নিউ জ়িল্যান্ডের পর ভারতের কাছেও হার। মহম্মদ রিজ়ওয়ানদের পারফরম্যান্সে হতাশ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কর্তারা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ হলেই অন্তর্বর্তী কোচ আকিব জাভেদ-সহ জাতীয় দলের সব কোচকে ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য আরও একটি আশঙ্কার কথা শোনা যাচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) প্রতিযোগিতাগুলিতে ধারাবাহিক ব্যর্থতায় একাধিক স্পনসর হারাতে পারে পিসিবি।
জাতীয় দলের কোচদের উপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না মহসিন নকভিরা। জাতীয় নির্বাচকদের কাজেও তিনি খুশি নন। বোর্ড অফ গভর্নর্সের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করবেন নকভি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এই খবর জানিয়েছে।
পিসিবির এক কর্তা বলেছেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমাদের দলের পারফরম্যান্স অত্যন্ত হতাশাজনক। এখনকার কোনও কোচিং স্টাফকেই আর দায়িত্বে রাখা হবে না। লাল বল এবং সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য আলাদা কোচ রাখা হবে কি না, তা অবশ্য ঠিক হয়নি।’’ বিদেশি কোচদের নিয়ে আর আগ্রহী নন পিসিবির একাধিক কর্তা। পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের মধ্যে থেকেই বেছে নেওয়া হতে পারে মহম্মদ রিজ়ওয়ান, বাবর আজ়মদের পরবর্তী কোচ।
বড় প্রতিযোগিতাগুলিতে টানা ব্যর্থতায় হতাশ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিও। পিসিবি কর্তারা স্পনসর হারানোর আশঙ্কা করছেন। ওই কর্তা বলেছেন, ‘‘২৯ বছর পর আমরা একটা বড় মাপের প্রতিযোগিতার আয়োজক। অথচ প্রতিযোগিতা শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই আমরা প্রায় ছিটকে গিয়েছি। নকআউট পর্বের টিকিট বিক্রি প্রত্যাশামতো না-ও হতে পারে। আমরা না খেললে তার একটা প্রভাব তো পড়বেই।’’
পিসিবি কর্তাদের আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা মেনে নিয়েছেন সে দেশের বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞ তাহির রেজ়া। তিনি বলেছেন, ‘‘একটা দল বার বার ব্যর্থ হলে মানুষের আগ্রহ কমতে বাধ্য। দলের ব্র্যান্ড ভ্যালু কমে যায়। তার প্রভাব সরাসরি আঘাত হানে বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির স্বার্থে। ফলে তারা নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহী হয় না।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানে ক্রিকেটকে বিক্রি করা আগের মতো সহজ নয়। পারফরম্যান্স ভাল না হলে সমর্থক, স্পনসর, অন্য বিজ্ঞাপনদাতা, সম্প্রচারকারী সংস্থা সকলেই আগ্রহ হারায়। পাকিস্তান ক্রিকেটে তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এমন ফলাফলের পর ক্রিকেটে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী করা কঠিন। বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি বিনোদন জগত বা অন্য খেলায় বিনিয়োগ করতে চাইবে। যেখানে বেশি প্রচার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, সেখানে তারা বেশি বিনিয়োগ করবে এটাই স্বাভাবিক।’’
আরও পড়ুন:
রেজ়ার মতে, এখনই ততটা বোঝা না গেলেও পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। প্রতিযোগিতার খরচ তোলাও কঠিন হতে পারে পিসিবির পক্ষে।