রোহিত শর্মা। — ফাইল চিত্র।
আইপিএল শুরুর আগে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন শ্রেয়স আয়ার। অথচ কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ককে নিয়েই বড় পরিকল্পনা রয়েছে বিসিসিআইয়ের। ভারতীয় দলের প্রাক্তন প্রধান নির্বাচক এমএসকে প্রসাদ সেই পরিকল্পনা ফাঁস করে দিয়েছেন।
বিরাট কোহলি ভারতীয় দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। এখন দায়িত্ব সামলাচ্ছেন রোহিত শর্মা। তাঁর পর কে ভারতকে নেতৃত্ব দেবেন, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। যশপ্রীত বুমরা, শুভমন গিল, হার্দিক পাণ্ড্যদের নিয়ে আলোচনা চলছে। পরবর্তী অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন একাধিক ক্রিকেটার। তবে তাঁদের কাউকেই নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়নি। বরং শাস্তি পাওয়া শ্রেয়সকেই ভবিষ্যতের নেতা হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব সামলেছেন প্রসাদ। তিনি বলেছেন, ‘‘অনেক আগে থেকেই শ্রেয়সকে পরবর্তী অধিনায়ক হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। ভারত ‘এ’ দলের অধিনায়ক থাকার সময়ই শ্রেয়সের নেতৃত্ব দেওয়ার সহজাত দক্ষতা নজর কেড়েছিল।’’ কেন শ্রেয়সকে বেছে নেওয়া হয়েছিল? প্রসাদ বলেছেন, ‘‘গত দু’বছরের আগের সময়ের দিকে তাকালেই বিষয়টা বোঝা যাবে। সে সময় ভারত ‘এ’ দলকে প্রধানত শ্রেয়স নেতৃত্ব দিত। ওই সময় ভারত ‘এ’ দল সম্ভবত ১০টা সিরিজ় খেলেছিল। তার মধ্যে আটটা জিতেছিল। অধিকাংশ সিরিজ়েই অধিনায়ক ছিল শ্রেয়স। তখন ‘এ’ দলের অধিনায়ক হিসাবে শ্রেয়সই প্রথম পছন্দ ছিল। ওকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল তখন থেকেই।’’ প্রসাদ জানিয়েছেন, কোহলি-রোহিত পরবর্তী সময় ভারতীয় দলের সব ধরনের ক্রিকেটের অধিনায়ক হিসাবে শ্রেয়সকেই যোগ্যতম বলে মনে করেছিলেন বিসিসিআই কর্তারাও।
শ্রেয়সের সঙ্গে বিসিসিআইয়ের ভাবনায় ছিলেন আরও এক ক্রিকেটার। তিনি ঋষভ পন্থ। প্রসাদ বলেছেন, ‘‘শ্রেয়স এবং পন্থের মধ্যে মূল প্রতিযোগিতা ছিল। দু’জনের মধ্যেই অধিনায়ক হওয়ার গুণ রয়েছে। তবে পন্থের থেকে শ্রেয়স কিছুটা এগিয়ে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘কেকেআরকেই প্রথম নেতৃত্ব দিচ্ছে না শ্রেয়স। ২০১৮ সালে ওকে অধিনায়ক করেছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। গৌতম গম্ভীরের পর শ্রেয়সকে তখনই অধিনায়ক হিসাবে বেছে নিয়েছিল দিল্লি।’’
প্রথম বছর আইপিএলে অধিনায়ক হিসাবে তেমন সাফল্য পাননি শ্রেয়স। ২০২১ সালের তাঁর নেতৃত্বেই দিল্লি প্লে-অফে উঠেছিল। পয়েন্ট তালিকায় এগোতে এগোতে এক সময় শীর্ষে উঠে এসেছিল। প্রসাদ মতে কোচ, সাপোর্ট স্টাফ-সহ যুক্ত সকলে পাশে না থাকলে এখন ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসাবে সফল হওয়া কঠিন। প্রাক্তন প্রধান নির্বাচক বলেছেন, ‘‘শ্রেয়স ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে। ক্রমশ ভাল অধিনায়ক হয়ে উঠছে। অধিনায়ক হিসাবে শুরুতে ভাল দল না পেলে একটু সমস্যা হয়। যেটা শ্রেয়স কেকেআরে গিয়ে পেয়েছে। দল মানে শুধু ক্রিকেটারেরা নয়, যুক্ত সকলেই। শ্রেয়সের বয়স বেশি নয়। কলকাতা ওর উপর বিনিয়োগ করে ঠিক করেছে। দু’তিন বছর পর শ্রেয়স এক জন দুর্দান্ত অধিনায়ক হয়ে উঠবে।’’ বোর্ডের সেই ভাবনার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি বলে মনে করেন প্রসাদ। কারণ, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তৈরি করা শ্রেয়সকে হঠাৎ বাদ দেওয়া কঠিন বলেই তাঁর ধারণা।
চোট সারিয়ে ফিরে গত এক দিনের বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের মিডল অর্ডারকে ভরসা দিয়েছিলেন শ্রেয়স। তার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রান পাচ্ছিলেন না। বিশেষ করে লাল বলের ক্রিকেটে শ্রেয়সকে চেনা ফর্মে পাওয়া যাচ্ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর বিসিসিআই তাঁকে রঞ্জি ট্রফি খেলতে বললে প্রথমে কথা শোনেননি শ্রেয়স। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে তাঁকে বাদ দিয়েছে বোর্ড। যদিও ভারতীয় দলের পরবর্তী পূর্ণ অধিনায়ক হিসাবে এখনও এগিয়ে রয়েছেন শ্রেয়স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy