তিলক বর্মা। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের পর চেন্নাইয়ের এমএ চিদম্বরম স্টেডিয়াম। আরও একটি ম্যাচ জিতল ভারত। আরও এক বার দাপট দেখালেন ভারতের স্পিনারেরা। তবে চেন্নাইয়ে জিততে লড়াই করতে হল ভারতের ব্যাটারদের। ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেললেন তিলক বর্মা। চেন্নাইয়ের ঘূর্ণি উইকেটে ভারতকে গতি দিয়ে চাপে ফেলে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। পাশাপাশি ছিল আদিল রশিদের ঘূর্ণি। সেই সব সামলালেন তিলক। চার বল বাকি থাকতে দলের কপালে জয়ের ‘তিলক’ এঁকে দিলেন তিনি। টান টান ম্যাচ জিতে সিরিজ়ে ২-০ এগিয়ে গেল ভারত।
শুরুতে ধাক্কা অর্শদীপের
প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও শুরুতে ইংল্যান্ডকে ধাক্কা দেন অর্শদীপ সিংহ। প্রথম ওভারেই ফিল সল্টের উইকেট নেন তিনি। সল্টের দুর্বলতা ধরে ফেলেছেন অর্শদীপ। বাউন্সারের বিরুদ্ধে শুরুতে খেলতে সমস্যা হয় সল্টের। চেন্নাইয়েও সেটাই দেখা গেল। ৪ রান করে পুল মারতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এলেন সল্ট। ৩ রানে ফিরলেন অপর ওপেনার বেন ডাকেটও।
ইনিংস টানলেন সেই বাটলার
আরও এক বার নিজের জাত চেনালেন জস বাটলার। ইংল্যান্ডের অধিনায়ককে দেখে মনে হয়, অন্য পিচে খেলছেন তিনি। যেখানে বাকিরা ব্যাটে-বলে করতে সমস্যায় পড়ছিলেন, সেখানে বাটলার সহজেই বড় শট খেলছিলেন। শুরুর ধাক্কা সামলে ইংল্যান্ডের ভিত গড়ে দেন বাটলার। উইকেট পড়লেও দলের রান তোলার গতি কমেনি। সেই কারণে ১৬৫ রান তুলতে পারে ইংল্যান্ড। ৪৫ রানের মাথায় অক্ষর পটেলের বলে বড় শট মারতে গিয়ে ফেরেন বাটলার। তিনি আউট হওয়ায় বড় ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড।
আবার ব্যর্থ ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার
ইডেনে ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার রান করতে পারেনি। চেন্নাইয়েও পারল না। হ্যারি ব্রুক, লিয়াম লিভিংস্টোন দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যর্থ। এই ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন জেমি স্মিথ। তিনি কয়েকটি বড় শট মারলেও বেশি রান করতে পারেননি। মিডল অর্ডার রান করতে না পারায় চাপে পড়ে ইংল্যান্ড।
চেন্নাইয়েও দাপট ভারতের স্পিনারদের
ইডেনের পরে চেন্নাইয়েও ভারতের স্পিনারেরা দাপট দেখান। বরুণ চক্রবর্তী, অক্ষর পটেল, রবি বিশ্নোই ও ওয়াশিংটন সুন্দরের বিরুদ্ধে বড় শট খেলতে সমস্যা হচ্ছিল ইংরেজ ব্যাটারদের। ভারতের স্পিনারেরা মোট ১৪ ওভার বল করেন। ১১৮ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন তাঁরা। পেসারেরা ৬ ওভারে দেন ৪৬ রান। স্পিনারেরা খেলায় রাখেন ভারতকে।
কার্সের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস
এই ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন ব্রাইডন কার্স। ১৭ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। কার্স না থাকলে ১৫০ রান পার করতে সমস্যা হত ইংল্যান্ডের। কিন্তু তিনি দলের রান ১৬৫ পর্যন্ত নিয়ে যান। ইংল্যান্ডের বোলারদের লড়াই করার রান দেন তিনি।
ব্যর্থ ভারতের ওপেনিং জুটি
ইডেনে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেললেও এই ম্যাচে ব্যর্থ অভিষেক শর্মা। ১২ রান করে আউট হন তিনি। আর এক ওপেনার সঞ্জু স্যামসন করেন ৫ রান। ফলে শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। রান তাড়া করতে নেমে চাপে পড়ে তারা।
রান নেই সূর্যকুমারের ব্যাটে
ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমারের ব্যাটে রান নেই। ইডেনে শূন্য রানে ফিরেছিলেন। চেন্নাইয়ে ১২ রান করলেন। কার্সের ব্যাক অফ লেংথের বলে বোল্ড হলেন। বল তাঁর ব্যাটে লাগার পরে উইকেটে লাগে। ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে সূর্যের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি রান না পাওয়ায় আরও চাপে পড়ে ভারত।
লেংথ বদলে সফল ইংল্যান্ডের পেসারেরা
ইডেনে ইংল্যান্ডের বোলারেরা যে গতিতে বল করেছিলেন, চেন্নাইয়েও তাই করলেন। তফাত গড়ে দিল লেংথ। ইডেনে অনেক বেশি ফুল লেংথে বল করেছিলেন তাঁরা। ফলে শট মারতে সুবিধা হয়েছিল। কিন্তু চেন্নাইয়ে ৮ মিটার লেংথে বেশি বল হল। ফলে হাত খুলে খেলতে সমস্যা হল ভারতীয় ব্যাটারদের। হার্দিক পাণ্ড্য, ধ্রুব জুরেলরা যে ভাবে আউট হলেন তা থেকেই সেটা পরিষ্কার। এমনকি ফর্মে থাকা ওয়াশিংটন সুন্দরও লেংথের ফাঁদে পা দিয়ে আউট হলেন।
ক্যাচ ফস্কে ম্যাচ ফস্কালেন রশিদ
৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। সেই সময় আর একটি উইকেট পড়লে সমস্যা আরও বাড়ত। সেই সময় মার্ক উডের বলে ওয়াশিংটন সুন্দরের ক্যাচ ছাড়েন রশিদ। সেই ওভারে ১৮ রান নেন সুন্দর। ভারতের চাপ অনেকটা কমে যায়। ক্রিকেটে বলা হয়, ক্যাচ ছেড়ে ম্যাচ ছাড়া। সেই কাজটাই করলেন রশিদ।
তিলকের ম্যাচ জেতানো ব্যাটিং
দিন দিন আরও পরিণত হচ্ছেন তিলক বর্মা। দক্ষিণ আফ্রিকায় জোড়া শতরান করেছিলেন। চেন্নাইয়ে দেখালেন, কী ভাবে একার কাঁধে দলকে জেতাতে হয়। শুরুতে ইংরেজ পেসারদের গতি ব্যবহার করে একের পর এক বড় শট খেললেন। ৩৬০ ডিগ্রি শট খেললেন তিনি। আবার যখন মাঝের ওভারে পর পর উইকেট পড়ছে তখন ধরে খেললেন। সুন্দরকে হাত খুলতে দিলেন। সুন্দর ও অক্ষর আউট হওয়ার পর পুরো চাপটাই ছিল তিলকের কাঁধে। চাপের মধ্যে কী ভাবে ঠান্ডা মাথায় খেলা যায় দেখালেন তিনি। সিঙ্গল নেওয়ার কোনও সুযোগ তিলকের ছিল না। দায়িত্ব নিয়ে খেললেন তিলক। চার বল বাকি থাকতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি। ৫৫ বলে ৭২ রানে অপরাজিত থাকলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy