আর্কাদাগ শহরের হোটেলে বন্দি থাকার যন্ত্রণা। বেহাল মাঠে অনুশীলন করতে বাধ্য হওয়ার ক্ষোভ আপাতত উধাও ইস্টবেঙ্গল শিবির থেকে। অস্কার ব্রুসো থেকে রাফায়েল মেসি— সকলেরই পাখির চোখ আজ, বুধবার এফসি আর্কাদাগকে হারিয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের শেষ চারে যোগ্যতা অর্জন করা।
যুবভারতীতে শেষ আটে প্রথম পর্বের দ্বৈরথে ০-১ হারায় সেমিফাইনালের রাস্তা অনেকটাই কঠিন হয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। কারণ, লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে বুধবার আর্কাদাগকে তাদের ঘরের মাঠে অন্তত দু’গোলের ব্যবধানে হারাতেই হবে। মেসি-রা যদি ১-০ জেতেন, সেক্ষেত্রে ম্যাচের নিষ্পত্তি হবে টাইব্রেকারে।
আর্কাদাগকে তাদের ঘরের মাঠে হারানো অনেকটা সিংহের গুহায় ঢুকে সিংহ শিকারের মতোই কঠিন। কারণ, ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল পথচলা শুরু করা এই ক্লাব অভিষেকের মরসুমেই তুর্কমেনিস্তানের এক নম্বর লিগের (ইয়োকারি লিগা) সব ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। পরের মরসুমেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। কোনও ম্যাচে হার বা ড্র নেই। জয় একশো শতাংশ। অথচ দলে এক জনও বিদেশি ফুটবলার নেই। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের গ্রুপ পর্বে মাত্র একটি ম্যাচ হেরেছে আর্কাদাগ। তা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষকে বাড়তি সমীহ করতে রাজি নন ইস্টবেঙ্গল কোচ।
সাংবাদিক বৈঠকে জিকসন সিংহকে পাশে বসিয়ে অস্কার বললেন, ‘‘শেষ আটে প্রথম পর্বের দ্বৈরথের আগে আর্কাদাগ সম্পর্কে আমাদের কাছে খুব বেশি তথ্য ছিল না। কারণ, ওদের মরসুম শেষ হয়ে গিয়েছিল নভেম্বর মাসে। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে আর্কাদাগের ম্যাচগুলি শুধু দেখেছিলাম। এখন আমরা অনেকটাই তৈরি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘নতুন মরসুমে আর্কাদাগ সবে যাত্রা শুরু করেছে। দলে কিছু নতুন ফুটবলারও নিয়েছে। আর্কাদাগ খুবই ভাল দল। গত দু’মরসুমে চ্যাম্পিয়ন। তবে সপ্তাহখানেক আগে খেলার সুবাদে এখন আর আর্কাদাগ আমাদের কাছে অজানা প্রতিপক্ষ নয়।’’
সমস্যায় জর্জরিত ইস্টবেঙ্গল কি পারবে আর্কাদাগকে হারিয়ে শেষ চারে যোগ্যতা অর্জন করে আইএসএলের ব্যর্থতার যন্ত্রণা ভুলতে? আত্মবিশ্বাসী অস্কার বললেন, ‘‘আমাদের দল এই মুহূর্তে সব চেয়ে ভাল অবস্থায় রয়েছে। চলতি মরসুমে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। চোট-আঘাতের কারণে বেশ কিছু পরিবর্তনও করতে হয়েছে। কিন্তু এখন অধিকাংশ ফুটবলারই রয়েছে। ওরা মরিয়া হয়ে রয়েছে নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার জন্য।’’ কোচের সঙ্গে একমত জিকসন সিংহও। বললেন, ‘‘লড়াই কঠিন হলেও আমরা তৈরি।’’
যুবভারতীতে প্রথম পর্বের দ্বৈরথে রক্ষণের ভুলে গোল খেয়েই হেরেছিল ইস্টবেঙ্গল। বুধবারের ম্যাচেও চোটের কারণে খেলতে পারবেন না আনোয়ার আলি। তার উপরে বেহাল মাঠের জন্য সোমবার ঠিক মতো অনুশীলনই করাতে পারেননি অস্কার। সাংবাদিক বৈঠকে হতাশ ইস্টবেঙ্গল কোচ বললেন, ‘‘ভারতে যে ধরনের মাঠে আইএসএলে খেলতে আমরা অভ্যস্থ, এখানে তা পাইনি।
এই ম্যাচে অনেক বেশি শারীরিক লড়াই হবে। সেট-পিসের উপরে নির্ভর করতে পারে খেলার ভবিষ্যৎ। আশা করছি, উপভোগ্য ম্যাচ হবে।’’ মঙ্গলবার অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূল ছিল। মূল স্টেডিয়ামের মাঠেই মরণ-বাঁচন দ্বৈরথের প্রস্তুতি
সারল মশালবাহিনী।
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ: এফসি আর্কাদাগ বনাম ইস্টবেঙ্গল (বিকেল ৪.০০, ফ্যান কোড অ্যাপে
সরাসরি সম্প্রচার)।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)