নজরে: ব্যান্টনের দুরন্ত ব্যাটিং ঝড় তুলেছে ক্রিকেট মহলে। ফাইল চিত্র
তাঁর রিভার্স স্কুপে মারা ছয় দেখে বিস্ময় হতবাক হয়ে গিয়েছে ক্রিকেট দুনিয়া। যে ভাবে অক্লেশে উইকেটের দু’পাশেই রান তুলছেন প্রথাগত এবং রিভার্স শটে, তাতে তুলনা উঠছে কেভিন পিটারসেনের সঙ্গে। অনেকেই মনে করেন, হকি খেলার সুবাদে এ রকম শট মারছেন টম ব্যান্টন। কথাটা আংশিক সত্য, পুরোটা নয়। ইংল্যান্ডের এই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানের শটের পিছনে লুকিয়ে আছে আরও দুটো কারণ। এক, বেসবল। দুই, ভারী বল।
১৭ বছর বয়স থেকেই সমারসেটের সঙ্গে যুক্ত ব্যান্টন। এই কাউন্টি ক্লাব থেকেই উত্থান কলকাতা নাইট রাইডার্সের তরুণ ব্যাটসম্যানের। সেই সমারসেটের প্রধান কোচ, জেসন কের বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ড থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে আনন্দবাজারের কাছে তুলে ধরলেন ব্যান্টনের ট্রেনিং প্রক্রিয়া। জেসন বলছিলেন, ‘‘আমরা সব সময় টমকে উৎসাহ দিয়েছি নেটেও নানা রকম শট খেলার। আর বিশেষ অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছি যাতে শটের শক্তি অনেক বেড়ে যায়।’’
কী সেই বিশেষ অনুশীলন? জেসনের কথায়, ‘‘আমাদের ক্লাবে এক জন বেসবল কোচ আছে। তার প্রধান কাজটা হল বেসবলের মতো বলটা ছুড়ে ব্যান্টনদের প্র্যাক্টিস দেওয়া। এতে ব্যাট চালানোর গতি আর হ্যান্ড আই কোঅর্ডিনেশন খুব ভাল হয়ে যায়।’’
পাশাপাশি থাকছে ভারী বলে অনুশীলনও। সমারসেটের ট্রেনিংয়ে নানা ওজনের বল ব্যবহার করা হয়। ব্যান্টনের জন্য থাকে বিশেষ ভারী বল। জেসনের কথায়, ‘‘এই ভারী বলও অনায়সে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেয় ব্যান্টন। আমরা এমন ভাবে স্ট্রোকপ্লেয়ারদের তৈরি করি যাতে ওরা শুধু ছোট মাঠে নয়, যে কোনও মাঠে ছয় মারতে পারে। ব্যান্টনের বিশাল, বিশাল ছয়গুলো দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন ওর শটে কতটা শক্তি।’’
ব্যান্টনের এই শক্তি আর শটের বৈচিত্রই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে চিন্তায় রাখছে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভিডিয়ো কনফারেন্সে ইংল্যান্ডের ২১ বছর বয়সি ওপেনারকে নিয়ে আনন্দবাজারের কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিলেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। ব্যান্টন সম্পর্কে আপনার কী মত? ফিঞ্চের মন্তব্য, ‘‘দারুণ প্রতিভা, কোনও সন্দেহ নেই। আমি ওকে নানা টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় খেলতে দেখেছি। যেখানে খেলেছে, বিশাল প্রভাব ফেলেছে।’’
যে রকম অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগে। গত বার ব্রিসবেন হিট-এর হয়ে সাতটা ম্যাচে ২২৩ রান করেছেন ব্যান্টন, স্ট্রাইক রেট ১৭৬.৯৮। ১৬ বলে হাফসেঞ্চুরি আছে। এক ওভারে পাঁচটি ছয় মারার রেকর্ডও আছে। বিবিএলে ব্যান্টনকে কাছ থেকে দেখে প্রতিপক্ষ দলে থাকা ফিঞ্চের মনে হয়েছে, এই ছেলেকে ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান বলা যায়। আনন্দবাজারকে ফিঞ্চ বলেন, ‘‘ব্যান্টন হল এমন ব্যাটসম্যান যে ৩৬০ ডিগ্রি জুড়ে বল মারতে পারে। যে কারণে ওকে আটকানো খুব কঠিন।’’
ব্যান্টনের আরও একটা দিকের কথা বলছেন ফিঞ্চ। ছ’ফুট দুই ইঞ্চির উচ্চতা। অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের মতে, এই উচ্চতা কাজে লাগিয়ে বলের কাছে খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন ব্যান্টন। স্পিনারদের ক্ষেত্রে স্টেপ আউট বা স্লগ সুইপ মারতে সমস্যা হচ্ছে না। ফিঞ্চের কথায়, ‘‘উচ্চতাকে দারুণ কাজে লাগাচ্ছে ব্যান্টন। যে কারণে বলের কাছে পৌঁছে এমন সব শট খেলছে, যা আমাদের মতো ক্রিকেটারের পক্ষে খেলা সম্ভব নয়।’’
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শাদাব খান, ইমাদ ওয়াসিমদের মতো স্পিনারকে খুব সহজেই গ্যালারিতে ফেলে দিয়েছিলেন ব্যান্টন। স্পিনের বিরুদ্ধে এতটা সাবলীল ব্যাটিং কী করে করছেন ব্যান্টন? কোচ জেসনের জবাব, ‘‘এখানে ওর হকি খেলাটা কাজে দিচ্ছে। হকির দ্রুত রিফ্লেক্স আর কব্জির জোড়ালো ব্যবহারে স্পিনারদের বিরুদ্ধে ওই রকম সব শট খেলতে পারছে টম।’’
জেসনের আশা, আবু ধাবিতে আগে খেলেছেন বলে মন্থর পিচে সমস্যা হবে না ব্যান্টনের। যা নিশ্চিত ভাবে খুশি করবে কেকেআর সমর্থকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy