রিকি পন্টিং। —ফাইল চিত্র।
দিল্লি ক্যাপিটালসের দায়িত্ব ছেড়ে পঞ্জাব কিংসের কোচ হয়েছেন রিকি পন্টিং। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক কেন দিল্লির সঙ্গে সাত বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করলেন? ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশের মধ্যে এই প্রশ্ন রয়েছে। দিল্লি ছাড়ার কারণ নিজেই জানিয়েছেন পন্টিং।
এই নিয়ে গত চার মরসুমে তিন বার প্রধান কোচ পরিবর্তন করলেন পঞ্জাব কর্তৃপক্ষ। বার বার কোচ বদলেও সাফল্যের মুখ দেখেনি পঞ্জাব। তবু কেন দিল্লির দায়িত্ব ছেড়ে এমন দলের দায়িত্ব নিলেন? পন্টিং বলেছেন, ‘‘দিল্লির সঙ্গে বেশ কয়েক বছর যুক্ত ছিলাম। ওদের সঙ্গে একটা পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বুঝতে পারতাম, ওরা কী চায়। কিন্তু সময় সমস্যা হয়ে যাচ্ছিল। দিল্লি আমাকে আরও বেশি সময়ের জন্য চাইছিল। সারা বছর কোচ হিসাবে কাজ করার জন্য বলেছিল ওরা। কিন্তু আমার আরও কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। সারা বছর দিল্লির সঙ্গে থাকা সম্ভব নয়। হতাশ লাগলেও দিল্লির দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। ওরা একটা নির্দিষ্ট ভাবে এগোতে চাইছে। সেটার সঙ্গে আমার সূচি মিলল না।’’
পন্টিংয়ের দাবি অনুযায়ী, দিল্লির চাহিদা অভিনব। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি সাধারণত সারা বছরের জন্য কোচ নিয়োগ করে না। প্রতিযোগিতা শুরুর কিছু দিন আগে প্রস্তুতি শিবিরে যোগ দেন কোচেরা। প্রতিযোগিতার শেষ পর্যন্ত তাঁরা দলের সঙ্গে থাকেন। ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির অ্যাকাডেমিতে সারা বছরের বাকি দায়িত্ব সামলান সাধারণত ভারতীয় সহকারী কোচেরা। প্রয়োজনে তাঁরা প্রধান কোচের পরামর্শ নেন। তাই পুরো সময়ের জন্য পন্টিংকে দিল্লির চাওয়া কিছুটা বিস্ময়করও।
পরিবারকে পর্যাপ্ত সময় দিতে চান পন্টিং। কাজ করতে চান ধারাভাষ্যকার হিসাবেও। দিল্লির সঙ্গে থাকলে, সেই সুযোগগুলি পেতেন না। বিচ্ছেদ হলেও দিল্লি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির হয়ে কাজের অভিজ্ঞতায় খুশি পন্টিং। তিনি বলেছেন, ‘‘দিল্লি ফ্র্যাঞ্চাইজ়িতে বেশ ভাল সময় কাটিয়েছি। সকলের সঙ্গে আমার সম্পর্কও ভাল। জানি, ওদের সঙ্গে আর কাজ করব না জেনে বহু মানুষ হতাশ হয়েছেন। সমাজমাধ্যমে আমাকে অনেকে নিজেদের হতাশার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু এ ছাড়া উপায় ছিল না।’’
আইপিএলে কাজ করার অভিজ্ঞতা দিয়ে এ বার পঞ্জাবকে সাহায্য করতে চান পন্টিং। জানেন নতুন দায়িত্বের চাপ থাকবে। তিনি বলেছেন, ‘‘কোচ হিসাবে ট্রফি জেতার চাপ থাকবেই। সে জন্যই তো দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই চাপ আমি উপভোগ করি। এটা অনেকটা আমার খেলোয়াড় জীবনের মতো। খেলোয়াড় জীবনের বিকল্প হয় না। তবে কোচ হিসাবে কোনও ক্রিকেট দলের সাজঘরে থাকতে পারার অভিজ্ঞতাও ভাল। মনে হয় যেন নিজেই খেলছি। অনুভূতিটা অনেকটা কাছাকাছি। দুই ভূমিকাতেই আমার লক্ষ্য একই। প্রতিপক্ষকে সব সময় হারাতে চাই।’’
আইপিএল এবং ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী পন্টিং। বলেছেন, ‘‘এখন বেশ কয়েক জন ভাল ক্রিকেট কোচ রয়েছে। সেরা কোচ এবং সেরা খেলোয়াড়েরা একসঙ্গে কাজ করলে উচ্চ মানের ক্রিকেট প্রত্যাশিত। আইপিএল ঠিক তেমনই একটা প্রতিযোগিতা। ভারতীয় ক্রিকেটের মান ভাল বলেই আইপিএল এই পর্যায় এসেছে। বছরের দু’-তিন মাস সেরা কোচেদের কাছে শেখার সুযোগ পেলেও ক্রিকেটারেরা নিজেদের উন্নতি করার সুযোগ পায়।’’
দিল্লিকে প্রত্যাশিত সাফল্য দিতে পারেননি কোচ হিসাবে। তার একাধিক কারণও জানিয়েছেন তিনি। নিলামে পরিকল্পনা মতো ক্রিকেটার নিতে না পারা, ঋষভ পন্থের চোটের মতো বিষয়গুলি তাঁর পরিকল্পনায় ধাক্কা দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন পন্টিং।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy