গোল করে জাপানের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স
জাপান ২ (দোয়ান, তানাকা)
স্পেন ১ (মোরাতা)
ইতিহাস গড়ল জাপান। একই বিশ্বকাপে জার্মানি এবং স্পেনকে হারিয়ে দিল তারা। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে জার্মানিকে হারানোর পর তৃতীয় ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও স্পেনকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিল জাপান। গোল করলেন রিৎসু দোয়ান এবং আও তানাকা। স্পেনের একমাত্র গোল আলভারো মোরাতার।
জার্মানিকে হারানোর পর অনেকেই মনে করেছিলেন, জাপানের জয় নেহাতই আকস্মিক একটা ঘটনা! বার বার হবে না। কিন্তু কয়েক দিনের তফাতে স্পেনকে হারিয়ে জাপান বুঝিয়ে দিল, জার্মানির বিরুদ্ধে জয় কোনও অংশেই ‘ফ্লুক’ ছিল না। এশীয় দেশগুলি যে ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করার জায়গায় চলে এসেছে, বৃহস্পতিবার রাতের ফলেই তা প্রমাণিত। প্রথমার্ধে স্পেনের পাসিং ফুটবলে কিছুটা গুটিয়ে গেলেও, দ্বিতীয়ার্ধে জাপান দেখিয়ে দিল প্রেসিং ফুটবল কাকে বলে! দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে আক্রমণ করে গেলেন জুনিয়া ইতো, ইউরি নাগাতোমো, হিদেমাসা মোরিতারা। স্পেনকে খেলার জায়গাই দিলেন না তাঁরা। প্রথমার্ধে যে পাসিং ফুটবলে দাপট দেখাচ্ছিল স্পেন, দ্বিতীয়ার্ধে তা উধাও!
তবে জাপানের বিরুদ্ধে স্পেন শুরুটা করেছিল স্পেনের মতোই। শুরু থেকেই দেখা যেতে থাকে পাসের ফুলঝুরি। মাঝমাঠে একের পর এক পাস খেলে জাপানকে হতোদ্যম করে দিতে চেয়েছিল স্পেন। তার মাঝেই খেলার বিপরীতে সুযোগ পায় জাপান। সের্জিয়ো বুস্কেৎসের থেকে বল কেড়ে নিয়ে আক্রমণে ওঠেন জাপানের দুই ফুটবলার। তবে সেই সুযোগ তারা কাজে লাগাতে পারেনি।
স্পেন দ্রুত ম্যাচে ফেরে। ১১ মিনিটেই এগিয়ে যায় তারা। গোল করেন আলভারো মোরাতা। বাঁ দিক থেকে নিখুঁত ক্রস ভাসিয়েছিলেন সেজার অ্যাজপিলিকুয়েতা। মাথা ছুঁইয়ে এ বারের প্রতিযোগিতায় তৃতীয় গোল করেন মোরাতা। নেদারল্যান্ডসের কোডি গাকপোর মতো গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচেই গোল করেন তিনি। এর পরে স্পেনের দাপট আরও বেশি করে টের পাওয়া যায়। মাঝমাঠে আরও বেশি পাস খেলতে থাকেন রদ্রি, পাউ তোরেসরা। ২৬ মিনিটে সুযোগ পায় স্পেন। মোরাতার থেকে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন দানি ওলমো। তা বাইরে যায়। তবে মোরাতা অফসাইডে থাকার কারণে গোল হলেও বাতিল হয়ে যেত।
প্রথমার্ধে আর কোনও গোল হয়নি। তবে স্পেনের পাসের আধিপত্য দেখেও থমকে যায়নি জাপান। প্রতিটি বল তারা করেছে তারা। স্পেনের ফুটবলারদের জায়গা দিতে চায়নি। কোণ ছোট করে এনেছে। সেই সুফল তারা পেয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। বিরতিতে তাকেফুসা কুবোকে তুলে রিৎসু দোয়ানকে নামান জাপানের কোচ হাজিমে মোরিয়াসু। সেই কৌশল কাজে দেয় সঙ্গে সঙ্গেই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে প্রেসিং ফুটবল খেলতে শুরু করে জাপান। প্রতিপক্ষের আচমকা তেড়েফুঁড়ে ওঠা খেলার বিরুদ্ধে মানিয়ে নিতে পারেনি স্পেন। দুর্বল রক্ষণের সুযোগ নিয়ে গোল করেন দোয়ান। বক্সের বাইরে বল পান তিনি। সামান্য ভেতরে ঢুকে বাঁ পায়ে জোরালো শট নেন। স্পেনের গোলকিপার উনাই সিমন বাঁ দিকে ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি।
ঠিক ২ মিনিট ২২ সেকেন্ডের মধ্যে দ্বিতীয় গোল করে জাপান। এ বার গোল করেন আতোমু তানাকা। এ ক্ষেত্রেও ভূমিকা নেন সেই দোয়ান। বাঁ দিকের প্রায় গোললাইন থেকে ক্রস করেন তিনি। স্পেনের গোলকিপার নিজের জায়গায় ছিলেন না। চলতি বলে পা ঠেকিয়ে গোল করেন তানাকা।
এই গোল নিয়ে অবশ্য বিতর্কও তৈরি হয়েছে। অনেকেরই দাবি, দোয়ান ক্রস করার সময় বল গোললাইন পেরিয়ে গিয়েছিল। এমনকি সমাজমাধ্যমে সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ে। তবে যে কোণ থেকে সেই ছবিগুলি তোলা হয়েছে, তা ‘ভার’ দেখে না। গোললাইনের সোজাসুজি যে ক্যামেরা বসানো রয়েছে, সেই ছবিই তারা দেখে। সেখানে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, দোয়ানের ক্রসের সময় বলের কিছুটা অংশ গোললাইন স্পর্শ করে ছিল।
এর পরে ম্যাচে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল স্পেন। জাপানের বক্সে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনছিল তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy