তামিম ইকবাল (বাঁ দিকে) এবং শাকিব আল হাসান। — ফাইল চিত্র।
বুধবার রাতেই বাংলাদেশ দল পা রেখেছে ভারতে। তার মধ্যেই তুমুল বিতর্ক শুরু হয়ে গেল দলে। তামিম ইকবালকে দলে না নেওয়া এবং সেই প্রসঙ্গে বুধবার তাঁর ভিডিয়ো বার্তার কথা সকলেই জানেন। তার প্রেক্ষিতে বুধবার রাতের দিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে একটি সাক্ষাৎকার দেন অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। সেখানে তিনি তুলোধনা করেছেন তামিমকে। তামিমের আচরণকে ‘বাচ্চাদের মতো’ উল্লেখ করে শাকিবের মন্তব্য, ‘তামিম টিমম্যান নন’।
তামিম জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে তাঁকে নীচের দিকে ব্যাট করার অনুরোধ করেছিলেন বোর্ডের এক কর্তা। সেই প্রসঙ্গে শাকিবের মন্তব্য, “যিনি ওকে এই কথা বলেছেন তিনি নিশ্চয়ই দলের কথা ভেবে বলেছেন। ম্যাচের আগে অনেক রকম কম্বিনেশন মাথায় রাখতে হয়। তাই কেউ এ কথা বলে থাকলেও সেটা কি ভুল? এমন প্রস্তাব দেওয়া অন্যায়? দল আগে না ক্রিকেটার আগে?”
তামিমকে ঘুরিয়ে স্বার্থপর বলেছেন শাকিব। পাশাপাশি রোহিত শর্মার উদাহরণ টেনে বলেছেন, “রোহিত শর্মা শুরুতে সাত নম্বরে ব্যাট। সেখান থেকে ওপেনার হয়ে এখন ১০ হাজার রানও করে ফেলেছে। তাই কখনও তামিমকে যদি তিন বা চারে খেলতেও হয়, সেটা কি বিরাট সমস্যা? পুরোপুরি বাচ্চাদের মতো আচরণ। যেন ব্যাট আমার, আমিই খেলব। বাকি কেউ খেলতে পারবে না। একজন ক্রিকেটারকে দলের স্বার্থে যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে হতে পারে। দল আগে। আপনি আগে ১০০ করেছেন না ২০০ সেটা কেউ মাথায় রাখবে না। ব্যক্তিগত কীর্তি নিয়ে কী করবেন?”
শাকিবের সংযোজন, “তামিম মোটেই দলের কথা ভাবেনি। মানুষ এত বোঝে না। দলের জন্যে ওকে নীচে ব্যাট করা প্রস্তাব দেওয়া হলে তাতে খারাপটা কোথায়? দলকে আগে রাখলে এই জিনিস মেনে নেওয়াই যায়। যদি আপনি নিজেকে টিমম্যান না ভাবেন, তা হলে অন্য কথা। ও মনে হয় ব্যক্তিগত রেকর্ড, সাফল্য, খ্যাতি এবং নামের কথা ভেবে খেলছে।”
তাঁর সঙ্গে যে তামিমের সম্পর্ক খারাপ তা অস্বীকার করেননি শাকিব। কয়েক মাস আগে টিভিতে সাক্ষাৎকারে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন প্রথম বলেছিলেন, সাজঘরে তামিম-শাকিবের কথা হয় না। সেই প্রসঙ্গে শাকিব বলেন, “পাপন ভাইয়ের উচিত হয়নি প্রকাশ্যে এ কথা বলা। নিজের ঘরের কথা কি সবাইকে বলে বেড়াব? আমরা কথা না বললেও তা কি কখনও দলে খারাপ প্রভাব ফেলেছে? আমার তো মনে হয়নি। মাঠে তো কথা বলেছি।”
প্রসঙ্গত, বুধবার ভিডিয়ো বার্তায় তামিম বলেছিলেন, “আমাকে বোর্ডের উপর মহল থেকে এক জন ফোন করলেন। উনি আমাদের ক্রিকেটে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত। আমাকে হঠাৎ ফোন করে উনি বললেন, ‘তুমি তো বিশ্বকাপে যাবে। তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলতে হবে। তুমি এক কাজ করো, আফগানিস্তানের সঙ্গে প্রথম ম্যাচটা খেলো না।’ আমি বললাম, ‘এখনও তো ১২-১৩ দিন বাকি। আমি তো এর মধ্যে ভাল কন্ডিশনে পৌঁছে যেতে পারি। তাই এখনই কী করে বলছেন যে, প্রথম ম্যাচে খেলব না?’ উনি তখন বললেন, ‘আচ্ছা তুমি যদি খেলো, তা হলে তোমাকে নিয়ে আমাদের একটা পরিকল্পনা রয়েছে। তোমাকে নীচের দিকে ব্যাট করাব।”’
তাঁর সংযোজন, “একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, আমি তখন কোন মানসিকতার মধ্যে ছিলাম। হঠাৎ করে একটা ভাল ইনিংস খেলেছি। আমি খুশি ছিলাম। হঠাৎ করে এই ধরনের কথা আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে (ওপেনিং) ব্যাটিং করেছি। জীবনে কখনও তিন-চার নম্বরেও ব্যাট করিনি। আমি যদি তিনে বা চারে ব্যাটিং করতাম, তা হলে ওপর-নীচ করানোটা মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু আমার তিন, চার, পাঁচে ব্যাটিংয়ের অভিজ্ঞতাই নেই। আমি কথাগুলো ভাল ভাবে নিইনি। উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল আমাকে জোর করে বিভিন্ন ভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তখন আমি বললাম, ‘দেখুন, আপনাদের যদি এমন ভাবনাচিন্তা থাকে, তা হলে আমাকে পাঠাবেন না। আমি এই নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না। প্রতি দিন আপনারা আমাকে এক একটা নতুন সমস্যার সামনে ফেলে দেবেন, আমি এগুলোর মধ্যে থাকতে চাই না।’ তার পরও ফোনে ওঁর সঙ্গে আমার অনেক কথাবার্তা হয়। সেগুলো এখানে না বলাই ভাল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy