Advertisement
E-Paper

পাঁচ মিনিটে করেন চার গোল! দীপেশের অনন্য জাতীয় রেকর্ড  

সব চেয়ে কম সময়ের মধ্যে তিনটি গোল করে হ্যাটট্রিকের নজির এখন ২২ বছরের দীপেশের দখলে। শুধু কলকাতা নয়, ভারতীয় ফুটবলেও। চার মিনিটে হ্যাটট্রিক করেন তিনি।

Dipesh Murmu

নজরে: ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিয়ে দীপেশ। —নিজস্ব চিত্র।

সুতীর্থ দাস

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ০৭:১০
Share
Save

কলকাতা ফুটবল লিগ থেকেই ভারতীয় ফুটবলে নতুন নজির গড়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন তিনি। ইউনাইটেড স্পোর্টসের দীপেশ মুর্মু। ক’জন তাঁর নাম শুনেছেন, জানা নেই। কিন্তু নামটা মনে রাখাই ভাল। কারণ, দীপেশ এখন এমন এক কীর্তির অধিকারী, সারা ভারতের সর্বকালের ফুটবল ইতিহাসে কারও নেই।

সব চেয়ে কম সময়ের মধ্যে তিনটি গোল করে হ্যাটট্রিকের নজির এখন ২২ বছরের দীপেশের দখলে। শুধু কলকাতা নয়, ভারতীয় ফুটবলেও। চার মিনিটে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। পাঁচ মিনিটে করেন চার গোল। গত ২৫ জুলাই সিএফসির বিরুদ্ধে ৮৬, ৮৭, ৮৯ ও ৯০ মিনিটে গোল করেন হুগলির বলাগড়ের ছেলে।

তবে গোল করে আনন্দে যে দৌড় তিনি সে দিন দৌড়েছিলেন, তাঁর পিছনে লুকিয়ে আছে কঠিন সংগ্রামের কাহিনী। বলাগড়ের একতানপুর গ্রাম থেকে যে স্বপ্নের সূত্রপাত হয়েছিল। যেখানে ফুটবল শেখানোর কোনও কোচ নেই। পাড়ার বড় দাদারাই কোচ। কুঁড়ে ঘরের মধ্যে ফুটবল স্বপ্নকে আঁকড়ে বড় হয়েছে দীপেশ। দুরন্ত সব গোল করার স্বপ্ন। তবে এখানেই থামতে চান না দীপেশ। পরতে চান ভারতের জার্সি। কোন ক্লাব প্রিয়? এক কথায় উত্তর এল, মোহনবাগান। প্রিয় ফুটবলার? লিস্টন কোলাসো। তাঁর কথায়, “ছোটবেলা থেকে সবুজ-মেরুন জার্সি ভালোবাসি। ইস্টবেঙ্গল কখনও বেশি টাকার প্রস্তাব নিয়ে এলেও যাব না।” ফুটবলারদের মধ্যে আদর্শ কে? উত্তর আসে, “বিশ্ব ফুটবলে আর্জেন্টিনার লিয়োনেল মেসি। ভারতীয়দের মধ্যে সুনীল ছেত্রী।” কাতারে মেসি যখন বিশ্বকাপে চুম্বন করছেন, আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলেন। সেই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়, বললেন দীপেশ।

বাড়িতে থাকেন বাবা, মা, দাদা ও ভাই। বাবার এখন শরীর অসুস্থ বলে কাজ করতে পারেন না। মাঠে দিনমজুরের খাটতেন। শুরুর দিন নিয়ে বললেন, “আমি জিরাট ফুটবল কোচিং ক‌্যাম্প থেকে উঠে এসেছি। তার পরে ত্রিবেণী কোচিং সেন্টারে খেলেছি। সেখান থেকে ট্রায়াল দিয়ে ইউনাইটেড স্পোর্টসে আসি। প্রথমে যুব দলে সুযোগ পাই। তার পরে সিনিয়র দলে সই করি। লক্ষ‌্য কী? দীপেশের জবাব, “আমাদের পাড়ার মাঠে কোচিং ক‌্যাম্প তৈরি করতে চাই। উপযুক্ত প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে যাতে গ্রামের ছেলেরা আরও বেশি করে উঠে আসতে পারে, সেই ব‌্যবস্থা করতে চাই।”

ইউনাইটেড কোচ স্টিভ হারবটস্‌ বলছেন, “দীপেশ আমার সঙ্গে দু’বছর ধরে আছে। আমি জানতাম ও ভাল খেলবে। কিন্তু এখনও ওকে অনেক দূর যেতে হবে। নিবিড় অনুশীলনের মধ‌্যে দিয়েই ওকে সাফল‌্যের রাস্তা খুঁজে পেতে হবে।’’ যোগ করেন, ‘‘আমি মনে করি ওকে আরও ধারাবাহিক হতে হবে। তবেই লোকে ওকে মনে রাখবে। তবে এটা বলতেই হবে যে, ও খুব পরিশ্রম করে।” অখ‌্যাত একতানপুর গ্রামকে অনন্য ফুটবল রেকর্ডের আলোয় আলোকিত করে তুলেছেন দীপেশ মুর্মু।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta Football League footballer

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}