বিপাকে পড়লেন রামিজ রাজা। ফাইল ছবি
পদ থেকে সরানো হতেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে চলেছেন রামিজ রাজা। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) নতুন চেয়ারম্যান নাজাম শেঠির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তিনি। সেই ‘অপরাধে’ রামিজের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিল পিসিবি।
গত বৃহস্পতিবার পিসিবি চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রাজাকে। শেঠির নেতৃত্বাধীন ১৪ জনের কমিটিকে আগামী চার মাস পাকিস্তান ক্রিকেটের দায়িত্ব নিতে বলা হয়। তার পরেই ক্ষেপে যান রামিজ। একের পর এক অভিযোগ করেন নতুন কমিটির উদ্দেশে। রামিজের সেই অভিযোগের বহর দেখে অবাক পাক বোর্ড। তারা সাফ জানিয়েছে, রামিজের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পথ খোলা রয়েছে। রামিজের দাবি অসত্য বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
রামিজ অভিযোগ করেছিলেন, শেঠির বিদেশযাত্রার জন্য অনেক টাকা খরচ করা হয়েছে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পিসিবি জানিয়েছে, শেঠি যখন এর আগে বোর্ড প্রধান ছিলেন তখন পাকিস্তান বিদেশে খেলত। ফলে বার বার আমিরশাহি-সহ অন্যত্র যাতায়াত করতে হত শেঠিকে। সে কারণেই খরচ বেশি হয়েছে। তা ছাড়া, নিরাপত্তার খাতিরে বিশেষ গাড়িও দেওয়া হত। সেই গাড়ি দেওয়া হয়েছে রামিজকেও। তাই খরচ নিয়ে অভিযোগ করার জায়গা নেই। বাকি যে দাবিগুলি করেছেন রামিজ, সবই নস্যাৎ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে নতুন পিসিবি চেয়ারম্যানকে আক্রমণ করেন রামিজ়। তিনি বলেন, ‘‘শুধু মাত্র এক জনকে চেয়ারম্যান করার জন্য পিসিবির সংবিধানই বদলে দেওয়া হয়েছে। শেঠির নিয়োগ নিশ্চিত করতেই এটা করা হয়েছে। এমন জিনিস সারা বিশ্বের কোথাও দেখিনি। পুরো বিষয়টাই করা হল মাঝ মরসুমে যখন বিদেশি দলগুলি পাকিস্তান সফর করছে। ছেলেরা যখন টেস্ট খেলছে, তখনই বদলে দেওয়া হল প্রধান নির্বাচককে। সেটাও রাত ২টোর সময়। গোটা ব্যাপারটাই দুঃখজনক।’’
রামিজ় আরও বলেন, ‘‘বিষয়টা এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যেন বিশেষ কেউ এসেছেন। যিনি ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবেন। অথচ আমরা জানি এর আগে তিনি কী করেছেন। যে কোনও মূল্যে প্রচারে থাকতে চান তিনি। অথচ ক্রিকেটের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্কই নেই। জীবনে ব্যাটও ধরেননি। মরসুমের মাঝপথে কোচ বদলের কথাও ভাবছেন তিনি। মিকি আর্থারকে আনার কথা বলা হচ্ছে। সাকলিন মুস্তাক কিংবদন্তি ক্রিকেটার। প্রায় ৫০টি টেস্ট খেলেছে। এমন এক জন ক্রিকেটারের সঙ্গে এই আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।’’
পিসিবির চেয়ারম্যান হিসাবে রামিজ়ের কার্যকালের মেয়াদ হওয়ার কথা ছিল তিন বছর। কিন্তু মাত্র ১২ মাস পরই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পিসিবির অপসারিত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘হঠাৎ করে ১২ মাস পরেই সরে যেতে বলা হলে হতাশ লাগবেই। এক জন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে আনার জন্য এটা করা হল। এতে ক্রিকেটের কোনও উপকার হবে না। বরং জাতীয় দল এবং অধিনায়কের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে। এ ধরনের ঘটনা এক মাত্র পাকিস্তানেই ঘটে। আমি আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিষয়টি তুলব। পুরো ব্যবস্থাটাই একটা রসিকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
আক্রমণের সুর চড়িয়ে রামিজ় আরও বলেন, ‘‘পিসিবির অফিস থেকে আমার জিনিসগুলি পর্যন্ত বের করে আনার সুযোগ দেওয়া হয়নি। যাঁদের ক্রিকেটের প্রতি কোনও আগ্রহ, ভালবাসা নেই তাঁদের আনা হয়েছে সংবিধানকে ধ্বংস করে। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল। এক নায়ক মানসিকতা নিয়ে কখনও সেরা হওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy