বিশ্বকাপের মঞ্চে পর্তুগালের নতুন নায়ক গনসালো রামোস। প্রথম ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। ছবি: রয়টার্স
সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নে তাল কাটল সুইৎজ়ারল্যান্ডের। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে কী ভাবে আটকাতে হবে তার পরিকল্পনা করেছিল তারা। কিন্তু প্রথম একাদশে রোনাল্ডোকে রাখলেনই না পর্তুগালের কোচ ফের্নান্দো সান্তোস। বদলে তিনি মাঠে নামিয়ে দিলেন ২১ বছরের গনসালো রামোসকে। বিশ্বকাপে প্রথম বার খেলতে নেমে ছটফট করলেন রামোস। তাঁকে আটকাতে পারল না সুইৎজ়ারল্যান্ডের রক্ষণ। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে হ্যাটট্রিক করলেন রামোস। এ বারের বিশ্বকাপের এটিই প্রথম হ্যাটট্রিক। একটি করে গোল করলেন পেপে, গুয়েরেরো ও লিয়াও। সুইৎজ়ারল্যান্ডের হয়ে একটি গোল শোধ করেন আকাঞ্জি। ৬-১ গোলে সুইৎজ়ারল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল পর্তুগাল।
খেলার শুরুটা দু’দল কিছুটা রক্ষণাত্মক করেছিল। গোল খেতে চাইছিল না তারা। রক্ষণ সামলে তার পর আক্রমণে উঠছিল। প্রথম ১০ মিনিটে দু’দলই আক্রমণ করে। কিন্তু তাতে ধার কম ছিল। ফলে গোলের মুখ খুলতে পারেনি কেউ। ধীরে ধীরে খেলার দখল নেয় পর্তুগাল। তার ফলও মেলে। ১৭ মিনিটের মাথায় গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন গনসালো রামোস। থ্রো থেকে বক্সের মধ্যে রামোসকে পাস দেন জোয়াও ফেলিক্স। প্রথম পোস্টে থাকা গোলরক্ষকের পাস দিয়ে জোরালো শটে গোল করেন রামোস। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন গোলরক্ষক।
ধীরে ধীরে খেলায় ফেরার চেষ্টা করে সুইৎজ়ারল্যান্ড। কয়েকটি আক্রমণ তুলে আনে তারা। ৩০ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পেয়েছিল সুইৎজ়ারল্যান্ড। বাঁ পায়ে শাকিরির জোরালো ফ্রিকিক গোলকিপারের হাতে লেগে কর্নার হয়ে যায়। কিন্তু ৩ মিনিট পরে আবার গোল করে পর্তুগাল। কর্নার থেকে বক্সে বল ভাসিয়ে দেন ব্রুনো ফের্নান্দেস। শূন্যে শরীর ভাসিয়ে জোরালো হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন পেপে। সুইস গোলকিপার ইয়ান সমারের কিছু করার ছিল না। বিশ্বকাপের নকআউটে সব থেকে বেশি বয়সি ফুটবলার হিসাবে গোল করলেন ৩৯ বছরের এই ডিফেন্ডার।
প্রথমার্ধে আরও গোল করতে পারত পর্তুগাল। ৪২ মিনিটের মাথায় সহজ সুযোগ নষ্ট করেন রামোস। প্রতি আক্রমণ থেকে মাঝমাঠে বল পেয়ে অনেকটা দৌড়ে বক্সের মধ্যে রামোসের উদ্দেশে বল বাড়ান ফের্নান্দেস। গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি রামোস। প্রথমার্ধে আর গোল আসেনি। ২-০ গোলে এগিয়ে সাজঘরে যায় পর্তুগাল।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও বেশি আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে পর্তুগাল। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে আরও দু’টি গোল করে তারা। ৫১ মিনিটের মাথায় বল নিয়ে ডান প্রান্ত ধরে ওঠেন দিয়োগো দালত। তিনি ক্রস রাখেন বক্সে। বাঁ পায়ের টোকায় গোলরক্ষকের পায়ের তলা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন রামোস। ৫৬ মিনিটের মাথায় আবার গোল পর্তুগালের। এ বার গোল করেন রাফায়েল গুয়েরেরো। বক্সের বাইরে বল পেয়ে গতি বাড়িয়ে বক্সে ঢোকেন তিনি। তার পরে বাঁ পায়ের জোরালো শটে গোল করেন।
৫৮ মিনিটের মাথায় একটি গোল শোধ করে সুইৎজ়ারল্যান্ড। শাকিরির কর্নার থেকে বল সতীর্থের মাথায় লেগে আসে আকাঞ্জির সামনে। বাঁ পায়ের টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। কিন্তু তাতে পর্তুগাল সমস্যায় পড়েনি। কারণ, গোলের খিদে আরও ছিল তাদের। ৬৭ মিনিটের মাথায় নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন রামোস। নিজেদের মধ্যে বল খেলে বক্সের মধ্যে তাঁর দিকে বল বাড়ান ফের্নান্দেস। আগুয়ান গোলরক্ষকের মাথায় উপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন রামোস।
৭৩ মিনিটের মাথায় রামোসকে তুলে নেন কোচ। পরিবর্ত হিসাবে মাঠে নামেন রোনাল্ডো। নেমেই একটি ফ্রিকিক পান তিনি। কিন্তু রোনাল্ডোর শট সুইস ফুটবলারদের দেওয়ালে প্রতিহত হয়। ৮৩ মিনিটের মাথায় একটি গোল করেন রোনাল্ডো। কিন্তু অফসাইডে সেই গোল বাতিল হয়। অতিরিক্ত সময়ে বাঁ প্রান্তে বল ধরে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের বাঁক খাওয়ানো শটে পর্তুগালের ছ’নম্বর গোল করেন রাফায়েল লিয়াও। ৬-১ গোলে ম্যাচ জেতে পর্তুগাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy