ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস। ছবি: সংগৃহীত।
বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। যে প্রতিযোগিতাই হোক না কেন, এই সময় সাধারণত কলকাতার তিন প্রধানের খেলা থাকে না। ব্যতিক্রম এ বছরই। ইস্টবেঙ্গলকে নামতে হচ্ছে সপ্তমীতে। মোহনবাগান আবার এএফসি কাপের ম্যাচ খেলবে দশমীতে। দুই দলেরই হোম ম্যাচ থাকা সত্ত্বেও তার সুবিধা নিতে পারছে না। দু’টি খেলাই হবে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে। বদলানো হয়নি সূচি। বাধ্য হয়েই সপ্তমীর বিকেলে ভুবনেশ্বরে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে নামছে ইস্টবেঙ্গল। তার আগে সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন লাল-হলুদের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত।
সপ্তমীর সন্ধ্যায় ম্যাচ পড়ায় নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় ম্যাচ সরানো হয়েছে। কিন্তু সমর্থকরা একটি হোম ম্যাচ দেখা থেকে বঞ্চিত হলেন, এটা ভেবেই খারাপ লাগছে কুয়াদ্রাতের। সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন তিনি। ভুবনেশ্বরে রওনা হওয়ার আগে বলেছেন, “সমর্থকদের জন্য আমার খুবই খারাপ লাগছে। এই ম্যাচটা ঘরের মাঠে খেলতে পারছি না। ঘরের মাঠে আমাদের প্রতিটি ম্যাচেই সমর্থকেরা আমাদের বাড়তি শক্তি জোগায়। কিন্তু ক্লাবের ভালর জন্যও তো আমাদের কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়।”
তিনি আরও বলেন, “ভুবনেশ্বরে খেলার সিদ্ধান্তটা আমার। না হলে আমাদের এর পরে (ডিসেম্বরে) মুম্বই ও ওড়িশা ম্যাচের মাঝখানে পড়ত এই ম্যাচটা। তখন তা হলে ছ’দিনে তিনটে ম্যাচ খেলতে হত। কোনও খেলোয়াড় চোট পেলে, তাকে হয়তো তিনটি ম্যাচেই পাওয়া যেত না। এটা তো কোনও সমাধান নয়। সে জন্য সমর্থকদের জন্য আমি দুঃখিত। আর একটা বিকল্প ছিল, শিলিগুড়ি। পুজোর জন্য সেটাও সম্ভব নয়।”
ভুবনেশ্বরের ‘হোম ম্যাচে’ ইস্টবেঙ্গলের কাজ যে কঠিন সেটা মেনে নিয়েছেন কোচ। টানা দু’টি ম্যাচে জেতা গোয়া যে দক্ষতার শীর্ষে রয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। গত মরসুমে হায়দরাবাদের কোচ থাকা মানোলো মার্কুয়েজের নতুন দল গোয়া, যারা এ বারের লিগের প্রথম দু’ম্যাচে জিতে ইস্টবেঙ্গলের মুখোমুখি হচ্ছে। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে লাল-হলুদ কোচের বক্তব্য, “গোয়া প্রথম দুটো ম্যাচেই জিতেছে। ডুরান্ড কাপে ওরা মোহনবাগানের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিল রেফারির ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে। ওরা ভবিষ্যতের জন্য একটা ভাল দল গড়ছে।”
তবে শক্তিশালী দল হলেও গোয়ার বিরুদ্ধে খেলার জন্য তারা তৈরি বলেই দাবি করেছেন আইএসএল কুয়াদ্রাত। তাঁর কথায়, “বেঙ্গালুরুতে শেষ ম্যাচে আমরা যথেষ্ট ভাল খেলেছি। নিঃসন্দেহে আমরা সেই ম্যাচে ওদের চেয়ে ভাল খেলেছিলাম। তা সত্ত্বেও আমরা হারি কিছু সিদ্ধান্ত আমাদের বিরুদ্ধে যাওয়ায়। তবে কোনও অজুহাত দেব না। হার থেকে শিক্ষা নিয়েছি। প্রতি ম্যাচে আমাদের শুধু ভাল ফুটবল খেললে চলবে না, পয়েন্টও পেতে হবে। অনেক সুযোগ তৈরি করা বা প্রতিপক্ষকে কম সুযোগ দেওয়াই যথেষ্ট নয়। আমাদের প্রতিপক্ষকে শেষ করে দিতে হবে। প্রথম তিন ম্যাচ থেকে আমাদের ৬-৭ পয়েন্ট পাওয়ার কথা ছিল।”
গত ৪ অক্টোবর বেঙ্গালুরুতে খেলে আসার পর শনিবার ইস্টবেঙ্গল নামছে গোয়ার বিরুদ্ধে। মাঝখানে ভারতীয় দলের খেলা থাকায় দু’সপ্তাহেরও বেশি বিশ্রাম পেয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের বেশির ভাগ ফুটবলার। মাঝে নেরোকার বিরুদ্ধে একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে এবং ২-৩ গোলে হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। জর্ডন থেকে নবাগত ডিফেন্ডার হিজাজি মাহের সেই ম্যাচে প্রথম লাল-হলুদ জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন। এই সময়ে দলের কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে কুয়াদ্রাত বলেন, “লম্বা ছুটির সময়ে ভারতীয় দলে খেলা তিন জন ফুটবলারকে পাইনি। ওরা তিন দিন আগে অনুশীলনে যোগ দিয়েছে। এই সময়ে আমরা হিজাজি (মাহের)-কে ফিট করে তুলেছি। নেরোকার বিরুদ্ধে আমরা একটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। এই ম্যাচে আমরা মোবাশির, ভিপি-র (সুহের) মতো সেই সব ফুটবলারকে খেলিয়েছি, যারা ম্যাচে কম সময় পেয়েছে। সময়টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।”
দলের মণিপুরি ফুটবলার নাওরেম মহেশ সিং মারডেকা কাপে ভারতীয় দলের হয়ে যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, তার প্রশংসা করে কুয়াদ্রাত বলেন, “মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে খুবই ভাল খেলেছে মহেশ। ভারতীয় দলের মতো ওকে আমরাও আক্রমণাত্মক ভূমিকাতেই খেলাই। লিগের ম্যাচেও সেই ভূমিকাতেই থাকবে ও।” দলের নবাগত জর্ডানিয়ান ডিফেন্ডার মাহের সম্পর্কে তিনি বলেন, “ও তো অনুশীলনে ভাল খেলছে। ফিট হয়ে উঠেছে। নেরোকার বিরুদ্ধে ৭০ মিনিট খেলেছে। ও ম্যাচে নামার জন্য তৈরি হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy