অপেক্ষা আর বছর পাঁচেকের। নতুন ইনিংস শুরুর অপেক্ষায় ক্রিকেট। আগামী এক দিনের বিশ্বকাপের মাঝেই আসতে পারে সুখবর। ২০২৮ সালের অলিম্পিক্সের ক্রীড়া তালিকায় ক্রিকেটের জায়গা পাওয়া কার্যত নিশ্চিত।
আগামী ১৫ এবং ১৬ অক্টোবর মুম্বইয়ে হবে ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) বিশেষ সভা। ২০২৮ সালের গেমসে কোন কোন খেলা অন্তর্ভুক্ত হবে, তা ওই সভায় ভোটাভুটির মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে ১০০টির বেশি সদস্য দেশ। অর্থাৎ, এক দিনের বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ঠিক পরেই নতুন পালক যোগ হতে পারে ক্রিকেটের মুকুটে। আইওসি সভাপতি থমাস বাখের নেতৃত্বে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর সুইৎজারল্যান্ডের লুসানে আইওসির এক্সিকিউটিভ বোর্ডের বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে নতুন খেলাগুলির প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত হবে। তাতেও ক্রিকেটের থাকা এক রকম নিশ্চিত। ক্রিকেটের লড়াই ফ্ল্যাগ ফুটবল, ক্যারাটে, কিকবক্সিং, বেসবল-সফটবল, ল্যাক্রশ, স্কোয়াশ, মোটর স্পোর্টস এবং ব্রেক ডান্সের সঙ্গে। আইওসির প্রাক্তন মার্কেটিং এবং ব্রডকাস্টিং ডিরেক্টর মাইকেল পাইন বলেছেন, ‘‘পছন্দের নিরিখে বাকি খেলাগুলোর থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ক্রিকেট। অধিকাংশ দেশেরই ক্রিকেট নিয়ে আপত্তি নেই।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমেরিকায় ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে ক্রিকেট। মেজর লিগ ক্রিকেট নিয়েও উৎসাহ তৈরি হয়েছে। ২০৩২ সালের অলিম্পিক্স হবে অস্ট্রেলিয়ায়। ক্রিকেট সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ খেলা। তাই সমর্থন পেতে ক্রিকেটের কোনও সমস্যা হবে না।’’
সূত্রের খবর, ক্রিকেট নিয়ে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার আগ্রহ অগ্রাহ্য করতে পারছেন না আইওসি কর্তারা। যতগুলি খেলা অলিম্পিক্সে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দৌড়ে রয়েছে সেগুলির মধ্যে ব্যবসায়িক ভাবে ক্রিকেটই সব থেকে সফল। অলিম্পিক্সের মতো ব্যয়বহুল গেমসে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তি ইতিবাচক হবে বলেই মনে করছেন আইওসির অধিকাংশ কর্তা। তা ছাড়া ক্রিকেট থাকবে ধরে নিয়ে ভারতীয় সংস্থাগুলি এখন থেকেই অলিম্পিক্সে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। যেমন ‘ভায়াকম ১৮’ ৩১ মিলিয়ন ডলার (২৫৬ কোটি টাকারও বেশি) খরচ করে ২০২৪ সালের প্যারিস এবং ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সের সম্প্রচার স্বত্ব কিনেছে। ক্রিকেট না থাকলে ভারতীয় সংস্থাগুলি উৎসাহ হারাতে পারে অলিম্পিক্স নিয়ে। পাইন বলেছেন, ‘‘দক্ষিণ এশিয়ায় অলিম্পিক্স খুব বেশি জনপ্রিয় নয়। ভারত, পাকিস্তানে ক্রিকেট সব থেকে জনপ্রিয় খেলা। ক্রিকেট থাকলে দক্ষিণ এশিয়ার লোকজনও অলিম্পিক্স নিয়ে আগ্রহী হবেন।’’ আইওসি কর্তাদের লক্ষ্য আসলে ভারতের জন সংখ্যা এবং বাজার। এই বাজার ধরার বড় হাতিয়ার যে ক্রিকেট, তা তাঁদের অজানা নয়। পাশাপাশি ২০৩৬ সালের অলিম্পিক্স আয়োজনের প্রাথমিক ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে ভারত। তাই ক্রিকেটকে আর দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছেন না আইওসি কর্তারা।
আরও পড়ুন:
১৯০০ সালের অলিম্পিক্সে ক্রিকেট হয়েছিল। অংশ নিয়েছিল শুধু ব্রিটেন এবং ফ্রান্স। আর কখনও ক্রিকেট হয়নি অলিম্পিক্সে। লস অ্যাঞ্জেলসে হলে অলিম্পিক্সে ক্রিকেট ফিরবে ১২৪ বছর পর।