নায়ক: মোহালিতে ব্যাট হাতে শাসন জাডেজার। ছবি পিটিআই।
দিনের শুরুটা হয়েছিল কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করে। কিংবদন্তির প্রয়াণের পরের দিন তাঁরই পছন্দের ‘রকস্টার’ ১৭৫ রানে অপরাজিত থেকে ভারতকে বভাল জায়গায় পৌঁছে দিলেন। তিনি রবীন্দ্র জাডেজা। যাঁর ১৭৫ রানে অপরাজিত থাকার সময় অধিনায়ক রোহিত শর্মা ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করায় বিতর্কের ঝড় উঠেছে গণমাধ্যমে। অনেকেই ২০০৪ সালে পাক সফরে রাহুল দ্রাবিড়ের মুলতান টেস্টে সচিন তেন্ডুলকর ১৯৪ রানে অপরাজিত থাকাকালীন ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করার প্রসঙ্গও টেনে আনেন। গণমাধ্যমে অনেকেই বলেন, দ্রাবিড়ের নির্দেশেই ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন রোহিত।
কিন্তু শনিবার রবীন্দ্র জাডেজা সাংবাদিক বৈঠকে এসে যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে দেন। জানিয়ে দিলেন, পিচে বল ঘুরতে শুরু করে দিয়েছিল। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরাও ক্লান্ত হয়ে উঠেছিলেন। তাকে কাজে লাগিয়ে বিপক্ষের বেশ কিছু উইকেট তুলে নিতে চেয়েছিলেন জাডেজা। ঠিক সেটাই হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে এসে জাডেজা বলেন, ‘‘পিচে অসমান বাউন্স রয়েছে। বলও ঘুরতে শুরু করেছে। আমার মনে হয়েছিল, বিপক্ষকে সেই সময় ব্যাট করতে পাঠালে আমরাই সুবিধাজনক জায়গায় থাকব।’’ যোগ করেন, ‘‘শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা পৌনে দু’দিন ফিল্ডিং করার পরে ক্লান্তও হয়ে পড়েছিল। তা দেখেই ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে দেওয়ার কথা বলেছিলাম। ওদের ব্যাটারদের পক্ষে এসেই বড় শট নেওয়া সম্ভব নয়। তা বুঝতে পেরেই এই কথা বলেছিলাম।’’
জাডেজার মন্তব্যের পরে রোহিতকে খলনায়কের আসন থেকে সরিয়েছে গণমাধ্যম। মেতে উঠেছে বিরাট কোহলির গার্ড অব অনারে। শ্রীলঙ্কার ইনিংস শুরু হওয়ার সময় ভারতীয় ক্রিকেটারেরা দু’পাশে সার হয়ে দাঁড়িয়ে বিরাটের জন্য হাততালি দেন। প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়কের হাসিতেই স্পষ্ট, কতটা খুশি তিনি হয়েছেন রোহিতের সেই সিদ্ধান্তে।
জাডেজাও খুশি বিরাট-প্রাপ্তিতে। তিনি নিজেও কপিল দেবের নজির ভেঙে ফেলেছেন শনিবার। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে কোনও ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে টেস্টে সর্বোচ্চ রান ছিল কপিলেরই। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৯৮৬ সালে কানপুরে ১৬৩ রান করেছিলেন কপিল। জাডেজা এ দিন ১৭৫ রানে অপরাজিত থেকে ৩৫ বছরের নজির ভেঙে দেন। সাংবাদিক বৈঠকে এসে যদিও এই ইনিংস উৎসর্গ করে গেলেন তাঁর শ্যালককে। কিন্তু তাঁর নজির গড়ার আগের দিন ওয়ার্নের মৃত্যুর খবর শুনে বাকিদের মতোই ভেঙে পড়েন জাডেজা। তাঁর নেতৃত্বেই ১৮ বছর বয়সে রাজস্থান রয়্যালসে সুযোগ পেয়েছিলেন জাডেজা। পঞ্জাব কিংসের (তখন কিংস ইলেভেন পঞ্জাব) বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানোর পরে ওয়ার্ন তাঁর নাম রেখেছিলেন ‘রকস্টার’। জাডেজার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ওয়ার্নের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি কতটা বিস্মিত? জাড্ডুর উত্তর, ‘‘কাল রাতে খবরটা শোনার পরে আমি খুবই হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। কিছুই ভাল লাগছিল না। বিশ্বাসই হচ্ছিল না, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছিলাম, খবরটা যেন মিথ্যে হয়।’’ যোগ করেন, ‘‘২০০৮ সালে যখন ওঁর সঙ্গে প্রথম কথা বলি, মনেই হচ্ছিল না একজন কিংবদন্তির সঙ্গে মিশছি। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে খেলে আসার পরে ওঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুম ব্যবহার করব, এটাই বিশাল প্রাপ্তি ছিল। আমাকে খুবই ভাল একটি মঞ্চ দিয়েছিলেন। কিন্তু জীবন বড়ই অনিশ্চিত। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’’
শেষ কয়েক বছর ধরেই জাডেজা ব্যাট হাতে দায়িত্ব সামলাতে শুরু করেছেন। আগের মতো তাড়াহুড়ো করছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy