আরও এক ম্যাচ হারতে হল ২৭ কোটির ঋষভ পন্থকে। আইপিএলের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটারের চাপ আরও বাড়ল। আরও এক বার হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি। গ্যালারিতে বসে দলের হার দেখলেন লখনউয়ের মালিক সঞ্জীব গোয়েন্কা। লখনউকে নিয়ে ছেলেখেলা করল পঞ্জাব কিংস। গত বারের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার বুঝিয়ে দিলেন, নতুন দলকেও চ্যাম্পিয়ন করার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছেন তিনি। চ্যাম্পিয়নের মতোই খেলল পঞ্জাব। লখনউকে ৮ উইকেটে হারাল পঞ্জাব। পর পর দু’ম্যাচ জিতল তারা।
পঞ্জাবের ব্যাটিং দেখে বোঝা গেল না, এই পিচেই কিছু ক্ষণ আগে ব্যাট করেছে লখনউ। ঘরের দল যেখানে রান করতে সমস্যায় পড়ল সেখানে ঝড়ের গতিতে ব্যাট করল পঞ্জাব। প্রভসিমরন সিংহ আরও এক বার বোঝালেন, কেন তাঁকে ধরে রেখেছে পঞ্জাব। ওপেন করতে নেমে একার কাঁধে দলের জয় নিশ্চিত করলেন তিনি। বাকি কাজটা করলেন শ্রেয়স ও নেহাল ওয়াধেরা। শ্রেয়স ছক্কা মেরে খেলা শেষ করলেন। পর পর দু’ম্যাচে অর্ধশতরান করলেন তিনি।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব খারাপ হয় লখনউয়ের। গত দুই ম্যাচে রান করা মিচেল মার্শকে প্রথম ওভারেই আউট করেন অর্শদীপ সিংহ। শূন্য রানে ফেরেন তিনি। প্রথম ধাক্কার পর অবশ্য জুটি বাঁধেন এডেন মার্করাম ও নিকোলাস পুরান। দ্রুত রান করছিলেন তাঁরা। ভাল দেখাচ্ছিল মার্করামকে। কিন্তু ২৮ রান করে লকি ফার্গুসনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি।
দু’উইকেট পড়ার পর জুটি বাঁধা উচিত ছিল পন্থ ও পুরানের। পন্থ নামার পরেই স্পিনারদের আক্রমণে নিয়ে আসেন শ্রেয়স। পরিকল্পনা কাজে লাগে পঞ্জাবের অধিনায়কের। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বল পিছনের দিকে মারতে গিয়ে সরাসরি যুজবেন্দ্র চহলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লখনউয়ের অধিনায়ক। ২ রান করেন তিনি। দায়িত্বজ্ঞানহীন শট মেরে আউট হয়ে ফেরার পথে পন্থের চোখমুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কতটা চাপে রয়েছেন তিনি। হয়তো ২৭ কোটি টাকা প্রভাব ফেলেছে তাঁর খেলায়। কিন্তু যে ভাবে একের পর এক ম্যাচে তিনি আউট হচ্ছেন, তাতে এই চাপ বাড়বে বৈ কমবে না।
লখনউয়ের ইনিংস টানলেন পুরান ও আয়ুষ বাদোনি। পুরানকে দেখে মনে হচ্ছিল, আগের ম্যাচের ছন্দেই নেমেছেন তিনি। দ্রুত রান করছিলেন। বিশেষ করে চহলের বলে অনেক রান নেন তিনি। সেই চহলই অবশ্য পুরানকে আউট করেন। ৪৪ রান করেন তিনি। বাউন্ডারিতে ক্যাচ ধরেন ম্যাক্সওয়েল। লখনউয়ের মাঠ বড়। অন্য কোনও মাঠ হলে পুরানের সেই শট দর্শকদের মধ্যে গিয়ে পড়ত। এই ম্যাচে রান পাননি লখনউয়ের আর এক বিদেশি ডেভিড মিলার। ১৯ রান করে ফেরেন তিনি।
যখন দেখে মনে হচ্ছিল, ১৫০ রান করতে সমস্যায় পড়বে লখনউ, তখনই হাত খোলা শুরু করলেন বাদোনি। তাঁকে সঙ্গ দিলেন আব্দুল সামাদ। জম্মু-কাশ্মীরের এই ব্যাটার প্রথম বলেই ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করেন। ডেথ ওভারে বড় শট মারতে থাকেন তাঁরা। অর্শদীপের এক ওভারে আসে ২০ রান। তবে ইনিংসের শেষ ওভারে ভাল করেন অর্শদীপ। মাত্র ৭ রান দেন তিনি। জোড়া উইকেট তুলে নেন। নইলে ১৮০ রানের বেশি হত লখনউয়ের। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান করে লখনউ। বাদোনি ৪১ রান করে আউট হন। সামাদ ১২ বলে ২৭ রান করেন।
আরও পড়ুন:
লখনউয়ে ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, এই মাঠে রান তাড়া করা সহজ হবে না পঞ্জাবের পক্ষে। কিন্তু তাকে সহজ করে দিলেন প্রভসিমরন। ওপেনার প্রিয়াংশ আর্য অল্প রানে আউট হলেও রান তোলার গতি কমেনি পঞ্জাবের। বলা ভাল কমতে দেননি প্রভসিমরন। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে একের পর এক বড় শট খেললেন তিনি। বিশেষ করে দুই স্পিনার দিগ্বেশ রাঠি ও রবি বিশ্নোইকে নিশানা করলেন তিনি। লখনউ যেখানে পাওয়ার প্লে-তে ৩৯ রান করেছিল, সেখানে পঞ্জাব করল ৬২ রান। সেখানেই খেলা লখনউয়ের হাত থেকে বেরিয়ে গেল।
পাওয়ার প্লে শেষ হলেও প্রভসিমরনের শট থামেনি। অর্ধশতরান করেন তিনি। অন্য প্রান্তে ভাল খেলছিলেন শ্রেয়সও। শুরু থেকে বড় শট মারছিলেন। কিন্তু প্রভসিমরনের ইনিংসের সামনে তা নজরে পড়ছিল না। অবশেষে ৩৪ বলে ৬৯ রান করে আউট হন প্রভসিমরন। তত ক্ষণে ১০ ওভারে ১১০ রান তুলে ফেলেছে পঞ্জাব।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বাকি রান তুলতে বিশেষ সমস্যা হল না পঞ্জাবের। প্রভসিমরন আউট হওয়ার পর শ্রেয়স হাত খোলা শুরু করলেন। তাঁকে সঙ্গ দিলেন নেহাল। প্রতি ওভারে বড় শট মারছিলেন পঞ্জাবের ব্যাটারেরা। শিশির পড়ায় বল ধরতেও সমস্যা হচ্ছিল। শ্রেয়সদের ব্যাটিং দেখে বোঝা যাচ্ছিল, নেট রানরেট বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। লখনউয়ের স্পিনারেরা মার খেলেন। তবু তাঁদের দিয়েই বল করিয়ে গেলেন পন্থ। অধিনায়ক হিসাবে তাঁর পরিকল্পনার অভাবও দেখা গেল। অধিনায়ক পন্থকে টেক্কা দিলেন অধিনায়ক শ্রেয়স।
খেলা শেষ করার তাড়া ছিল পঞ্জাবের। শ্রেয়সের পাশাপাশি ভাল খেললেন নেহাল। মুম্বই থেকে পঞ্জাবে আসার পর প্রথম বার মাঠে নামলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২২ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতল পঞ্জাব। শ্রেয়স ৫২ ও ওয়াধেরা ৪৩ রানে অপরাজিত থাকলেন।
- ১৮ বছরের খরা কাটিয়ে ট্রফি জিতেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। প্রথম বার আইপিএল জেতার স্বাদ পেয়েছেন বিরাট কোহলি। ফাইনালে পঞ্জাব কিংসকে ছ’রানে হারিয়েছে বেঙ্গালুরু।
- ট্রফি জেতার পরের দিনই বেঙ্গালুরুতে ফেরেন বিরাট কোহলিরা। প্রিয় দলকে দেখার জন্য প্রচুর সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে। সেখানে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১ জনের। আহত ৫০-এরও বেশি। ঘটনাকে ঘিরে দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে।
-
১১ মৃত্যুর জের, আইপিএল জয়ের উৎসবে কী কী করা যাবে না, শনিবার ঠিক করবে বোর্ড, আর কী কী নিয়ে আলোচনা?
-
‘লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় হবে’! বেঙ্গালুরুতে কোহলিদের উৎসবের আগে সতর্ক করেছিল পুলিশই, তবু কেন এড়ানো গেল না দুর্ঘটনা
-
আইপিএলের শেষ পর্বে ছিলেন না, ভারত-পাক সংঘাত, না কি ‘বিশেষ’ কারণে খেলতে আসেননি স্টার্ক?
-
‘ভিড়ের চাপে স্ত্রীয়ের হাত ছুটে যায়’, পদপিষ্টে প্রিয়জন হারিয়ে কথা বলার ভাষা নেই পরিবারের
-
অফিসে খোলা পড়ে ল্যাপটপ, আরসিবি-র অনুষ্ঠান দেখেই ফিরবেন বলেছিলেন, ফিরে এল তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী কামাক্ষীর দেহ