উত্থান: ডার্বিতে হ্যাটট্রিক। নজর কেড়ে নিেয়ছেন কিয়ান। ছবি টুইটার।
আইএসএলের ফিরতি ডার্বিতে এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দুরন্ত হ্যাটট্রিক করে রূপকথার উত্থান তাঁর। মোহনবাগান সমর্থকদের নয়নের মণি কিয়ান নাসিরিকে এ বার জাতীয় দলেও দেখতে চান আই এম বিজয়ন।
পরিবারের এক সদস্যের অসুস্থতার কারণে গত শনিবার সারা দিন হাসপাতালে থাকতে হওয়ায় শুরু থেকে খেলা দেখতে পারেননি ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। তবে কিয়ানের তিনটি গোল দেখে মুগ্ধ বিজয়ন। আজ, মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে সুভাষ ভৌমিকের স্মরণসভায় যোগ দিতে কলকাতায় আসার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। সোমবার দুপুরে ত্রিশুর থেকে ফোনে বিজয়ন প্রথমেই জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘কিয়ান কি ভারতের নাগরিক? ওর ভারতীয় পাসপোর্ট আছে তো?’’ জামশিদ-পুত্রের ভারতের পাসপোর্ট রয়েছে শুনে উচ্ছ্বসিত হয়ে বললেন, ‘‘নিশ্চিন্ত হলাম। তা হলে তো ভারতের হয়ে খেলতে কোনও বাধাই নেই কিয়ানের। ওকে অবিলম্বে জাতীয় দলে ডাকা উচিত।’’ ডার্বিতে একটা হ্যাটট্রিক করেই জাতীয় দলে? বিজয়ন বলছেন, ‘‘কেন নয়? ভারতীয় ফুটবলে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচের চেয়ে কঠিন কিছু হয় না। অনেক বড় বড় ফুটবলারকে দেখেছি ডার্বির চাপ সামলাতে না পেরে ব্যর্থ হয়েছে। কিয়ানকে দেখে একবারের জন্যও মনে হয়নি যে, ও চাপে রয়েছে। বাবা জামশিদ নাসিরির মতোই ছটফট করে চাপে ফেলে দিচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডারদের।’’
কিয়ানের তিনটি গোলের মধ্যে কোনটা সেরা? বিজয়নের কথায়, ‘‘তিনটি গোলই অনবদ্য।’’ এর পরেই ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়কের বিশ্লেষণ, ‘‘কিয়ান প্রথম গোলটা করল ডান পায়ের নিখুঁত প্লেসিংয়ে। সৌরভ দাসের দুর্বল হেড থেকে বল পাওয়ার পরে এক মুহূর্তের জন্য সময় নষ্ট না করে দ্বিতীয় পোস্ট দিয়ে জালে জড়িয়ে দেয় ও। যে স্ট্রাইকার বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের মধ্যে যত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সে তত সফল হয়।’’ যোগ করলেন, ‘‘কিয়ান যদি সে দিন বলটা ধরে মারার চেষ্টা করত, গোল না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ছিল।’’ দ্বিতীয় গোল? বিজয়নের ব্যাখ্যা, ‘‘লিস্টন কোলাসোর সেন্টার থেকে নেওয়া ডেভিড উইলিয়ামসের হেড পোস্টে লেগে ফিরতেই ডান পায়ের ভলিতে গোল করে কিয়ান। এই গোলটার ক্ষেত্রে আমি প্রশংসা করব ওর অনুমান ক্ষমতার। কিয়ান দেখেছিল উইলিয়ামসের সঙ্গে বিপক্ষের তিন জন ডিফেন্ডার রয়েছে। তাই ও একটু পিছনে ছিল। যাতে বল কোনও ভাবে বেরিয়ে এলে গোল করতে পারে। ঠিক সেটাই হল।’’ আর তৃতীয় গোল? ‘‘মনবীর সিংহের ঠিক পিছনেই ছিল কিয়ান। তাড়াহুড়ো করে আদিল ঠিক মতো ট্যাকল করতে পারেনি। ছিটকে আসা বল বাঁ পায়ের শটে জালে জড়িয়ে দেয়। স্ট্রাইকারকে সব সময় বুঝতে হবে, কোথায় দাঁড়ালে বল পাওয়া যাবে। আধুনিক ফুটবলে বল ছাড়া খেলা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ডার্বিতে কিয়ান তা আরও একবার প্রমাণ করল,’’ বললেন মুগ্ধ বিজয়ন।
কিয়ান কি জামশিদকে ছাপিয়ে যেতে পারবেন? বিজয়ন বলছেন, ‘‘এই ধরনের তুলনার আমি পক্ষপাতী নই। জামশিদের বিরুদ্ধে খেলেছি। তাই জানি, ও কত বড় স্ট্রাইকার ছিল। জামশিদের হেড ভয়ঙ্কর ছিল। কিয়ান হেডে কতটা দক্ষ, এখনও জানি না। তা ছাড়া ও সবে শুরু করেছে। এখনও অনেক দূর যেতে হবে। ভবিষ্যতের তারকা হয়ে ওঠার সব গুণই রয়েছে ওর মধ্যে। এখন দরকার শুধু কিয়ানকে ঠিক মতো গড়ে তোলা। বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে সুনীল ছেত্রীর শূন্যস্থান পূরণ করার যোগ্যতা রয়েছে কিয়ানের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy