আইএসএলের ট্রফি। — ফাইল চিত্র।
এ বারের আইএসএলের অর্ধেক মরসুম শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি দলকে গোটা মরসুমে ২৪টি করে ম্যাচ খেলতে হবে। সব দলই অন্তত পক্ষে ১২টি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। কেউ কেউ বাড়তি দু’-একটি ম্যাচও খেলেছে। আইএসএলের শীর্ষে এবং শেষে রয়েছে কলকাতারই দুই ক্লাব। যথাক্রমে মোহনবাগান এবং মহমেডান। আইএসএলে এখনও পর্যন্ত ৮৪টি ম্যাচে ২৫২টি গোল হয়েছে। লিগ-শিল্ড কারা জিতবে তা বোঝা না গেলেও, ধীরে ধীরে জমতে শুরু করেছে প্লে-অফে যোগ্যতা অর্জনের লড়াই। আইএসএলের অর্ধেক মরসুম পার হওয়ার সেরা একাদশ বেছে নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
গোলকিপার
লড়াইয়ে অনেকেই ছিলেন। তবে এ ব্যাপারে বাকিদের অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন বিশাল কাইথ। মোহনবাগানের গোলকিপার গোটা মরসুমে কতগুলি ম্যাচে যে দলকে নিশ্চিত বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন তার ইয়ত্তা নেই। প্রচুর নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন। তবে এখনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে খারাপ গোল খাওয়ার অভ্যাস কমাতে পারেননি। এখনও পর্যন্ত ১৩টি ম্যাচের ছ’টিতে গোল খাননি। মোট ৪৪টি সেভ করেছেন। তিনকাঠির নীচে সবচেয়ে বেশি ভরসা দিতে পারেন তিনিই।
রক্ষণ
মোহনবাগানের অধিনায়ক শুভাশিস বসু থাকবেন বাঁ দিকে। শুধু রক্ষণই নয়, গোল করার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। তিনটি গোল এবং একটি অ্যাসিস্ট হয়ে গিয়েছে তাঁর। ২২টি ট্যাকল করেছেন। তবে বল কেড়ে নিতে গিয়ে নামার ক্ষেত্রে এখনও একটু সময় লাগছে তাঁর। রাইট ব্যাকে রয়েছেন বেঙ্গালুরুর রাহুল ভেকে। যত সময় যাচ্ছে ততই ধারালো হয়ে উঠছেন তিনি। সঠিক পাস বাড়ানো থেকে বল কেড়ে নেওয়া, সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে রয়েছেন। উঠে গেলেও দ্রুত নামতে পারেন। মাঝমাঠে জুটি বাঁধবেন আলবের্তো রদ্রিগেস এবং মেহতাব সিংহ। মোহনবাগানের আলবের্তো অবশ্য রক্ষণের থেকেও এখন বেশি আলোচনায় তাঁর গোল করার দক্ষতার জন্য। কর্নার বা অন্যান্য সেট পিসের ক্ষেত্রে উচ্চতা ভাল কাজে লাগাতে পারেন তিনি। দীর্ঘদেহী হওয়ার কারণে রক্ষণেও তাঁর জুড়ি নেই। অনায়াসে সেট পিসের মোকাবিলা করতে পারেন। একই জিনিস বলা যায় মুম্বইয়ের মেহতাবের ক্ষেত্রেও। তিনি খুব লম্বা না হলেও শারীরিক ভাবে শক্তিশালী। পিছন থেকে খেলা শুরু করার কৌশল নিলে মেহতাব কার্যকর হতে পারেন। কারণ বল বিতরণের ক্ষমতা বাকিদের থেকে ভাল।
মাঝমাঠ
রক্ষণের একটু উপরে থাকবেন ওড়িশার ইসাক ভানলালরুয়াতফেলা এবং নর্থইস্টের জিতিন এমএস। দুই ফুটবলারেরই সবচেয়ে বড় অস্ত্র তাঁদের গতি। সাধারণত জিতিন ডান দিকের উইংয়ে খেললেও এই একাদশে তাঁকে একটু পিছন থেকে খেলতে হবে। ফলে গোল বাঁচানোর ক্ষেত্রে বাড়তি ভূমিকা নিতে হবে। একই কথা প্রযোজ্য ইসাকের ক্ষেত্রেও। দু’জনেই গোল করার পাস বাড়াতে সিদ্ধহস্ত। তাই গোলের পাস আসা নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। দু’দিনের উইংয়ে থাকবেন কেরলের নোয়া সাদাউই এবং বেঙ্গালুরুর রায়ান উইলিয়ামস। নোয়ারও বড় অস্ত্র তাঁর গতি। কেরল যে এ বার খুব ভাল খেলছে তা নয়। তবে আলাদা করে নজর কেড়ে নিয়েছেন নোয়া। পাঁচটি গোল এবং চারটি অ্যাসিস্ট করেছেন। বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠার সময়ে টুক করে ডান দিকে ঘুরে নিখুঁত পাস বাড়াতে পারেন। আবার দরকারে নিজে শট নিয়ে গোলও করতে পারেন। বেঙ্গালুরুর রায়ানও একই কাজ করতে সিদ্ধহস্ত। মাত্র সাতটি ম্যাচ খেলেছেন। এর মধ্যেই পাঁচটি গোল এবং তিনটি অ্যাসিস্ট করে ফেলেছেন। ডান প্রান্ত থেকে তাঁর ভাসানো বলে হেড করতে বা শট নিতে স্ট্রাইকারদের অসুবিধা হয় না।
আক্রমণ
আক্রমণ ভাগে যাঁর নাম নিয়ে এ বার সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে, তিনি আলাদিন আজারাই। সম্ভবত এ বারের আইএসএলের সেরা আবিষ্কার। তাঁর গোলের খিদের সঙ্গে আর কারও তুলনা হয় না। ১৩টি ম্যাচে ১৪টি গোল করে ফেলেছেন। সোনার বুটের দৌড়ে বাকিদের পিছনে ফেলে দিয়েছেন মাঝপথেই। সঙ্গে রয়েছে চারটি অ্যাসিস্টও। ২১টি সুযোগ তৈরি করেছেন। ২৭ বার গোল লক্ষ্য করে শট করেছেন। সেরা একাদশে তিনি পাশে পাবেন সুনীল ছেত্রীকে। বুড়ো হাড়ে যে এখনও ভেলকি দেখানো যাচ্ছে, এটা এ বার প্রমাণ করে দিচ্ছেন সুনীল। ন’টি গোল এবং একটি অ্যাসিস্ট রয়েছে। বয়স বাড়লেও সুনীলের ধার কমেনি একটুও। ঠিক কোনও না কোনও ভাবে গোলের সুযোগ তৈরি করে নেন।
পরিবর্ত
কিছু কিছু ফুটবলারকে চাইলেও প্রথম একাদশে রাখা যায়নি। তাঁরা নিশ্চিত ভাবেই পরিবর্ত হিসাবে সুযোগ পাবেন। সেই তালিকায় লিস্টন কোলাসো, জেমি ম্যাকলারেন, উদান্ত সিংহ, আপুইয়া, অ্যালবিনো গোমসেরা রয়েছেন।
আইএসএলের সেরা একাদশ (৪-২-২-২): বিশাল কাইথ (মোহনবাগান), শুভাশিস বসু (মোহনবাগান), আলবের্তো রদ্রিগেস (মোহনবাগান), মেহতাব সিংহ (মুম্বই), রাহুল ভেকে (বেঙ্গালুরু), জিতিন এমএস (নর্থইস্ট), ইসাক ভানলালরুয়াতফেলা (ওড়িশা), নোয়া সাদাউই (কেরালা), রায়ান উইলিয়ামস (বেঙ্গালুরু), সুনীল ছেত্রী (বেঙ্গালুরু, অধিনায়ক) এবং আলাদিন আজারাই (নর্থইস্ট)।
কোচ: হোসে মোলিনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy