ক্লেটন গোল করলেও লাভ হল না। হারল ইস্টবেঙ্গল। ছবি টুইটার
ইস্টবেঙ্গল ১ (ক্লেটন)
এফসি গোয়া ২ (ব্রেন্ডন, এদু)
শেষ মুহূর্তের গোলে স্বপ্নভঙ্গ ইস্টবেঙ্গলের। খেলা শেষের কয়েক মুহূর্ত আগে গোল খেয়ে ঘরের মাঠে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে হেরে গেল লাল-হলুদ। এদু বেদিয়ার ফ্রিকিকে নিশ্চিত এক পয়েন্ট হাতছাড়া হল স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের দলের। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গোয়াকে এগিয়ে দেন ব্রেন্ডন ফের্নান্দেস। দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান ক্লেটন সিলভা। খেলা শেষের কয়েক সেকেন্ড আগে বেদিয়ার ফ্রিকিক গোয়ার জয় নিশ্চিত করে।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গল যে খেলাটা খেলেছে, তাতে নিরাশ মুখে ফেরার কথা ছিল না সমর্থকদের। প্রথমার্ধে হতশ্রী পারফরম্যান্স হলেও দ্বিতীয়ার্ধে কনস্ট্যান্টাইনের ছেলেরা নতুন উদ্যম নিয়ে মাঠে নামেন। দু’টি পরিবর্তন খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। একের পর এক আক্রমণ হতে থাকে। গোয়ার শক্তিশালী ডিফেন্সও এক সময় কেঁপে গিয়েছিল। আক্রমণের ঝাঁজ বজায় রেখেই গোল পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু দিনের শেষে সেই গোল ধরে রাখা গেল না রক্ষণভাগের ফুটবলারদের ব্যর্থতায়।
দু’টি গোলই ইস্টবেঙ্গল খেয়েছে রক্ষণের ভুলে। বার বার সমালোচনার মুখে পড়া সত্ত্বেও সুমিত পাসিকে এ দিন প্রথম একাদশে রেখেছিলেন কনস্ট্যান্টাইন। তবে খেলান রাইট ব্যাকে। ব্রিটিশ কোচের এই সিদ্ধান্ত অবাক করার মতোই। কারণ, এত দিন পাসিকে আক্রমণভাগে খেলিয়েছেন কনস্ট্যান্টাইন। তবে রাইট-ব্যাকেও পাসি ‘স্বমহিমায়’। যে ৪৫ মিনিট খেললেন, এক বারের জন্যেও পাসিকে দেখে মনে হয়নি তিনি আত্মবিশ্বাসী হয়ে নেমেছেন। উল্টে তাঁর ভুল পাস, ভুল ক্লিয়ারেন্স সুবিধা করে দিচ্ছিল গোয়ার। কনস্ট্যান্টাইন কোন দিক সামলাবেন বুঝতে পারছেন না। কোনও দিন আক্রমণভাগ ভাল খেললে ডিফেন্স ডুবিয়ে দেয়। যেমন হল এ দিন। আবার কখনও হয় উল্টোটা।
ম্যাচের শুরুটা ইস্টবেঙ্গলের কাছে মোটেই ভাল হয়নি। প্রথম থেকেই ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে রাখার পরিকল্পনা করে নেমেছিল গোয়া। শুরুতে ইস্টবেঙ্গল একটা সুযোগ পেলেও, পাল্টা আক্রমণ শানাচ্ছিল গোয়া। তবে আচমকা যে তারা গোল পেয়ে যাবে, এটা কেউই ভাবতে পারেননি। গোয়াকে গোল কার্যত উপহার দিল ইস্টবেঙ্গল।
মাঝমাঠে আলভারো ভাসকুয়েসের থেকে বল পেয়েছিলেন গ্লেন মার্টিন্স। তিনি পাস বাড়ান ব্রেন্ডন ফের্নান্দেসকে। ব্রেন্ডনের সামনেই ছিলেন ইভান গঞ্জালেস। অনায়াসে তাঁর বল ক্লিয়ার করে দেওয়ার কথা। লাল-হলুদের অধিনায়ক বল ছুঁতেই পারলেন না। সামনে একা গোলকিপারকে পেয়ে অনায়াসে গোল করলেন ব্রেন্ডন।
কিছু ক্ষণ পরেই বক্সের বাইরে ভাল জায়গায় ফ্রিকিক পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। আলেক্স লিমার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে গোয়া যত বারই আক্রমণ করছিল, কেঁপে যাচ্ছিলেন লাল-হলুদের ডিফেন্ডাররা। কখনও লালচুংনুঙ্গা, কখনও সুমিত পাসি, ভরসা দিতে পারছিলেন না কেউই। এমনকি, যে ইভানের উপর অনেক আশা করে রয়েছেন সমর্থকরা, তিনিও নজর কাড়তে পারলেন না।
দ্বিতীয়ার্ধে বরং ইস্টবেঙ্গলের খেলায় অনেক বেশি ঝাঁজ লক্ষ্য করা গেল। প্রথম থেকেই গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের ছেলেরা। ব্রিটিশ কোচ বুঝেছিলেন, স্ট্রাইকারদের জন্য বল জোগান দেওয়ার লোক চাই। বিরতির পরেই নামিয়ে দিলেন সার্থক গোলুইকে। সঙ্গে নামলেন নাওরেম মহেশ। এই দুই ফুটবলার মাঠে নামতেই টগবগ করে ফুটতে লাগল ইস্টবেঙ্গল।
সেই আক্রমণের ফলও পাওয়া গেল। ৫৮ মিনিটে ডান দিক থেকে জর্ডন ও’ডোহার্টিকে দারুণ বল বাড়িয়েছিলেন ভিপি সুহের। বল রিসিভ করেই ডোহার্টির শট অল্পের জন্য বারের উপর দিয়ে উড়ে যায়। এর কিছু ক্ষণ পরেই পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। এ ক্ষেত্রে অবদান সেই সার্থকের। তিনি বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে আক্রমণের প্রথম মুভটা শুরু করেছিলেন। এর পর জেরির থেকে লম্বা পাস পেয়ে সুহের বক্সে ঢুকতে গেলে তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন বিপক্ষ গোলকিপার ধীরজ সিংহ। রেফারি হরিশ কুন্ডু সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মুখে হাসি ফেরান ক্লেটন।
এর পরেও ইস্টবেঙ্গল আক্রমণ বজায় রাখে। তবে কনস্ট্যান্টাইন এটাও নিশ্চিত করতে চেয়েছেন যাতে দল গোল না খায়। সে কারণেই লিমার মতো আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়কে বসিয়ে নামিয়ে দেন কারালাম্বোস কিরিয়াকুকে। তবে রক্ষণাত্মক মনোভাব যে কোনও সময় ডেকে আনতে পারত বিপদ। সেটাই হল। খেলার শেষ দিকে বক্সের বেশ কিছুটা বাইরে ফ্রিকিক পেয়েছিল গোয়া। বেদিয়ার হাল্কা করে বক্সে ভাসানো শটের ফ্লাইট বুঝতেই পারলেন না ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার কমলজিৎ সিংহ। বল তাঁকে পেরিয়ে ঢুকে গেল গোলে। নিশ্চিত পয়েন্ট যুবভারতীর মাঠে ফেলে রেখে এল ইস্টবেঙ্গল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy