সুনীল গাওস্কর। —ফাইল চিত্র।
ইয়ো-ইয়ো টেস্ট পাশ না করলে ভারতীয় দলে জায়গা পাওয়া যায় না। সেই পরীক্ষাই তুলে দিতে চান সুনীল গাওস্কর। তাঁর মতে এই পরীক্ষার কোনও প্রয়োজন নেই। সরফরাজ় খান এবং ঋষভ পন্থের সাফল্যের পর এই দাবি গাওস্করের।
বেঙ্গালুরু টেস্টে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে ছিলেন সরফরাজ় এবং পন্থ। সরফরাজ় করেন ১৫০ রান। পন্থ করেন ৯৯। তাঁদের ব্যাটে ভর করেই নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইনিংসে হারের লজ্জা থেকে বাঁচে ভারত। যদিও শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে হারতে হয়। এক সংবাদমাধ্যমে গাওস্কর লেখেন, “সরফরাজ় এবং পন্থের সরু কোমর নেই। কিন্তু কী অসাধারণ ক্রিকেটার। মনে রাখতে হবে পন্থ একজন উইকেটরক্ষক। সারা দিন ওঠ-বস করতে হয়। সেই সঙ্গে স্টাম্পে দৌড়ে যেতে হয়, বল ধরতে হয়। তাই ইয়ো-ইয়ো টেস্ট বাদ দিয়ে দেখা উচিত মানসিক ভাবে একজন ক্রিকেটার খেলার জন্য তৈরি কি না। সেটাই একজন ক্রিকেটারের সুস্থ থাকার সেরা মাপকাঠি। একজন ক্রিকেটার যদি সারা দিন ব্যাট করতে পারে বা ২০ ওভার বল করতে পারে, তা হলেই সে ম্যাচ ফিট। সে তার কোমর রোগা হোক বা মোটা।”
২০১৭ সালে ভারতীয় দলে চালু হয় ইয়ো-ইয়ো টেস্ট। সেই সময় কোচ ছিলেন রবি শাস্ত্রী। সেই পরীক্ষা করে এখনও নেওয়া হয়। পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে সেই ক্রিকেটারকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয় বা দলে নেওয়াই হয় না।
ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার কারণে যুবরাজ সিংহ, অম্বাতি রায়ডু, মহম্মদ শামির মতো ক্রিকেটারকেও অনেক সময় দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছে। সঞ্জু স্যামসন পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় ভারত এ দল থেকে বাদ পড়েছিলেন।
এই টেস্ট সাধারণত ক্রিকেটারদের গতি ও তাঁদের দমের পরীক্ষা নেয়। ২০ মিটার দূরত্বের (ক্রিকেট পিচের দৈর্ঘ্য) মধ্যে ক্রিকেটারদের ছুটতে হয়। এক বার ২০ মিটার গিয়ে আবার ২০ মিটার ফিরে আসতে হয়। দৌড় শেষ করার একটি সর্বাধিক সময় রয়েছে। অনেকগুলি পর্যায়ে এই টেস্ট হয়। পর্যায় যত বাড়ে, তত দৌড় শেষ করার সময় কমে। ক্রিকেটারেরা যতগুলি পর্যায় শেষ করতে পারেন তার উপর ভিত্তি করে তাঁদের নম্বর দেওয়া হয়। ভারতীয় দলে সুযোগ পেতে হলে ক্রিকেটারদের অন্তত ১৬.২ পেতেই হয়।
গত বছর বিশ্বকাপের আগে ইয়ো-ইয়ো টেস্টের ফল জানিয়ে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। তিনি ১৭.২ স্কোর করেছিলেন। যা নিজেই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। যদিও ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষার ফল বাইরে জানানোর নিয়ম নেই। যে কারণে বিরাট পোস্টটি মুছে দিয়েছিলেন।
ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ফুটবলে। বিভিন্ন দেশ এই পরীক্ষার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের ফিটনেস পরীক্ষা করে। এখন ফুটবল, ক্রিকেট ছাড়াও বিভিন্ন খেলায় এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে ভারতীয় ক্রিকেট দল এই পরীক্ষার ফলের উপর ভিত্তি করে দল নির্বাচন করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, নিউ জ়িল্যান্ডের মতো দেশেও ক্রিকেটারদের ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে সব দেশের পরীক্ষায় পাশ করার নম্বর আলাদা। ভারতে এই পরীক্ষায় পাশ করতে হলে ১৬.২ স্কোর করতে হয়। সেখানে নিউ জ়িল্যান্ডে পাশ করার জন্য চাই ২০.১। পাকিস্তানে পাশ করার জন্য ক্রিকেটারদের ১৯ স্কোর করতে হয়।
ভারতের হকি খেলোয়াড় হার্দিক সিংহের মতে বিরাট-সহ ভারতীয় দলের ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষার ফল এমন কিছু আহামরি নয়। তিনি বলেন, “ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষায় কোনও ক্রিকেটার ১৯ বা ২০ নম্বর পেলে যথেষ্ট ভাল বলা হয়। ভারতীয় ক্রিকেট দলে সবচেয়ে ফিট খেলোয়াড়ের নম্বরই এমন থাকে। আর আমাদের গোলরক্ষক পিআর শ্রীজেশের শেষ বার নম্বর ছিল ২১। কোহলির ফিটনেসের মান মেয়েদের জুনিয়র হকি দলের খেলোয়াড়দের মতো। ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষাকে আন্তর্জাতিক স্তরে মান্যতা দেওয়া হয় সব খেলাতেই। আমাদের দলের খেলোয়াড়দের ফিটনেসের মান অনেক ভাল। সম্ভবত দেশের মধ্যে সেরা। আমাদের সব থেকে ফিট খেলোয়াড় ইয়ো-ইয়ো টেস্টে ২৩.৮ নম্বর পেয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy