কোহলীদের নিয়ে আতঙ্কে স্তিমাচ ফাইল ছবি
কিছু দিন আগেই বিপুল অঙ্কে বিক্রি হয়েছে আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্ব। ভবিষ্যতে এই লিগ ভারতের খেলাধুলোকে শাসন করবে বলেই মনে করছেন অনেকে। খবর গিয়েছে তাঁর কানেও। কিছুটা ভীত, কিছুটা আশঙ্কায় জাতীয় ফুটবল দলের কোচ ইগর স্তিমাচ। মাঠে জাপান, কোরিয়া এখন আর তাঁর প্রধান শত্রু নয়, মাঠের বাইরে আইপিএলের সঙ্গে লড়াইটাই বেশি কঠিন মনে করছেন তিনি। স্তিমাচের আশঙ্কা, ক্রিকেটের এই বাড়বাড়ন্তে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ফুটবল। ভারতকে এশিয়ান কাপে তোলার পর আবার মুখ খুললেন তিনি। এ বার আরও বেশি কঠিন শোনাল তাঁর গলা।
অতীতে আইপিএল বা ক্রিকেটের কারণে ভারতীয় ফুটবলের সূচি পরিবর্তনের ঘটনা দেখা গিয়েছে। গত বছরই আইপিএলের কারণে দেরিতে আইএসএলের মরসুম শুরু হয়েছিল। স্তিমাচ চাইছেন না সেটা হোক। বলেছেন, “সবাই ভাবছে তারা জাতীয় দলের জন্য বিরাট কাজ করছে। মরসুম যে আরও বড় হওয়া দরকার এবং ফুটবলারদের বেশি ম্যাচ খেলা দরকার, এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। অন্তত ১০-১১ মাস ধরে ওদের খেলা উচিত। ৬-৮ সপ্তাহের বিরতি যথেষ্ট। সে ভাবেই বছরের ক্যালেন্ডার তৈরি করতে হবে। ফুটবলের ক্যালেন্ডারকে কোনও ভাবেই আইপিএল বা সম্প্রচারের উপরে নির্ভর করলে চলবে না। ফুটবলের উন্নতি করতে গেলে এটা এখনই বন্ধ হওয়া দরকার। উন্নত দেশের দিকে তাকান। ওরা অন্তত ১০ মাসে ৫০টা ম্যাচ খেলে। আমার মতে, আইএসএলে অন্তত ১৮টা দলের খেলা উচিত। উন্নতি এবং অবনমন থাকতে হবে। তৃণমূল স্তরে উন্নতির ক্ষেত্রে আমরা এখনও ৮-১০ বছর পিছিয়ে আছি। ভারতীয় কোচেদের শেখানোর জন্য ভাল বিদেশি কোচ দরকার।”
স্তিমাচের মতে, ভারতকে ফুটবলে এগিয়ে যেতে হলে শুধু আইএসএলের খেয়াল রাখলে চলবে না। দরকার জাতীয় দলের ভাল পারফরম্যান্স। ফুটবল কর্তা এবং আইএসএল মালিকরাও তাঁর রোষে পড়েছেন। স্তিমাচ বলেছেন, “এই দায়িত্ব নেওয়ার পর ভেবেছিলাম পরিস্থিতি অন্য রকম হবে। জাতীয় দলের সাহায্যে অনেকে এগিয়ে আসবে, এটাই ভেবেছিলাম। তবে কেউ কেউ নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ নিয়েই বেশি উৎসাহিত। খুব অবাক হয়েছি সেটা দেখে। অনেকে বুঝতেই চান না জাতীয় দলের উন্নতির জন্য সময় বেশি লাগা কতটা দরকারি। কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। তবে সরকারের থেকে আরও বেশি সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছিলাম। অন্যান্য দেশে সেই দেশের বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে নেওয়া হয়। ভারতে সে কাজের অনুমতি দেওয়া হয় না। এখানে আসার পর ভেবেছিলাম ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় জিনিস আমার হাতের কাছে থাকবে। কিন্তু আমার হাত বাঁধা ছিল। ফলে শুধু নিজের কাজটা নিয়েই আমি বেশি ব্যস্ত ছিলাম।”
স্তিমাচ জানিয়েছেন, ভারতে এত দিন কোচিং করানোর সময়ে সবচেয়ে বেশি সাহায্য পেয়েছেন সুনীল ছেত্রীর থেকে। বলেছেন, “সুনীলকে আমি নিজের সহকারী মনে করি। আমার ডান হাত। সামনেই ও ৩৮ বছর পূর্ণ করবে। এখনও নিজেই নিজেকে চ্যালেঞ্জ করে। ২৬-এর উদান্তর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়নোর চেষ্টা করে। ২১-এর সুরেশকে টপকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তরুণ ফুটবলারদের লালন-পালন করতে ওর জুড়ি নেই।”
স্তিমাচ মনে করেন, ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির স্বার্থে এখনই নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। বলেছেন, “নির্বাচন দ্রুত না হলে ম্যাচ আয়োজনে সমস্যা হতে পারে। সেটা হলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy