Advertisement
২২ জানুয়ারি ২০২৫
India Cricket

রাঁধুনি আর চুল বাঁধতে পারছে না! রোহিত, কোহলিদের ‘তারকা সংস্কৃতি’-তে কোপ

বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা থেকে লিয়োনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এঁরা প্রত্যেকেই নিজস্ব রাঁধুনি নিয়ে ঘোরেন। সেই সংস্কৃতিতেই বদল আনতে চাইছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।

cricket

(বাঁ দিকে) পছন্দের খাবারের সামনে রোহিত শর্মা। একমনে খেতে ব্যস্ত বিরাট কোহলি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:১৪
Share: Save:

যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। কিন্তু রাঁধতে গিয়ে চুল খুলে যাচ্ছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সেটাই মনে করছে। তাই বড় বদলের দিকে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট। অস্ট্রেলিয়ায় ব্যর্থতার পর ক্রিকেটারদের ‘তারকা সংস্কৃতি’তে বদল আনতে চাইছে তারা। সেই জন্য ১০ দফা নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে বোর্ড। তার মধ্যে অন্যতম বিদেশ সফরে ব্যক্তিগত রাঁধুনি নিয়ে যাওয়া। বেশ কিছু বছর ধরে দলের পাশাপাশি ব্যক্তিগত রাঁধুনি নিয়ে যান বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, হার্দিক পাণ্ড্যেরা। সেই সংস্কৃতি বদলাতে পারে। বোর্ড নির্দেশ দিতে পারে, বোর্ড নিযুক্ত দুই রাঁধুনি দলের সঙ্গে থাকবেন। তাঁরাই ক্রিকেটারদের খাবারের দিকে নজর রাখবেন।

শুধু ভারতীয় দল নয়, আরও বেশ কয়েকটি দল বিদেশ সফরে (বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তান) গেলে রাঁধুনি সঙ্গে নিয়ে যায়। ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবলেও এই ছবি দেখা যায়। দলের পাশাপাশি লিয়োনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মতো ফুটবলারেরা রাঁধুনি নিয়ে ঘোরেন। ব্যক্তিগত রাঁধুনি রয়েছে ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক নোভাক জোকোভিচেরও। ব্যক্তিগত রাঁধুনি রাখার নেপথ্যে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। সেই কারণ উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত বদল করা কিন্তু সহজ নয়।

প্রত্যেক খেলোয়াড়ের ডায়েট আলাদা। সকলের শরীরে সমান পুষ্টি দরকার পড়ে না। তাই খেলোয়াড় ভেদে ডায়েট বদলায়। এখন খেলোয়াড়েরা নিজের ফিটনেস নিয়ে অনেক বেশি সচেতন। বাইরের খাবার খান না। কোহলি পুরোপুরি ভেগান। তাই তাঁর ডায়েট যা হবে, রোহিতের তা হবে না। শুধু বাড়িতে থাকার সময় নয়, যখন খেলতে বিদেশে যান তখনও সঙ্গে রাঁধুনি নিয়ে যান তাঁরা।

ভারতীয় দলে ব্যক্তিগত রাঁধুনি সংস্কৃতি

ভারতীয় দলে আলাদা রাঁধুনি রয়েছে। দলের সঙ্গেই থাকেন তাঁরা। ক্রিকেটারদের ডায়েট চার্ট তাঁদের কাছে থাকে। সেই অনুযায়ী তাঁরা রান্না করেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে ভারতীয় ক্রিকেটে ব্যক্তিগত রাঁধুনি সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। অনেক ক্রিকেটারই সঙ্গে করে রাঁধুনি নিয়ে যান। রোহিত, লোকেশ রাহুল ও সূর্যকুমার যাদবের খাবারের দিকে নজর রাখেন হর্ষ দীক্ষিত। মুম্বইয়ের এই রাঁধুনির একটি সংস্থা রয়েছে। প্রথমে সেখানে তিন জন রাঁধুনি ছিলেন। সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ২০। ভারতে থাকাকালীন রোহিতদের জন্য রান্না করেন হর্ষ। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বরে ভারতীয় দল যখন অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিল তখন রোহিত ও রাহুলের রাঁধুনি হয়ে সেখানে গিয়েছিলেন হর্ষের সংস্থার রৌনক শাহ।

কোহলির আবার এক জন নয়, দু’জন ব্যক্তিগত রাঁধুনি রয়েছেন। সুরেশ পিল্লাই ও পবন বিস্ত। সুরেশ দক্ষিণ ভারতীয় রান্নায় বিশেষজ্ঞ। ভারত ছাড়া লন্ডনেও কাজ করেছেন তিনি। পবন আবার পঞ্জাবি রান্নায় বিশেষজ্ঞ। কোহলির একটি রেস্তঁরার প্রধান রাঁধুনি তিনি। কোহলি সারা দিনে কী কী খাবেন, তার দায়িত্ব থাকে এই দু’জনের কাঁধে। বিদেশ সফরেও দু’জনকে সঙ্গে করে নিয়ে যান কোহলি।

হার্দিক পাণ্ড্য ও ঋষভ পন্থেরও ব্যক্তিগত রাঁধুনি রয়েছে। হার্দিকের রাঁধুনির নাম আরভ নাঙ্গিয়া। পন্থের রান্নার দায়িত্ব অক্ষয় অরোরার কাঁধে। হার্দিক যখন চোটে দীর্ঘ দিন মাঠের বাইরে ছিলেন তখনই আরভকে নিযুক্ত করেন তিনি। চোট সারিয়ে ফেরার ক্ষেত্রে ডায়েটের বড় ভূমিকা থাকে। পন্থও গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পরে যখন রিহ্যাব শুরু করেন তখন অক্ষয়কে রাঁধুনি হিসাবে নিয়ে আসেন। অক্ষয় প্রথমেই পন্থের ওজন কমানোর দিকে নজর দিয়েছিলেন। ওজন কমায় সুস্থ হয়ে উঠতে সুবিধা হয়েছিল তাঁর। দুর্ঘটনার আগে পন্থের যা ওজন ছিল, তা এখন কম। পন্থ নিজেও স্বীকার করেছেন, এখন মাঠে তাঁর ফিটনেস অনেক বেশি থাকে।

food

দুর্ঘটনার পর থেকে ব্যক্তিগত রাঁধুনির তৈরি খাবারই ভরসা ঋষভ পন্থের। ছবি: সংগৃহীত।

তবে এই রাঁধুনিদের সঙ্গে বোর্ডের কোনও সম্পর্ক নেই। বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের ও বোর্ডের রাঁধুনিদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। ব্যক্তিগত রাঁধুনিদের খরচ ক্রিকেটারদের দিতে হয়। তাঁরা সাধারণত এমন হোটেলে থাকেন যেখানে রান্না করার সুবিধা থাকে। ক্রিকেটারদের ডায়েট চার্ট মেনে তাঁরা রান্না করেন। তার পরে টিফিন বাক্সে ভরে তা পাঠিয়ে দেন। হোটেল থেকে শুরু করে মাঠ, ক্রিকেটারেরা সেই খাবারই খান।

ভারত সফরে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড দলে থাকে রাঁধুনি

আগে ভারত সফরে এলে রাঁধুনি নিয়ে আসত না অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড দল। কিন্তু সেই সংস্কৃতিও শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে পাকিস্তানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ইংল্যান্ডের কয়েক জন ক্রিকেটার। তার পর থেকেই উপমহাদেশে এলে সঙ্গে রাঁধুনি আনে ইংল্যান্ড। ওমার মেজ়িয়ানে তাঁদের দলের রাঁধুনি। তিনি ইংল্যান্ডের ফুটবল দল ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডেও রাঁধুনির দায়িত্ব পালন করেন। তবে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট দল ভারতে এলে তখন ওমার সেই দলের সঙ্গে আসেন।

একই কাজ করে অস্ট্রেলিয়াও। ভারতীয় খাবারে ঝাল ও মশলার ব্যবহার বেশি হওয়ায় অনেক বিদেশি ক্রিকেটার সমস্যায় পড়েন। ফলে দলের সঙ্গে রাঁধুনি থাকে। আইপিএলের দলগুলিতে রাঁধুনি থাকে। ফলে সেখানেও বিদেশি ক্রিকেটারদের সমস্যা হয় না। তার পরেও অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার মার্কাস স্টোইনিস ব্যক্তিগত রাঁধুনি নিয়ে ঘোরেন। তাঁর রাঁধুনির নাম ভেল্টন সালডানহা। লখনউ সুপার জায়ান্টসে খেলার সময় রাহুল এই রাঁধুনি ঠিক করে দিয়েছিলেন।

মেসি, রোনাল্ডোর সঙ্গেও থাকে ব্যক্তিগত রাঁধুনি

গত প্রায় দু’দশক ধরে বিশ্ব ফুটবল মাতিয়েছেন তাঁরা। কেরিয়ারের শেষ দিকে থাকলেও এখনও মাঠে নামলে নিজেদের সবটা দেন মেসি ও রোনাল্ডো। এই বয়সেও তাঁদের ফিটনেস অবাক করে। সেই ফিটনেস ধরে রাখার নেপথ্যে রয়েছেন ব্যক্তিগত রাঁধুনি। মেসির ব্যক্তিগত রাঁধুনি আন্তোনিয়া ফারিয়েস। মায়ামিতে মেসির সঙ্গেই থাকেন তিনি। অন্য দিকে রোনাল্ডোর ব্যক্তিগত রাঁধুনি আলসি সিনানাজ়। এখন সৌদি আরবে পর্তুগালের ফুটবলারের রান্নার দায়িত্ব তাঁর। দুই ফটবলারের শরীরের জন্য যা যা দরকার সেই অনুযায়ী রান্না করেন তাঁরা।

food

ব্যক্তিগত রাঁধুনির হাতে তৈরি খাবার খেতে ভালবাসেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ছবি: সংগৃহীত।

কাতার বিশ্বকাপে রাঁধুনি নিয়ে গিয়েছিল মেসির আর্জেন্টিনা

কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার সময় রাঁধুনি নিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। তারা কোনও হোটেলে থাকেননি। দোহা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে ছিলেন মেসিরা। শুধু রাঁধুনি নয়, সঙ্গে গোমাংস থেকে শুরু করে রান্নার সব উপকরণ নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখানে রান্না করে খেয়েছে আর্জেন্টিনা। বাইরের কোনও খাবারের উপর ভরসা রাখেনি দল। তার সুবিধা আর্জেন্টিনা পেয়েছিল কি না তার কোনও প্রমাণ নেই। তবে ২০২২ সালে কাতার থেকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরেছিলেন মেসিরা।

প্যারিস অলিম্পিক্সে গ্রেট ব্রিটেনের সঙ্গে ছিল রাঁধুনি

বাদ যায়নি অলিম্পিক্সও। ফ্রান্সের খাবারের সুনাম রয়েছে। কিন্তু প্যারিসে অলিম্পিক্সে খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন গ্রেট ব্রিটেন ও জার্মানির খেলোয়াড়েরা। ফলে পরবর্তী কালে গ্রেট ব্রিটেনের খেলোয়াড়দের জন্য আলাদা রাঁধুনিদের ব্যবস্থা করা হয়। সেই রাঁধুনিদের রান্না করা খাবার খেলোয়াড়েরা খেতেন।

টেনিসে পরিচিত দৃশ্য ব্যক্তিগত রাঁধুনি

ক্রিকেটে কয়েক বছর আগে শুরু হলেও টেনিসে এই দৃশ্য খুব পরিচিত। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের একটি দল থাকে। সেখানে কোচ, ফিজ়িয়ো ছাড়াও রাঁধুনি থাকে। খেলোয়াড়েরা সারা বছর বিভিন্ন দেশে ঘোরেন। তাঁদের খাবারের দিকে নজর দেন রাঁধুনিরা। রজার ফেডেরার সুইৎজ়ারল্যান্ডের হলেও তাঁর রাঁধুনি ছিলেন ইটালির আন্দ্রিয়া ত্রানচেরো। রাফায়েল নাদালের রাঁধুনি অবশ্য স্পেনেরই। নাম কর্তেস মার্তিন। টেনিসে সবচেয়ে বেশি ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক জোকোভিচের রাঁধুনি এক জন জার্মান। নাম ডেনিস মুলার। তাঁর তৈরি খাবার খেয়ে এই বয়সেও খেলে যাচ্ছেন নোভাক।

টেনিসে ব্যক্তিগত রাঁধুনির চল থাকলেও তা যে ক্রিকেটে শুরু হয়েছে তা জানতেন না বাংলার হয়ে রঞ্জিজয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই খানিকটা অবাকই হয়েছেন তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনকে সম্বরণ বললেন, “ক্রিকেটে যে ব্যক্তিগত রাঁধুনি থাকে সেটা তো জানতামই না। এগুলো টেনিসে দেখা যায়। ক্রিকেটারেরা যে হোটেলে থাকেন সেখানে তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী রাঁধুনিরা রান্না করেন। প্রত্যেকে নিজের পছন্দের খাবারই খান। তা হলে ব্যক্তিগত রাঁধুনির কী দরকার?”

food

নিজের পছন্দের খাবারের সঙ্গে নোভাক জোকোভিচ। ছবি: সংগৃহীত।

ম্যাচ গড়াপেটার সংশয়

ক্রিকেটের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত রাঁধুনি থাকলে ম্যাচ গড়াপেটার একটি সংশয় থেকে যাচ্ছে। কারণ, এই ব্যক্তিগত রাঁধুনি বা ম্যানেজারেরা দলের সদস্য নন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কোনও ক্রিকেটারের ম্যানেজার সরাসরি স্টেডিয়ামে ভারতীয় দলের সাজঘরে ঢুকে পড়েছিলেন। এই বিষয়টি ভাল ভাবে নেননি কোচ গৌতম গম্ভীর। বোর্ডকে জানিয়েছেন তিনি। দলের অন্দরের কথা বাইরে পাচার করারও অভিযোগ করেছেন।

গড়াপেটার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বাংলার হয়ে জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি। তিনি বললেন, “ব্যক্তিগত রাঁধুনিরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকেন না। অন্য হোটেলে থাকেন। সেখানে বাইরের লোকেরও যাতায়াত রয়েছে। ফলে গড়াপেটার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। সেই কথা ভেবে বোর্ড ব্যক্তিগত রাঁধুনি সঙ্গে না নিয়ে যেতে বলতেই পারে।”

গম্ভীর জানিয়েছেন দলগত ঐক্যের কথা। অস্ট্রেলিয়া সফরে এক বা দু’বার ছাড়া ক্রিকেটারেরা নাকি একসঙ্গে খাননি। আলাদা আলাদা গ্রুপ করে খেয়েছেন। সেই সংস্কৃতি বদলাতে চাইছেন তিনি। চাইছেন খাবার টেবিলে গোটা দল একসঙ্গে বসুক। কিন্তু ক্রিকেট এখন অনেক বদলে গিয়েছে। ক্রিকেটারেরা বড় বড় তারকা। তাঁদের প্রত্যেকের কেরিয়ারের সঙ্গে যুক্ত থাকে বহু স্পনসর। দেশের ক্রিকেটের বাইরে আইপিএল আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সব ক্রিকেটারেরা যত বেশি দিন সম্ভব খেলার চেষ্টা করেন। তার জন্য প্রয়োজন ফিটনেস। আর ফিট থাকতে প্রয়োজন ঠিক ডায়েট মেনে খাওয়া। ফলে চাইলেও রাঁধুনি সংস্কৃতি কি বদলাতে পারবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

India Cricket BCCI Virat Kohli Rohit Sharma Gautam Gambhir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy