E-Paper

ট্রফি চাই, আবদার উড়ানে

সবুজ-মেরুন কোচের মুখে এমনিতে সর্বক্ষণ হাসি লেগে থাকে। এ দিনই ব্যতিক্রম। গোয়া রওনা হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার সকালেও যুবভারতীতে অনুশীলন করিয়েছেন তিনি।

মহড়া: ম্যাকহিউ-দিমিত্রি-হ্যামিল। গোয়া যাওয়ার আগে প্রস্তুতিতে তিন মূর্তি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক   

মহড়া: ম্যাকহিউ-দিমিত্রি-হ্যামিল। গোয়া যাওয়ার আগে প্রস্তুতিতে তিন মূর্তি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক   

শুভজিৎ মজুমদার

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ ০৭:২৫
Share
Save

বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা থেকে গোয়াগামী বিমান সবে আকাশে ডানা মেলেছে। শুভাশিস বসু ও প্রীতম কোটালকে এক বিমানসেবিকার অনুরোধ, ‘‘গোয়া পৌঁছনোর পরে আপনাদের সঙ্গে আমরা সকলে ছবি তুলতে চাই।’’

একই বিমানে বেশ কিছু বাঙালি গোয়ায় ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন। এটিকে-মোহনবাগানের ফুটবলারদের দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তাঁরা। সামনের আসনেই বসে থাকা হুগো বুমোস, স্লাভকো দামইয়ানোভিচ ও লিস্টন কোলাসোর কাছে তাঁদের আবদার, ‘‘বেঙ্গালুরু এফসি-কে হারিয়ে আইএসএলের ট্রফি নিয়েই কলকাতায় ফিরতে হবে।’’ সবুজ-মেরুনের তিন তারকাই হেসে ফেললেন। বলছিলেন, ‘‘সমর্থকরাই আমাদের প্রেরণা। ওঁদের জন্যই যে ভাবেই হোক আমাদের চ্যাম্পিয়ন হতে হবে।’’

গোয়া পৌঁছনোর পরেও একই দৃশ্য। বিমানবন্দরের বাইরে ফুটবলাররা পা রাখতেই বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তি ছুটে এলেন। আশিস রাই, লালরিনলিয়ানা নামতেদের কাছে গিয়ে বললেন, ‘‘আমি বাঙালি এবং মোহনবাগানের ভক্ত। কর্মসূত্রে গোয়ায় রয়েছি দীর্ঘদিন ধরে। আপনাদের সঙ্গে ছবি তুলতে পারি?’’ হাসিমুখেই দাঁড়িয়ে পড়লেন আশিসরা। এর পরে তিনি ছুটলেন জুয়ান ফেরান্দোর কাছে।

সবুজ-মেরুন কোচের মুখে এমনিতে সর্বক্ষণ হাসি লেগে থাকে। এ দিনই ব্যতিক্রম। গোয়া রওনা হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার সকালেও যুবভারতীতে অনুশীলন করিয়েছেন তিনি। ফুটবলাররা কলকাতা বিমানবন্দরের যে রেস্তরাঁয় প্রাতঃরাশ করছিলেন, সেখানে না ঢুকে সহকারীদের নিয়ে একটি কফি শপে চলে যান। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে আলোচনা করলেন তাঁদের সঙ্গে। বিমানেও সর্বক্ষণ চিন্তামগ্ন দেখাল তাঁকে। গোয়া পৌঁছে হোটেলে যাওয়ার জন্য ফুটবলারদের সঙ্গে টিমবাসে উঠলেন না জুয়ান। বিমানবন্দর থেকেই সোজা চলে গেলেন প্রথমে ফতোরদা স্টেডিয়ামের মাঠ দেখতে। তার পরে গেলেন বেনোলিমে। ফাইনালের আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় এই মাঠেই চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে মোহনবাগানের।

আইএসএলের ফাইনালে প্রতিপক্ষ সুনীল ছেত্রীদের বেঙ্গালুরু বলেই কি বেশি চিন্তায় জুয়ান? মোহনবাগান ছেড়ে রয় কৃষ্ণ, সন্দেশ জিঙ্ঘন, প্রবীর দাসদের বেঙ্গালুরুতে যাওয়ার জন্য স্পেনীয় কোচকেই দায়ী করেন সমর্থকরা। শনিবার চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলে ফের যে সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হতে হবে, জুয়ান তা খুব ভাল করেই জানেন। তাই হয়তো তাঁর উদ্বেগ বাড়ছে। হয়তো এই কারণেই গত কয়েক দিন ধরে একাধিক রণনীতির মহড়া দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারের অনুশীলনে যেমন আশিক কুরুনিয়নকে ‘ফ্রি প্লেয়ার’ (যে ফুটবলারের জন্য নির্দিষ্ট কোনও জায়গা বরাদ্দ থাকে না। স্বাধীন ভাবে খেলতে দেওয়া) হিসেবে খেলালেন। জুয়ানের এই ভাবনার কারণ দু’টি। এক) মাঝমাঠে হুগো বুমোসের উপর থেকে চাপ কমাতে চান। দুই) বেঙ্গালুরু থেকেই মোহনবাগানে এসেছেন আশিক। পুরনো দলের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল তিনি।

বিপক্ষের রক্ষণ ভাঙার পরিকল্পনার পাশাপাশি মোহনবাগান কোচকে সুনীল, কৃষ্ণদের গোল করা আটকানোর ছকও কষতে হচ্ছে। হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে সেমিফাইনালের দুই পর্বে যে ভাবে রক্ষণ মজবুত করে দলকে খেলিয়েছেন তিনি, ফাইনালেও একই পন্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। পরিকল্পনা সফল করতে তাঁর প্রধান ভরসা স্লাভকো ও শুভাশিস। আত্মবিশ্বাসী স্লাভকোর কথায়, ‘‘ভারতে এই প্রথম কোনও ট্রফি জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আমি। কোনও মতেই এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। আমার দুই মেয়ে ও ছেলে আবদার করেছে ট্রফি জিততে হবে। আমি ওদের তা উপহার দিতে চাই।” আইএসএলে এই মরসুমে বেঙ্গালুরুতে গিয়ে মোহনবাগান জিতলেও হেরে গিয়েছিল ঘরের মাঠে। এ বার কী হবে? স্লাভকো বললেন, “বেঙ্গালুরুর আক্রমণভাগ দারুণ শক্তিশালী। রয় কৃষ্ণের বিরুদ্ধে আগেও খেলেছি। পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।” শুভাশিস বললেন, ‘‘আমার মতে বেঙ্গালুরুর জ়াভি সবচেয়ে বিপজ্জনক। ওকে নজরে রাখতে হবে। সেই ক্ষমতা আমাদের আছে।’’ যোগ করেন, ‘‘ডার্বির পর থেকে প্রতিটি ম্যাচই ফাইনাল মনে করে খেলেছি। শেষ লড়াইয়েও আমাদের জিততে হবে।’’ ফুটবলারদের এই লড়াকু মানসিকতাই আপাতত স্বস্তিতে রাখতে পারে জুয়ানকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ISL 2022-23 ATK Mohun Bagan Bengaluru FC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।