হ্যাটট্রিকের পর লেয়নডস্কি। ছবি: এএফপি
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ঝড় উঠল। সেই ঝড়ের নাম বায়ার্ন মিউমিখ। আর ঝড়ের ভর কেন্দ্র রবার্ট লেয়নডস্কি। সেই ঝড়ে ভর করেই আলিয়াঞ্জ এরিনায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬-র ম্যাচে বায়ার্ন ৭-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল এফসি সালজবার্গকে। একই সঙ্গে জার্মান জায়ান্টরা চলে গেল প্রতিযোগিতার শেষ আটে।
মাত্র ১১ মিনিটে হ্যাটট্রিক করে বায়ার্নের জয় ওঠা নিশ্চিত করে দেন পোলিশ তারকা। ম্যাচের ১২ মিনিটে পেনাল্টি পায় বায়ার্ন। গোল করতে ভুল করেননি দুরন্ত ছন্দে থাকা লেয়নডস্কি। শুরু থেকেই ম্যাচের রাশ নিজেদের পায়ে নিয়ে নেন ম্যানুয়েল ন্যুয়েররা। বল ঘুরেছে বায়ার্ন ফুটবলারদের পায়ে পায়েই। মিনিটে মিনিটে জার্মান আক্রমণ আছড়ে পড়তে শুরু করে অস্ট্রিয়ান ক্লাবটির বক্সে। চাপের মুখে ভুল করতে শুরু করেন সালজবার্গের ফুটবলাররা।
লেয়নডস্কি, থমাস মুলারদের ফুটবল দক্ষতায় আটকাতে না পেরে শক্তি প্রয়োগ শুরু করে সালজবার্গ। তাতেই ম্যাচের ২১ মিনিটে দ্বিতীয় পেনাল্টি পায় বায়ার্ন। প্রথম বারের মতো এ বারও বক্সের মধ্যে লেয়নডস্কিকে ফেলে দেন সালজবার্গ ডিফেন্ডার ম্যাক্সিমিলিয়ান ওবের। দ্বিতীয় সুযোগেও ভুল হয়নি বায়ার্ন তারকার। ২-০ ব্যবধানে দলকে এগিয়ে দেন লেয়নডস্কি। এর ঠিক দু’মিনিট পরেই মুলারের থেকে বল পেয়ে গোল করেন লেয়নডস্কি। সালজবার্গের গোলরক্ষক ফিলিপ কোনকে এগিয়ে এসেও থামাতে পারেননি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে দ্রুততম হ্যাটট্রিক করার নজিরও গড়লেন পোলিশ ফুটবলার। এর আরে ১৯৯৬ সালে এসি মিলানের মার্কো সিমোনে রোজবার্গের বিরুদ্ধে ২৪ মিনিটে হ্যাটট্রিক করে ছিলেন। ২৬ বছরের সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন লেয়নডস্কি।
লেয়নডস্কির হ্যাটট্রিকের পরেও আক্রমণে ঝাঁজ কমায়নি বায়ার্ন। ৩১ মিনিটে সের্জে ন্যাব্রি গোল করে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন দলকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে থেকে প্রতিপক্ষের উপর আরও চাপ বা়ড়ায় বায়ার্ন ফুটবলাররা। ৫৪ মিনিটে দলের পক্ষে পঞ্চম গোল করেন মুলার। এর পর ৭০ মিনিটে সাজবার্গের মাউরিতস কেরগার্ড গোল করে ব্যবধান কমালেও লাভ হয়নি। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে দলের পক্ষে ষষ্ঠ এবং নিজের দ্বিতীয় গোল করেন মুলার। তাতেও গোলের খিদে মেটেনি জার্মান ক্লাবটির। ৮৫ মিনিটে লেরয় সানে বায়ার্নের সপ্তম গোল করেন।
প্রথম লেগের খেলায় সাজবার্গের ঘরের মাঠে জয় পায়নি বায়ার্ন। ১-১ গোলে শেষ হয় সেই ম্যাচ। সম্ভবত সে কারণেই দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে বিধ্বংসী মেজাজে দেখা গেল বায়ার্ন ফুটবলারদের। তবে ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত সাজবার্গ। পাঁচ মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করে তারা। শুরুতে পিছিয়ে পড়লে বায়ার্নের জয় এত দাপুটে হত কি না, তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। সমালোচকদের সেই সুযোগে জল ঢেলে দু’দফা মিলিয়ে ৮-২ ব্যবাধানে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে পৌঁছে গেল বায়ার্ন।
সাজবার্গের রক্ষণভাগের ফুটবলার র্যামস ক্রিসটেনসেন বলেছেন, ‘‘আজ প্রতিপক্শ দল নিজেরে অন্য পর্যায়ে উন্নীত করে ছিল। কয়েকটা সুযোগ আমরা পেয়েছিলাম। কাজে লাগেতে পারিনি। আমরা সবকিছু দিয়েছি। কিন্তু কিছুই যথেষ্ট ছিল না। ওদের পরিকল্পনা, খেলার মেজাজ, আগ্রাসী মানসিকতার সামনে কিছুই করতে পারিনি আমরা। মানতেই হবে, সব বিভাগেই ওরা আমাদের থেকে অনেক ভাল খেলেছে।’’ অন্যদিকে মুলার বলেছেন, ‘‘ভাগ্য আমাদের সঙ্গ দিয়েছে। সাজবার্গের ওটারই অভাব ছিল। পাঁচ মিনিটেই ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে যেতে পারতাম আমরা। তা হলে অন্যরকম কিছুও হতে পারত। আমাদের অনেক সময়ই পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল হতে হয়। দিনের শেষে অবশ্য নিজেদের সেরা প্রমাণ করতে পেরেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy