মহড়া: কুয়েত ম্যাচের প্রস্তুতিতে অধিনায়ক সুনীল। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
ভারতীয় দলের অনুশীলন শুরু হওয়ার ঠিক আগে অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে গভীর আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন কোচ ইগর স্তিমাচ। একটু পরেই দেখা গেল, দুই প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে উঠে লিস্টন কোলাসো, লালিয়ানজ়ুয়ালা ছাংতে-রা সেন্টার ও ক্রস করছেন। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে থেকে গোল করার মহড়া সারছেন সুনীল, সাহাল আব্দুল সামাদ, রহিম আলি-রা। নিজে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেই নিজের উপরেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। কিন্তু সতীর্থরা গোল করতে ব্যর্থ হলে ভুল শুধরে দিচ্ছেন। একটু দূরে দাঁড়ানো ইগরের মুখে স্বস্তির হাসি। সুনীলের মতো ফুটবলার দলে থাকলে কোচের কাজ যে অনেকটাই কমে যায়।
গোল করার মহড়াই শুধু নয়। নিউ টাউনে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের উৎকর্ষ কেন্দ্রে মঙ্গলবার বিকেলে গোল আটকানোর অনুশীলনও সেরে রাখল ভারতীয় দল। এখানেও নেতৃত্বে সুনীল। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল কখনও হেড করে, কখনও আবার জোরালো শটে বিপন্মুক্ত করলেন তিনি। খেলা থামিয়ে আনোয়ার আলি, রাহুল ভেকেদের বোঝাচ্ছিলেন, কী ভাবে দাঁড়াতে হবে। আটকাতে হবে বিপক্ষের আক্রমণ ভাগের ফুটবলারদের। দুই প্রান্ত দিয়ে কুয়েতের আক্রমণ শানানোর রণনীতি যে ভারতীয় দলের উদ্বেগের প্রধান কারণ, আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন সাহাল। অনুশীলন শুরুর আগে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বললেন, ‘‘কুয়েত দারুণ দল। দুই প্রান্ত দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে আক্রমণে ওঠে। আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে।’’
কুয়েতের কলকাতায় পৌঁছনোর কথা আজ, বুধবার সকালে। মরণ-বাঁচন ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষের সামনে যদি রণকৌশল ফাঁস হয়ে যায়, তাই ঝুঁকি না নিয়ে মঙ্গলবারই মূল অনুশীলন সেরে ফেলল ভারতীয় দল। যা ইঙ্গিত পাওয়া গেল, বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে কুয়েতের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে সুনীলের সঙ্গে সাহালের শুরু করার সম্ভাবনাই বেশি। স্টপার হিসেবে আনোয়ারের সঙ্গে হয়তো থাকবেন রাহুল। কিন্তু সন্দেশ জিঙ্ঘনহীন ভারতীয় দলের রক্ষণ কি তৈরি কুয়েতের আক্রমণের ঝড় থামাতে? সাহালের কথায়, ‘‘চোটের কারণে জিঙ্ঘন ভাইয়ের না থাকা বড় ধাক্কা। ওর শূন্যস্থান পূরণ করা সত্যিই কঠিন। আমরা প্রতিমুহূর্তে জিঙ্ঘন ভাইয়ের অভাব অনুভব করছি। আশা করছি, দলের বাকিরা নিশ্চয়ই ওর শূন্যস্থান পূরণ করতে সফল হবে।’’
চোটের কারণে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দু’টি ম্যাচেই খেলতে পারেননি সাহাল। সৌদি আরবের আভায় প্রথম পর্বের দ্বৈরথে গোলশূন্য ড্র করেছিলেন সুনীলরা। গুয়াহাটিতে ১-২ গোলে হেরে গিয়েছিলেন। এর ফলে অনেকটাই কঠিন হয়ে গিয়েছে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে তৃতীয় পর্যায়ে প্রথমবার ভারতীয় দলের খেলার সম্ভাবনা। স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে কুয়েতের বিরুদ্ধে জিততেই হবে। সাহাল নিজেও মরিয়া মরণ-বাঁচন ম্যাচে প্রথম একাদশে ফিরতে। বললেন, ‘‘আমি প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে রয়েছে। মুখিয়ে রয়েছি খেলার জন্য।’’
কুয়েত ম্যাচ সাহালের কাছে আরও একটা কারণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। জাতীয় দলের জার্সিতে শেষ বার খেলবেন তাঁর সতীর্থ এবং আদর্শ সুনীল ছেত্রী। ভারতীয় দলের তারকা বললেন, ‘‘সুনীল যদি নিজের ১০০ শতাংশ দেওয়ার জন্য তৈরি থাকে, আমরা কেন পারব না? আমাদের লক্ষ্য থাকবে একশো শতাংশেরও বেশি দেওয়া। বিদায়ী ম্যাচে সুনীল ভাই আমাদের কাছে একটা জিনিসই চেয়েছে— কুয়েতের বিরুদ্ধে জয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy