আইপিএলের দিকে তাকিয়ে থাকেন বিশ্বের প্রায় সব ক্রিকেটারই। ছবি: টুইটার।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ কি ক্রমশ শুষে নিচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বকে? এই প্রশ্ন ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। অর্থের পিছনে ক্রিকেটারদের ছোটা বন্ধ না হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ সঙ্কটে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আইপিএলের একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টি-টোয়েন্টি লিগে দল কিনেছে। তার পর নতুন আশঙ্কায় ক্রিকেট বিশ্ব। প্রাক্তন ক্রিকেটারদের একাংশ মনে করছেন আইপিএলের টাকা যে ভাবে ক্রিকেটারদের আকর্ষণ করছে, তাতে আগামী দিনে সঙ্কটে পড়তে পারে টেস্ট ক্রিকেটও। কারণ টাকার জন্য ক্রিকেটারদের একাংশ দেশের বোর্ডের সঙ্গেও চুক্তিতে রাজি হচ্ছেন না। দেশের প্রতিনিধিত্ব করার থেকেও টি-টোয়েন্টি লিগ খেলে উপার্জনকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। অর্থাৎ, চিরাচরিত ক্রিকেটের সঙ্গে ক্রিকেটারদের দূরত্ব তৈরি করছে অর্থ।
পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে ক্রিকেটারদের খুব বেশি দোষ দিতে চাইছেন না অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, বিশ্বের সমস্ত পেশাদারই শ্রম এবং দক্ষতার বিনিময়ে যত বেশি সম্ভব অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করেন। ক্রিকেটাররা ব্যতিক্রম হবেন কেন? তা ছাড়া খেলোয়াড়দের খেলোয়াড় জীবন তুলনায় অনেক ছোট। স্পনসররাও টি-টোয়েন্টি লিগগুলো নিয়ে বেশি আগ্রহী। তাদের এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের চাপে প্রভাবিত হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটের সূচিও। বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, ক্রিকেটের এই বিপুল অর্থই অনর্থের মূল হতে পারে। টি-টোয়েন্টি লিগগুলোয় সুযোগ পেতে বোলাররাও যে ভাবে আরও ভাল ব্যাটার হওয়ার চেষ্টা করছেন, তাতে বিঘ্নিত হচ্ছে ক্রিকেটের ভারসাম্যও। অর্থের প্রতি আসক্তি যে এক জন ভদ্র এবং দুর্দান্ত ক্রিকেটারকেও খারাপ দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে, তার উদাহরণ হিসাবে পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক সলমন বাটের উদাহরণ দিচ্ছেন তাঁরা।
দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আমিরশাহির টি-টোয়েন্টি লিগে আইপিএলের একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি বিনিয়োগ করায় পরিস্থিতি কি আরও খারাপ হবে? কারণ তাদের চাপে এই নতুন দুই প্রতিযোগিতাও হতে চলেছে প্রায় আইপিএলের ধাঁচে। ক্রিকেটার নিলাম, প্রথম একাদশে চার বিদেশি বা স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউট— সব কিছুই থাকছে এই প্রতিযোগতাগুলিতে। পাশাপাশি ভারতের বিজ্ঞাপনের বাজারের কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে দু’দেশের ক্রিকেট কর্তাদের। ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং স্পনসরদের চাপে দুই প্রতিযোগিতার ম্যাচগুলি করা হবে ভারতীয় সময় অনুযায়ী।
অর্থ লোভের প্রসঙ্গেই উঠে আসছে বাংলাদেশের অধিনায়ক শাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গও। কিছু দিন আগেই একটি জুয়া সংস্থার সংবাদ পোর্টালের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করেন শাকিব। পরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কড়া বার্তা পেয়ে সেই চুক্তি ভাঙেন। তার আগেও ক্রিকেট জুয়াড়ির ফোন পাওয়ার কথা গোপন করে এক বছর নির্বাসিত হয়েছিলেন তিনি।
বাট, শাকিবদের মতো ক্রিকেটাররা অর্থের পিছনে ছুটে নিজেদের কলঙ্কিত করছেন। আবার জিমি নিশাম, ট্রেন্ট বোল্ট, সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেলদের মতো ক্রিকেটাররা তাঁদের দেশের বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকতে চাইছেন না। অ্যারন ফিঞ্চ, বেন স্টোকসরা এক দিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিচ্ছেন। সব মিলিয়ে ক্রিকেটের ঐতিহ্য, ইতিহাস সব কিছুকেই যেন গিলে খাচ্ছে আধুনিক টি-টোয়েন্টি লিগের অর্থ বল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy