তৃপ্ত: ব্রোঞ্জ জিতে উল্লাস সেমার। শুক্রবার প্যারালিম্পিক্সে। ছবি: রয়টার্স।
সেটা ছিল ২০০২ সালের অক্টোবর মাসের এক সকাল। জম্মু ও কাশ্মীরের চৌকীবল জেলা হঠাৎ কেঁপে উঠেছিল সন্ত্রাসবাদীদের বোমা বিস্ফোরণে। সেই সময় দায়িত্বে ছিলেন এক তরুণ জওয়ান। স্বপ্ন ছিল স্পেশাল ফোর্সে যোগ দেওয়ার। কিন্তু একটা বিস্ফোরণে শেষ হয়ে গেল সেই সমস্ত স্বপ্ন।
জ্ঞান ফেরার পরে চিকিৎসকেরাই জানিয়েছিলেন, বাঁ পা হাঁটুর নীচ থেকে বাদ দিতে হয়েছে। এক দিকে ক্ষতের অসহ্য যন্ত্রণা, অন্য দিকে স্বপ্নভঙ্গের তীব্র মানসিক যাতনা। সকলে প্রায় আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু হার মানেননি হোকাতো হোতোঝে সেমা। ৪০ বছরের লড়াকু সেনা যাবতীয় প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে শুরু করে দিলেন নতুন জীবনের অভিযান। শনিবার ছেলেদের শটপাটে ১৪.৬৫ মিটার ছুড়ে ব্রোঞ্জ জিতে সেই দীর্ঘ জীবনযুদ্ধের বৃত্ত সম্পূর্ণ করলেন।
অভিভূত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘সেমার মতো আমাদের কাছেও এ এক গর্বের মুহূর্ত। ওর মানসিক শক্তি এই পদক এনে দিয়েছে। ওর মতো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ মানুষদেরই প্রয়োজন।’’
সুস্থ হয়েই সেমা শুরু করেন তাঁর নতুন জীবন। পুণের বিইজি কেন্দ্রে শুরু হয় নতুন প্রস্তুতি। কৃত্রিম পা নিয়ে নেমে পড়েন নিজেকে প্রমাণ করতে। নাগাল্যান্ডের লড়াকু সেমা বলেছেন, ‘‘পা হারানোর পরে খুব অসহায় মনে হত। বিশেষ করে, পরিচিতরা এসে সান্ত্বনা দিলে আরও যেন অবসাদে আচ্ছন্ন হয়ে পড়তাম। একদিন মনে হল, এ ভাবে কারও অনুকম্পা নিয়ে বেঁচে থাকা অর্থহীন। অন্য ভাবে নিজেকে প্রমাণ করতেই হবে।’’ যোগ করেন, ‘‘এখনও সেই বারুদের গন্ধ পাই আমি। ভয়ঙ্কর বোমাও আমার জীবন ছিনিয়ে নিতে পারেনি হয়তো এই মুহূর্তটার জন্য। তবে এই পদকের সমান অংশীদার ভারতীয় সেনাবাহিনী, পিসিআই। তারা পাশে না থাকলে এই উচ্চতায় পৌঁছতে পারতাম না।’’
২০২২ সালে এশীয় প্যারা গেমসে ব্রোঞ্জ। তার আগে মরক্কো গ্রঁ প্রি-তে রুপো। এই দুটি সাফল্য সেমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাঁর কোচ রাকেশ সিংহ রাওয়াতের কথায়, ‘‘অনুশীলনে ওর হার না মানা মনোভাব দেখে বিশ্বাস তৈরি হয়ে গিয়েছিল, প্যারিসে ও কাউকে হতাশ করবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy