Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

স্টেডিয়ামে নিভৃতবাস, উঠোনেই প্রস্তুতি স্বপ্নার

লকডাউনের জন্য সল্টলেকের সাই-এর হস্টেল খালি করতে বলা হয়েছিল সব অ্যাথলিটকে।

হতাশ: জলপাইগুড়ির পাতাকাটার বাড়িতে স্বপ্না। নিজস্ব চিত্র

হতাশ: জলপাইগুড়ির পাতাকাটার বাড়িতে স্বপ্না। নিজস্ব চিত্র

রতন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ০৫:৫৩
Share: Save:

টোকিয়ো অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাওয়ায় জাতীয় দলে ঢোকার রাস্তা অনেকটাই খুলে গিয়েছে তাঁর সামনে। অলিম্পিক্সে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য যে যোগ্যতামান দরকার তা পূরণ করতে পারবেন, এই আশায় মাঠে নেমে এখনই অনুশীলন করতে মরিয়া তিনি। অথচ মাঠই তো নেই সোনার মেয়ে স্বপ্না বর্মনের।

লকডাউনের জন্য সল্টলেকের সাই-এর হস্টেল খালি করতে বলা হয়েছিল সব অ্যাথলিটকে। অন্যদের মতো তিনিও চলে গিয়েছেন জলপাইগুড়ির বাড়িতে। বাড়ির উঠোনই এখন নিজেকে তৈরি রাখার ট্র্যাক জাকার্তা এশিয়ান গেমসে হেপ্টাথলনের সোনা জয়ী মেয়ের। কারণ যেখানে অনুশীলন করে স্বপ্না তারকা হয়েছেন সেই জলপাইগুড়ি স্টে়ডিয়াম এখন করোনা আক্রান্ত রোগীদের নিভৃতবাস। স্বপ্না বলছিলেন, “করোনা থেকে মানুষকে সুস্থ করার জন্য স্টেডিয়াম নিয়ে নেওয়া হয়েছে। যা খুব জরুরি ছিল। এত মানুষ বিপদের সামনে। তাদের সুস্থ করে তোলাটা দরকার। কিন্তু আমার তো অনুশীলনের মাঠই নেই। ফলে কলকাতা থেকে আমার কোচ সুভাষ স্যর (সরকার) যা করতে বলছেন তাই করার চেষ্টা করছি। কিন্তু এতদিন সব বন্ধ থাকবে জানলে তো কিছু সরঞ্জাম নিয়ে আসতাম।’’

কোচের নির্দেশ কী ভাবে পালন করছেন? স্বপ্না বললেন, “বাড়ির উঠোনে জগিং করছি। অন্য শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর অনুশীলন করছি। পেশির শক্তি বাড়ানোর জন্য ডাম্বেল বা অন্য কোনও সরঞ্জাম নেই। তাই দাদার ছেলেকে দু’হাত দিয়ে তুলে উপর-নিচ করছি। এ ছাড়া আর কিছু করার নেই।’’ অলিম্পিক্সে যোগ্যতা পাওয়ার জন্য হেপ্টাথলনের সাতটি ইভেন্টে ৬২০০ পয়েন্ট নির্ধারিত করা হয়েছিল। চোট সারিয়ে সল্টলেক সাইতে দুমাস আগে স্বপ্না করেছিলেন ৬০০০-র কাছাকাছি। আশায় ছিলেন জুন মাসে জাতীয় ও আন্ত রাজ্য মিটে নেমে পেয়ে যাবেন যোগ্যতামান। কিন্তু করোনার জন্য পিছিয়ে গিয়েছে অলিম্পিক্স। জলপাইগুড়ির বাড়ি থেকে ফোনে স্বপ্না বলছিলেন, “ভালই হয়েছে। আরও কিছুটা সময় পাওয়া গেল অনুশীলনের। এখনই নেমে পড়তে চাই। কিন্তু বুঝতে পারছি না কী ভাবে

সেটা শুরু করব।’’

লকডাউনের চতুর্থ দফায় দর্শকশূন্য স্টেডিয়াম খোলার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাতিয়ালার জাতীয় শিবিরে ঘরবন্দি হয়ে থাকা আভা খাটুয়া, লিলি দাশেরা মাঠে নামার অনুমতি পেয়েছেন। সাই আভা-লিলিদের অনুশীলনের অনুমতি দিলেও দেশের বাকি সেন্টারে অ্যাথলিটদের মাঠে নামার অনুমতি দেয়নি। সূত্রের খবর, করোনার জন্য হস্টেলগুলো নিয়মিত স্যনিটাইজ় করা থেকে খাওয়া-দাওয়া সহ নানা বিষয়ে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক নানা বিধিনিষেধ দিয়েছে। ফলে সাই কর্তারা অ্যাথলিটদের স্বাস্থ্যের সঙ্গে কোনও আপস করতে নারাজ। তড়িঘড়ি কিছু করতে চাইছেন না তাঁরা। তাই এখনই স্বপ্নার মঠে নামা কঠিন। তাঁর কোচ সুভাষবাবু বলছিলেন, “ও তো এখানে আসার জন্য পাগল হয়ে উঠেছে। যে ভাবেই হোক চলে আসতে চাইছে। আমাকে ব্যবস্থা করতে বলছে। কিন্তু এখানে তো এখনও অনুশীলনের নির্দেশ আসেনি। তারপর সামাজিক দূরত্ব মেনে অনুশীলন করানোর নানা নিয়ম চালু হবে। তাই ওকে বলেছি, নিজেদের বাড়িতে অনুশীলন করে শরীরিকভাবে ফিট থাকো।’’

ঘোষপাড়া পাতাকাটার রাজবংশী পরিবারের মেয়ে স্বপ্না অবশ্য বললেন, “সময় চলে যাচ্ছে। এই অনুশীলনে কিছু হবে না। নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারটাও আছে। যা বাড়িতে করা যাচ্ছে না। হস্টেলে যদি না থাকতে দেয় তা হলে অন্য জায়গায় থেকেই অনুশীলন শুরু করত চাই। যে কোনও সময় প্রতিযোগিতার তারিখ ঘোষণা করে দেওয়া হবে। অলিম্পিক্সে এ বার আমাকে যেতেই হবে। ঠিক মতো অনুশীলন করতে পারলে যোগ্যতা আমি পাবই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Swapna Barman COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy