টকে গেলেন ওয়ার্নাররা। ফাইল চিত্র।
শনিবার শ্রীলঙ্কাকে চার উইকেটে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ চারে চলে গেল ইংল্যান্ড। তবে সেখানেই তো শেষ নয়। জস বাটলারদের উল্লাসের রাতে দেশের মাটিতে কুড়ির বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল গতবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ারও।
ইংল্যান্ড জেতায় সুপার ১২ পর্ব থেকেই ছিটকে গেলেন অ্যারন ফিঞ্চরা। এক মাত্র শ্রীলঙ্কা এ দিন জিতলেই সাত পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া পৌঁছত শেষ চারে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার সামনে কাঁটা হয়ে দাঁড়ালেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ককে শেষ পর্যন্ত টলাতে পারেননি শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা।
দেশের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার এ বারের পারফরম্যান্সে ক্ষুব্ধ টম মুডি থেকে মার্ক ওয়-এর মতো প্রাক্তনরা। হতাশা গোপন রাখতে পারেননি দলের অন্যতম তারকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের হাতে তাঁদের ভাগ্য নির্ধারিত হওয়ায় আরও যেন বড় ধাক্কা খেল অ্যারন ফিঞ্চরা।
স্টোকস এ দিন ব্যাট ও বল হাতে সমান পারদর্শিতা দেখিয়ে দলকে তুললেন শেষ চারে। ৩৬ বলে অপরাজিত থাকলেন ৪৪ রানে। বল হাতে তিন ওভারে ২৪ রান দিয়ে নিলেন এক উইকেট। শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৪১ রান করে। যা দু’বল বাকি থাকতে তুলে দেয় ইংল্যান্ড।
এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে মুডি বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের শরীরীভাষা দেখে কি একবারও মনে হয়েছে যে, ওরা বড় ব্যবধানে জিততে এসেছে? বরং বোঝা গিয়েছে পরিস্থিতির চাপে ওরা হাল ছেড়ে দিয়েছে।’’ যোগ করেন, ‘‘আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদের ৫২ রানে জিততে হত। সেখানে প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে কী করল অস্ট্রেলিয়া? ওয়ার্নার যে ভঙ্গিতে আউট হয়েছে, তা কখনও মানা যায় না। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রিভার্স কভার ড্রাইভ খেলতে যাওয়ার যৌক্তিকতা কোথায়?’’
মিচেল স্টার্ককে দলে না নেওয়ার সিদ্ধান্তেও বিস্মিত মুডি। তাঁর কথায়, ‘‘আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্টার্ককে কোন যুক্তিতে বাদ দেওয়া হল? ওর চোট নিয়ে তো কিছু শোনা যায়নি? তা হলে এই সিদ্ধান্ত কার? ঘরের মাঠে এই বিদায় মেনে নেওয়া যায় না।’’
প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ওপেনার মার্ক ওয় লিখেছেন, ‘‘যোগ্য দল হিসেবেই আমরা ছিটকে গিয়েছি। আমাদের ক্রিকেটারদের মধ্যে জেতার সেই খিদেটা দেখতে পাইনি। অস্ট্রেলিয়া এক সময় মাঠে নামলে সকলে ভয় পেত। সেখানে আফগানিস্তানের মতো দলের বিরুদ্ধেও কোনও রকমে জিততে হচ্ছে। পরবর্তী পর্বে ওঠার জন্য অন্য দলের দিকে তাকিয়ে থাকার অর্থই হল আমরা ব্যর্থ।’’
টুইটারে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল লিখেছেন, ‘‘অসহ্য।’’ ইংল্যান্ডের কাছে শ্রীলঙ্কা হারার ফলে বার্মি আর্মি গণমাধ্যমে অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে মজা করতে শুরু করেছে। ম্যাথু ওয়েডের হতাশার ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘‘টাটা। আবার পরে দেখা হবে।’’
সিডনিতে এ দিন অস্ট্রেলীয় সমর্থকেরাও ভিড় করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার একাধিক পতাকা দেখা যায় গ্যালারিতে। এমনকি অস্ট্রেলীয় সমর্থকদের হাতে শ্রীলঙ্কার পতাকাও ছিল। কিন্তু তাঁদের নিরাশ করে অস্ট্রেলিয়ার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ড রাস্তা পাকা করল শেষ চারের।
স্টোকসের ইনিংস সত্ত্বেও ম্যাচের সেরা হলেন আদিল রশিদ। চার ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে এক উইকেট নেন অভিজ্ঞ লেগস্পিনার। যিনি বলে যান, ‘‘নিঃসন্দেহে এই জয়টা আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে এটাও জানিয়ে দেওয়া ভাল, স্টোকস ব্যাট হাতে রুখে না দাঁড়ালে হয়তো আমরাও চাপে পড়ে যেতে পারতাম। ওকে নিয়ে অনেকেই নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন। তবে স্টোকস ভিন্ন ঘরানার ক্রিকেটার। চাপের মুখে যে ইনিংস ও খেলেছে, তা এককথায় অনবদ্য। বল হাতেও ও কিন্ত একটা উইকেট তুলে নিেয়ছে।’’
ম্যাচের পরে স্টোকস বলেন, ‘‘কঠোর পরিশ্রমের ফল পেয়েছে দল। বাটলার ও হেলস অসাধারণ শুরু করেছিল। শুরুর দিকে ওরা আক্রমণ না করলে শেষের দিকে রান তোলা সহজ হত না। সিডনির পিচে শ্রীলঙ্কাও শেষ পাঁচ ওভারে মাত্র ২৫ রান তুলেছে। না হলে এত কম লক্ষ্যে ব্যাট করতে হত না আমাদের।’’ তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে মাইকেল ভন বলেছেন, ‘‘বেন আসল সময়েই জ্বলে উঠেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy