Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ICC ODI World Cup 2023

রবিবার বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত-অস্ট্রেলিয়া, ইডেনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে আমদাবাদের পথে অসিরা

আগামী রবিবার খেতাবের লড়াইয়ে রোহিত শর্মাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। বৃহস্পতিবার ইডেনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে অষ্টম বার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেন কামিন্সেরা।

picture of ICC ODI world cup

বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া। ছবি: আইসিসি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ২২:১০
Share: Save:

দক্ষিণ আফ্রিকা ২১২ (৪৯.৪ ওভারে)
অস্ট্রেলিয়া ২১৫/৭ (৪৭.২ ওভারে)

বড় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘চোকার্স’। বৃহস্পতিবারের ইডেনে কথাটা আরও এক বার সত্যি হল। ‘চোকার্স’ তকমা মুছে ফেলতে পারল না টেম্বা বাভুমার দল। বিশ্বকাপের শুরু থেকে দারুণ ফর্মে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে চেনা গেল না সেমিফাইনালের অর্ধেক সময়। ৩ উইকেটে জিতে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের সামনে অস্ট্রেলিয়া। তবে যতটা সহজে অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনাল জিতবে বলে মনে করা হচ্ছিল ম্যাচের প্রথমার্ধে, ততটা সহজ হল না পাঁচ বারের বিশ্বজয়ীদের জয়। ইডেন গার্ডেন্সের মন্থর হয়ে যাওয়া উইকেটে যথেষ্ট খেটে জিততে হল তাদের। পাঁচ বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে পাঁচ বারই হারল দক্ষিণ আফ্রিকা।

আকাশে মেঘ থাকলেও টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেন বাভুমা। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের ফসল ঘরে তুলতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। ২১২ রানেই শেষ হয়ে গেল তাদের ইনিংস। ডেভিড মিলার ১০১ রানের লড়াকু ইনিংস না খেলতে পারলে এবং হেনরিক ক্লাসেন ৪৭ রান না করলে বড় লজ্জায় পড়তে হত দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দলের ইনিংসের ধস শুরু বাভুমাকে (শূন্য) দিয়েই। অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছেন কুইন্টন ডি’কক। গোটা প্রতিযোগিতায় দারুণ ফর্মে ছিলেন তিনি। সেমিফাইনালে ডি’ককও (৪) পারলেন না। ব্যর্থ তিন নম্বরে নামা ভ্যান ডার ডুসেনও (৬)। ভরসা দিতে পারলেন না এডেন মার্করামও (১০)। জস হ্যাজলউডদের দাপটে ১১.৫ ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের এই রান বিশ্বকাপের ইতিহাসে এত খারাপ ভাবে কখনও ইনিংস শুরু করেনি তারা। ১০ ওভারে রান ছিল ১৮/২। যা শেষ চারটি বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লেতে যুগ্ম দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ও ১০ ওভারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল। আর ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথম ১০ ওভারে পাকিস্তান ১৪ রানে ২ উইকেট হারিয়েছিল জ়িম্বাবোয়ের পর।

২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের হাল ধরেন হেনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে তাঁরা দু’জনে তোলেন ৯৫ রান। সামান্য বৃষ্টির পর আকাশ পরিষ্কার হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি ফেরে দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে। এই জুটিতেই অক্সিজেন পায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ৪৮ বলে ৪৭ রান করলেন ক্লাসেন। মারলেন ৪টি চার এবং ২টি ছয়। তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং-ই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তবে দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেয় মিলারের দায়িত্বশীল শতরানের ইনিংস। ১১৬ বলে ১০১ রান করলেন ৮টি চার এবং ৫টি ছয়ের মাধ্যমে। তাঁর ব্যাটে ভর করেই ২০০ রানের গণ্ডি পার করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাঁদের পরের কোনও ব্যাটারও বলার মতো রান পেলেন না। তাই দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসও বেশি দূর এগোল না। অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার মিচেল স্টার্ক ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিলেন। তবে কৃপণতম ছিলেন হ্যাজলউড। তিনি ১২ রানে ২ উইকেট নিলেন। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ৩ উইকেট নিলেন ৫১ রান খরচ করে। ২১ রানে ২ উইকেট নিলেন ট্র্যাভিড হেডও।

এক দিনের ক্রিকেটে ২১৩ রানের লক্ষ্য তেমন বড় নয়। ছোটই বলা চলে। তবু ইডেনের ২২ গজে সেই রান খুব সহজে তুলতে পারল না অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার অবশ্য ইনিংস শুরু করেন আগ্রাসী মেজাজে। ৪৮ বলে ৯টি চার এবং ২টি ছয়ের সাহায্যে ৬২ রান করলেন হেড। ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে এল ১৮ বলে ২৯ রানের ইনিংস। ১টি চার এবং ৪টি ছয় মারলেন তিনি। মার্করাম এবং কেশব মহারাজ দুই ওপেনারকে পর দু’ওভারে আউট করতেই চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেই চাপ সঙ্গী হল পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের গোটা ইনিংসে। তিন নম্বরে নেমে ব্যর্থ হলেন মিচেল মার্শ (শূন্য)। দলকে তেমন ভরসা দিতে পারলেন না স্টিভ স্মিথ (৬২ বলে ৩০), মার্নাস লাবুশেন (৩১ বলে ১৮), গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরা (১)। শেষ দিকে লড়াই করলেন জশ ইংলিস। তাঁকে সঙ্গ দিলেন স্টার্ক। জেরাল্ড কোয়েৎজের বলে আউট হওয়ার আগে ইংলিস করলেন ৪৯ বলে ২৮ রান। তিনি আউট হওয়ায় ১৯৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় অসিরা।

ইংলিস আউট হওয়ার পর স্টার্কের সঙ্গে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে গেলেন অধিনায়ক কামিন্স। কয়েক বার বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হলেও ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। স্টার্ক এবং কামিন্স অস্ট্রেলিয়াকে অষ্টম বারের জন্য বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলে দিলেন। শেষ পর্যন্ত স্টার্ক অপরাজিত থাকলেন ৩৮ বলে ১৬ রান করে। কামিন্সের ব্যাট থেকে এল ২৯ বলে অপরাজিত ১৪ রানের ইনিংস।

দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারেরা ইডেনের মন্থর উইকেটের সুবিধা যথাসাধ্য কাজে লাগিয়েও দলকে জেতাতে পারলেন না। অসি ব্যাটারদের বার বার সমস্যায় ফেলেও লাভ হল না। সেমিফাইনালে প্রত্যাশিত মানের হল না দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডিংয়ও। বেশ কয়েকটি ক্যাচ ফেললেন বাভুমারা। তার মধ্যে একাই দুই ফেললেন উইকেটরক্ষক ডি’কক। দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম বোলার তাবারেজ শামসি ৪২ রানে ২ উইকেট নিলেন। ৪৭ রানে ২ উইকেট কোয়েৎজের।১টি করে উইকেট নিলেন কেশব মহারাজ, কাগিসো রাবাডা এবং মার্করাম।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE