ফাইনালে ব্যাট হাতে ব্যর্থ উদয় সাহারান। ছবি: এক্স।
আরও এক বার আইসিসি প্রতিযোগিতার ফাইনালে হারল ভারত। গত বছর এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিল ভারত। সেই হারের বদলা নেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু দাদাদের মতো ভাইয়েরাও ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার মানলেন। অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না ভারতীয় ব্যাটারেরা। ব্যাটিং ব্যর্থতা ডোবাল দলকে। ফলে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরা থেকে গেল ভারতের। ৭৯ রানে ভারতকে হারিয়ে চতুর্থ বারের জন্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হল অস্ট্রেলিয়া।
টসে জিতে সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হিউ ওয়েবগেন। কারণ, প্রতিযোগিতার ১৪টি ফাইনালে মাত্র চার বার প্রথমে ব্যাট করা দল জিতেছে। নিজেদের দলের শক্তি অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নেন ওয়েবগেন। কারণ, ফাইনালে চার জন পেসার খেলাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। তাই প্রথমে রান করে নিতে চেয়েছিলেন ওয়েবগেন। সেই পরিকল্পনা ঠিক প্রমাণিত হল।
শুরুটা ভাল হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ওপেনার স্যাম কনস্টাস রান পাননি। রাজ লিম্বানীর ভিতরের দিকে ঢুকে আসা বলে শূন্য রানে ফেরেন তিনি। তবে অপর ওপেনার হ্যারি ডিক্সন ফর্মে ছিলেন। তিনি কয়েকটি বড় শট খেলেন। বাঁ হাতি পেসার নমন তিওয়ারিকে নিশানা করেন তিনি। ডিক্সনকে সঙ্গ দেন অধিনায়ক ওয়েবগেন। দু’জনে মিলে দলের রানকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। ৭৮ রানের জুটি হয় দু’জনের মধ্যে।
ভারতকে ম্যাচে ফেরান সেই তিওয়ারিই। দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে প্রথমে ৪৮ রানের মাথায় ওয়েবগেন ও তার পরে ৪২ রানের মাথায় ডিক্সনকে ফেরান তিনি। দুই ব্যাটারই অর্ধশতরান হাতছাড়া করেন। ফাইনালে নজর কাড়লেন অস্ট্রেলিয়ার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যাটার হরজস সিংহ। এ বারের প্রতিযোগিতায় একটি ম্যাচেও রান পাননি তিনি। কিন্তু ফাইনালে পেলেন। চতুর্থ উইকেটে রায়ান হিকসের সঙ্গে ৬৬ রানের জুটি বাঁধেন তিনি। ভারতের দুই বাঁ হাতি স্পিনার মুশির খান ও সৌমি পাণ্ডের বিরুদ্ধে হাত খোলেন হরজস।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে একমাত্র অর্ধশতরান করেন হরজস। যদিও তার পরেই ৫৫ রানের মাথায় তাঁকে আউট করেন পাণ্ডে। রায়ান করেন ২০ রান। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান অলিভের পিক। তাঁকে আউট করতে পারেননি ভারতীয় বোলারেরা। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রান করে অস্ট্রেলিয়া, যা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে করা সর্বাধিক রান। ভারতের হয়ে লিম্বানী ৩টি উইকেট, তিওয়ারি ২টি উইকেট এবং পাণ্ডে ও মুশির ১টি করে উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে চাপে পড়ে ভারত। ৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় তারা। আউট হন আর্শিন কুলকর্ণি। তাঁকে ফেরান কলাম ভিডলার। অস্ট্রেলিয়ার চার পেসারের সামনে হাত খুলতে পারছিলেন না ভারতীয় ব্যাটারেরা। পিচের পেস ও বাউন্স ব্যবহার করছিলেন পেসারেরা। মুশিরের ক্যাচ ছাড়েন ডিক্সন। নইলে আরও সমস্যায় পড়ত ভারত।
রানের গতি একেবারে কম ছিল ভারতের। ১০ ওভারে মাত্র ২৮ রান হয়। সেখান থেকে একটু রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন মুশির। কিন্তু ২২ রানের মাথায় মাহলি বিয়ার্ডম্যানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ৪০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে যায় ভারতের। আবার ম্যাচ ভারতের দিকে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব গিয়ে পড়ে অধিনায়ক উদয় সাহারানের কাঁধে।
সেমিফাইনালে পারলেও ফাইনালে পারলেন না উদয়। বিয়ার্ডম্যানের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে ৮ রানের মাথায় আউট হলেন। সেমিফাইনালের আর এক নায়ক সচিন ধাসও ফাইনালে ব্যর্থ। অসি স্পিনার রাফ ম্যাকমিলানের প্রথম বলে আউট হলেন তিনি। ৯ রান করলেন সচিন। ৬৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যাপে পড়ে যায় ভারত।
যত সময় যাচ্ছিল, চাপ বাড়ছিল ভারতের উপর। কারণ, জরুরি রান রেট বাড়ছিল। হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না ভারতীয় ব্যাটারেরা। প্রিয়াংশু মোলিয়া ও আরাভেল্লি অবনীশও রান পাননি। ৯১ রানে ৬ উইকেট পড়ে যায় ভারতের। সেখান থেকে ম্যাচে ফেরার কোনও সুযোগ ছিল না। আদর্শ সিংহ ৪৭ রান করলেও তা কাজে আসেনি। শেষ দিকে মুরুগান অভিষেক হারের ব্যবধান কিছুটা কমান। শেষ পর্যন্ত ১৭৪ রানে শেষ হয় ভারতের ইনিংস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy