(বাঁ দিক থেকে) ভুটানের থিম্পুতে ইস্টবেঙ্গলের তিন ফুটবলার প্রভসুখন গিল, আনোয়ার আলি এবং প্রভাত লাকরা। ছবি: সমাজমাধ্যম।
বছরের শুরুর দিকে সুপার কাপ জিতে ইস্টবেঙ্গল এএফসি খেলার যোগ্যতা অর্জন করার সময় সব লাল-হলুদ সমর্থকই উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। তবে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার আগে তাদের মনে একটাই প্রশ্ন, এশিয়ার মঞ্চেও প্রিয় ক্লাব লজ্জার মুখে পড়বে না তো?
দীর্ঘ দিন বাদে এশিয়ার মঞ্চে খেলতে নামছে ইস্টবেঙ্গল। তবে ক্লাবের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিন সময়ে খেলতে নামতে হচ্ছে। টানা আট ম্যাচ হেরে মনোবল তলানিতে থাকা ইস্টবেঙ্গলের কাছে এর চেয়ে কঠিন সময় বোধহয় আর নেই। তখনই তাদের খেলতে হচ্ছে এশীয় মঞ্চে। শনিবার প্রথম ম্যাচে তাদের সামনে ভুটানের পারো এফসি। বিপক্ষ দলের কথা বাদ দেওয়াই গেল। কিন্তু বিদেশের মাটিতে কৃত্রিম ঘাসের মাঠ, সাড়ে সাত হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত স্টেডিয়াম এবং থিম্পুর ঠান্ডা— সব মিলিয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে কঠিন ‘চ্যালেঞ্জ’-এর সামনে লাল-হলুদ।
বৃহস্পতিবারই থিম্পু পৌঁছে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে আসেননি কোচ অস্কার ব্রুজ়ো। তাঁকে নিয়ে আচমকাই জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সূত্রের খবর, এএফসি-তে দলের তথ্য পাঠানোর সময় ব্রুজ়োর নাম কোচ হিসাবে ঘোষণা করা হয়নি। তিনি কোচ হওয়ার পরেই ইস্টবেঙ্গলের তরফে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার কাছে আবেদন করা হয় নাম নথিভুক্তির জন্য। ফেডারেশন সেই নিয়ে টালবাহানা করেছে বলে অভিযোগ। ফলে এএফসি-র কাছে ব্রুজ়োর কোচ হওয়ার ব্যাপারে তথ্য ছিল। তাই তিনি সাংবাদিক বৈঠকে আসতে পারেননি। রাতের দিকে এএফসি-কে দিয়েই ব্রুজ়োর নাম নথিভুক্ত করায় ইস্টবেঙ্গল। ফলে শনিবার তাঁর ডাগআউটে বসতে সমস্যা নেই।
শুক্রবার প্রশ্নবাণ সামলাতে হয় সহকারী বিনো জর্জকেই। তিনি এ দিন মেনে নিয়েছেন, খুব কঠিন সময়ে তাঁদের এই ম্যাচ খেলতে নামতে হচ্ছে। তবু জেতা ছাড়া আর কিছু ভাবছেন না তিনি।
প্রথমেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কৃত্রিম ঘাসের মাঠ নিয়ে। জর্জ বললেন, “আমরা আগে কখনও কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলিনি। তাই আমাদের কাছে নতুন পরীক্ষা। তবে হাতে কোনও বিকল্প নেই। এই মাঠের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে আমাদের। সে ভাবেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিপক্ষ দল এই মাঠ এবং আবহাওয়ার সঙ্গে পরিচিত। সে ভাবেই পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। তবে এখানে আসার পর মাঠ ঘুরে দেখেছি। অনুশীলনও করেছি। কোচও সে ভাবেই পরিকল্পনা করছেন।”
পারো এফসি গত চার বারই ভুটানের প্রিমিয়ার লিগ জিতেছে। সেই দলে কিছু দিন আগেও খেলে গিয়েছেন জাপানের বিশ্বকাপার কেইসুকে হোন্ডা। এখনকার দলে তিন জাপানি খেলোয়াড় রয়েছেন। এ ছাড়া কলকাতা লিগে বিএসএস স্পোর্টিং এবং ভবানীপুর এফসি-র হয়ে খেলা উইলিয়াম ওপোকু খেলেন। রয়েছে অধুনালুপ্ত আইএসএলের দল দিল্লি ডায়নামোসের হয়ে খেলা রিচার্ড গাডজেও। পারো ভুটানের সেরা দল। তাদের সামলানো কোনও মতেই সহজ হবে না ইস্টবেঙ্গলের কাছে।
সেটা মেনে নিয়েই জর্জ বলেছেন, “আমরা জানি বিপক্ষ দলে অনেক ভাল ফুটবলার রয়েছে। আমরাও কোনও অংশে কম যাই না। নতুন কোচ ব্রুজ়োর ভাবনাচিন্তার সঙ্গে ফুটবলারেরা দ্রুত মানিয়ে নিচ্ছে। প্রতিটা দলের জন্যই আমাদের পরিকল্পনা করা রয়েছে। সেগুলোই কাজে লাগাতে হবে।”
দলের সঙ্গে ভুটানে গিয়েছেন নাওরেম মহেশ। চোট পাওয়ার কারণে গত কয়েকটি ম্যাচে খেলেননি। অনুশীলনও করেননি। তবু তাঁকেই আনা হয়েছিল সাংবাদিক বৈঠকে। মহেশ অবশ্য ভুটানের উচ্চতা বা ঠান্ডা নিয়ে চিন্তিত নন। বলেছেন, “আমি যে অ্যাকাডেমিতে খেলে বড় হয়েছি সেখানকার পরিবেশ এ রকমই ছিল। এতটাই উঁচুতে ছিল সেই মাঠ। তবে বাকিরা যে কেউ এ ধরনের মাঠে খেলেনি সেটা জানি।” প্রশ্ন হল, মহেশ কি আদৌ প্রথম একাদশে থাকবেন?
পারোর কোচ পুষ্পলাল শর্মা জানিয়েছেন, ইস্টবেঙ্গলের খারাপ ফর্ম সম্পর্কে তাঁরা জানেন। সেটারই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জয়ের চেষ্টা করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy