদের ক্লান্ত হয়ে পড়াই স্বাভাবিক। তা ছাড়া ১২০ মিনিট খেলতে হলে চোট বাঁচিয়ে চলতেই হয়। একটা চোট ফাইনালে ওঠার পথে কাঁটা ছড়িয়ে দিতে পারে। এই পরিস্থিতি সামলানো ও ঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ কঠিন।’’ যোগ করেন, ‘‘তবে প্রথম থেকেই আমাদের মানসিকতা ছিল যে কোনও মূল্যে জিততেই হবে। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গেলে কী ভাবে খেলতে হবে, সেই পরিকল্পনা তৈরি ছিল। যদিও কাজটা সহজ ছিল না।’’

হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধ শেষ হওয়ার পরেই সাইড লাইনের ধারে ফুটবলারদের ডেকে নিয়ে বৈঠক সারেন জুয়ান। কী বলেছিলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস, প্রীতম কোটালদের? জুয়ানের জবাব, ‘‘এ রকম পরিস্থিতিতে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন। ছেলেদের বলেছিলাম নিজেদের উপরে আস্থা রাখতে। ১২০ মিনিট খেলার পরে দুই দলের ফুটবলাররাই ক্লান্ত থাকে। এই পরিস্থিতিতে একটা ভুলই প্রতিপক্ষের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে পারে।’’ যোগ করেন, ‘‘পেনাল্টিতে ম্যাচের নিষ্পত্তি হওয়াটা অনেকটা টসের মতো। এই পদ্ধতিটা আমার পছন্দ নয়। কিন্তু এটাও ফুটবলের অঙ্গ। ছেলেদের কিছু খুঁটিনাটি ব্যাপার মনে করিয়ে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম সেটপিসের ব্যাকরণ মাথায় রেখে টাইব্রেকারে যেতে। ওরা নিখুঁত ভাবেই সব কিছু পালন করেছে।’’

যুবভারতীতে প্রায় ৫৩ হাজার দর্শকের সমর্থন পেয়েছে মোহনবাগান। গোয়াতে ফাইনালে মোহনবাগান ভক্তদের অভাব অনুভব করবেন না? জুয়ানের আশা, ফাইনালে গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতেও সবুজ-মেরুন সমর্থকরা থাকবেন। বললেন, ‘‘ঘরের মাঠে খেললে সমর্থকদের ভিড় তো থাকবেই। ফুটবলারদের ওঁরা খুব ভালবাসেন। যখন মানসিক ভাবে বা শারীরিক ভাবে ছেলেরা ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তখন সমর্থকদের চিৎকারই ওদের উজ্জীবিত করে। আশা করছি, ফাইনালেও এই সমর্থন পাব। গোয়ার স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে মনে হয় ২৭ হাজারের বেশি দর্শক বসতে পারেন না। তবুও আশা করব, অনেক সমর্থকই গোয়া যাবে আমাদের জন্য গলা ফাটাতে।’’

হাসতে হাসতে যোগ করেন, ‘‘ফতোরদা ফাইনালের পক্ষে দারুণ। আমার পছন্দের মাঠও। গোয়ার মানুষ ফুটবল খুবই ভালবাসে। তবে ওখানে গেলে আমার জৈবসুরক্ষা বলয়ের কথা মনে পড়ে যায়।’’ হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে কিয়ান নাসিরিকে নামিয়ে চমকে দিয়েছিলেন জুয়ান। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাঁকে তুলে লিস্টন কোলাসোকে নামিয়েছিলেন। কিয়ানকে কেন পুরো ম্যাচে খেলালেন না? জুয়ানের ব্যাখ্যা, ‘‘কিয়ানের পক্ষে আরও বেশিক্ষণ খেলা কঠিন ছিল। কারণ, গত দুদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। ঠিক মতো অনুশীলনও করতে পারেনি। তা সত্ত্বেও ৪৫ মিনিট দলকে যে ভাবে সাহায্য করেছে, তাতে আমি খুব খুশি। প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ তৈরিতে সাহায্য করেছে। দলের নয় ও দশ নম্বরের ভূমিকা পালনকরেছে সফল ভাবেই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE