Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Mahendralal Sarkar

বিজ্ঞানসভা থেকে রামকৃষ্ণদেব, কাঠখোট্টা এক ডাক্তারের কথা

আপাত-রূঢ় এক চিকিৎসক, যিনি রামকৃষ্ণদেবকে দেবতা রূপে পুজো করার কড়া সমালোচনা করেন। অথচ কী এক অমোঘ টানে মহেন্দ্রলাল সরকার রোজই চলে আসেন তাঁর এই বিশেষ রোগীটির কাছে... তাঁর চোখে রামকৃষ্ণদেব অসাধারণ গুণবিশিষ্ট, জ্ঞানী ব্যক্তি, যাঁর কথা তাঁকে আবিষ্ট করে রাখে।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২০ ০৪:৪৮
Share: Save:

কিছু দিন হল কাশিটা বেড়েছে শ্রীরামকৃষ্ণের।

শুনে ডাক্তারবাবু বললেন, ‘‘আবার কাশি হয়েছে! তা কাশীতে যাওয়াই ভাল। যে অসুখ তোমার হয়েছে, লোকদের সঙ্গে কথা কওয়া হবে না। তবে আমি যখন আসব, কেবল আমার সঙ্গে কথা কইবে।’’

কাশীপুরে এক ভক্ত জিজ্ঞাসা করেছিলেন, অসুস্থ রামকৃষ্ণদেবকে নিয়ে নৌকা করে বেড়াতে যাওয়া যাবে কি না। ডাক্তারবাবুর অমত। সরাসরি না করেননি, কিন্তু বলেছিলেন, ‘‘না, যেশাশ ক্রাইস্ট তো জলের উপর হেঁটে যেতেন!’’

অদ্ভুত এক সম্পর্ক! যার ব্যাখ্যা সহজ নয়। শ্রীরামকৃষ্ণ আর চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার।

প্রথম জন তখন যুগপুরুষের আসনে প্রতিষ্ঠিত, অন্য জন তাঁরই চিকিৎসায় নিযুক্ত সে যুগের স্বনামধন্য চিকিৎসক। আপাত ভাবে রূঢ়ভাষী, কাঠখোট্টা, ভক্তিটক্তির অত ধার ধারেন না। রামকৃষ্ণকে ‘আপনি’ না বলে ‘তুমি’ বলেন এবং অনায়াসে বলার ক্ষমতা রাখেন, ‘‘তা হলে তুমি পরমহংসগিরি করছ কেন?’’

অথচ কী এক অমোঘ টানে ‘কল’ না থাকলেও প্রায় রোজই চলে আসেন তাঁর এই বিশেষ রোগীটির কাছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকেন, তর্ক করেন, তাঁকে দেবতা রূপে পুজো করার কড়া সমালোচনা করেন, আবার তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে নতুন নতুন বই কিনে পড়াশোনা করেন এবং অনেক সময় রামকৃষ্ণের চিকিৎসাকে প্রাধান্য দিয়ে অন্য রোগী দেখতে যাওয়া বাদ দেন।

কথামৃতের পাতায় পাতায় ভরা রয়েছে রামকৃষ্ণদেব ও তাঁর চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকারের বহু কথোপকথন। নিজের কর্মকৃতিত্বে ও দক্ষতায় সে যুগের প্রথিতযশা এই অ্যালোপ্যাথি তথা হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসককে ইতিহাস মনে রেখেছে আজীবন বিজ্ঞান-অনুসন্ধান, বিজ্ঞানসভার প্রতিষ্ঠার জন্য এবং শ্রীরামকৃষ্ণের চিকিৎসক হিসেবে।

রামকৃষ্ণদেবের ভাবাবস্থা ও সমাধি হয়েছে। ডাক্তারবাবু তা দেখেছেন। জ্ঞান ফেরার পর শ্রীরামকৃষ্ণ জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘এই যে ভাবটাব দেখলে তোমার সায়েন্স কী বলে? তোমার কি এ সব ঢং বলে বোধ হয়? যদি ঢং মনে কর তা হলে তোমার সায়েন্সমায়েন্স সব ছাই পড়েছ।’’ শুনে মহেন্দ্রলালের উত্তর, ‘‘যদি ঢং মনে করি, তা হলে কি এত আসি? এই দ্যাখো, সব কাজ ফেলে এখানে আসি। কত রোগীর বাড়ি যেতে পারি না। এখানে এসে ছ’সাত ঘণ্টা থাকি। রোজ দু’-তিনটে কলে যাওয়া হচ্ছে না। পরের দিন আপনিই রোগীদের বাড়ি যাই, ফি নিই না। আপনি গিয়ে ফি নেব কেমন করে?’’

তাঁর চোখে রামকৃষ্ণদেব অসাধারণ গুণবিশিষ্ট, জ্ঞানী ব্যক্তি, যাঁর কথা তাঁকে আবিষ্ট করে রাখে। বলেন, ‘‘বই পড়লে এ ব্যক্তির এত জ্ঞান হত না।’’ আবার অবতার জ্ঞানে সেই রামকৃষ্ণের পা ছুঁয়ে প্রণাম করা তিনি বরদাস্ত করতে পারেন না। রাগ করে বলেন, ‘‘তুমি প্রকৃতির সন্তান, তাই অত বলি। লোকে পায়ে হাত দিয়ে নমস্কার করে, এতে আমার কষ্ট হয়। মনে করি এমন ভাল লোকটাকে খারাপ করে দিচ্ছে। কেশব সেনকে তাঁর চেলারা ওই রকম করে দিলে।’’ অবতার অবতার বলে রামকৃষ্ণের সরলতা ঘুচিয়ে দেওয়া হবে ভেবে, বিজ্ঞানমনস্ক চিকিৎসকের অসম্ভব আপত্তি। এই নিয়ে মাঝেমধ্যেই গিরিশচন্দ্র ঘোষ, নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর তর্কও বাধে।

শ্রীরামকৃষ্ণ কিন্তু লোক চিনেছিলেন। বুঝেছিলেন, ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে, কর্মজীবনের যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত হয়ে এবং জ্ঞানচর্চায় ব্যস্ত থেকে ডাক্তার মানুষটির মনটা কেমন যেন শুকিয়ে গিয়েছে। বাইরেটা হয়েছে শক্ত নারকেলের মতো। তাই এত ‘হ্যাঁক ম্যাক লাঠি মারা’ কথাবার্তা আর তার্কিক স্বভাব। আসলে মানুষটি ‘শুদ্ধ আধার’। ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ‘‘বঁড়শি বেঁধা আছে, মরে ভেসে উঠবে। তুমি রোসবে। এখন ‘নেতি নেতি’ করে অনুলোমে যাচ্ছে....যখন বিলোমে আসবে সব মানবে।’’ কখনও তিনি মহেন্দ্রলালকে ‘লোভী, কামী, অহঙ্কারী’ বলে গালমন্দ করেছেন, আবার সেই তিনি ভাবাবেশে ডাক্তারবাবুর কোলেই পা বাড়িয়ে দিয়ে পরে বলেছেন, ‘‘তুমি খুব শুদ্ধ! তা না হলে পা রাখতে পারি না।’’

এক বার শ্রীরামকৃষ্ণ বিজ্ঞানসভা দেখতে যাবেন বলে বায়না ধরলেন মহেন্দ্রলালের কাছে। তাতে প্রাজ্ঞ চিকিৎসক মন্তব্য করলেন, ‘‘তুমি সেখানে গেলে অজ্ঞান হয়ে যাবে—ঈশ্বরের আশ্চর্য সব কাণ্ড দেখে!’’ ডাক্তারবাবু বৈজ্ঞানিক। বিজ্ঞানের সাধক। শ্রীরামকৃষ্ণের ভাবাবেশ হলে তাঁর হৃৎস্পন্দন পরীক্ষা করেন। এক দিন রামকৃষ্ণদেব তাঁর ভাবাবস্থা নিয়ে প্রিয় চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দিলেন, ‘‘নার্ভাস সেন্টারের অ্যাকশন বন্ধ হয়, তাই অসাড়—এ দিকে পা টলে, যত এনার্জি, ব্রেনের দিকে চলে যায়। এই নার্ভাস সিস্টেম নিয়েই লাইফ। ঘাড়ের কাছে আছে Medulla Oblongata. তার হানি হলে লাইফ এক্সটিঙ্কট হতে পারে।’’

শুরুর কথা

স্কুল জীবনে কখনও দ্বিতীয় হননি। অসম্ভব মেধাবী ছাত্র দক্ষতার সঙ্গে ডাক্তারি পাশ করে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক হয়েছিলেন। আবার চরম হোমিয়োপ্যাথ-বিদ্বেষী হয়েও আচমকা সেই হোমিয়োপ্যাথিতে এমন আকৃষ্ট হলেন যে, সব ছেড়েছুড়ে হোমিয়োপ্যাথি প্র্যাকটিস শুরু করলেন। চার দিকে প্রবল সমালোচনা শুরু হল। কিন্তু তিনিও একবগ্গা। এক বার যা ভেবে নেন, তা করে ছাড়েন। প্রথম ছ’মাস কোনও রোগী হল না। কিন্তু তার পর তিনিই হলেন সে কালে কলকাতার ৩২ টাকা ভিজিটের সেরা হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসক। শহরের মান্যগণ্য লোকেরা তাঁর রোগী। এক সময়ে আবার হোমিয়োপ্যাথির পাশাপাশি আধুনিক বিজ্ঞানের প্রসারে ১৮৭৬ সালে ভারতবর্ষের প্রথম বিজ্ঞান সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স’ স্থাপন করলেন।

এ হেন স্বনামধন্য চিকিৎসকের ছেলেবেলাটা খুব মসৃণ ছিল না। জন্ম ১৮৩৩ সালের ২ নভেম্বর, হাওড়া শহরের ১৮ মাইল পশ্চিমে পাইকপাড়া গ্রামে। বাবা তারকনাথ, মা অঘোরমণি। বিয়ের অনেক বছর পরে তাঁদের প্রথম সন্তান মহেন্দ্রলাল। বাবার আর্থিক অবস্থা ভালই ছিল। কিন্তু অকালে মারা গেলেন। মহেন্দ্র আর তার ছোট ভাইকে নিয়ে মা বাধ্য হলেন কলকাতার লেবুতলা অঞ্চলে শশীভূষণ দে স্ট্রিটে বাপের বাড়ি চলে আসতে। স্থানীয় পাঠশালায় ভর্তি হলেন তিনি। মামাবাড়িতে দিনরাত খাটতে হত ছোট্ট মহেন্দ্রকে। তাতেও পড়াশোনায় ফাঁকি ছিল না। সন্ধেবেলা অধিকাংশ দিন রাস্তার আলোয় পড়াশোনা করতেন।

কিছু দিনের মধ্যেই কলেরায় মা মারা গেলেন। মহেন্দ্রও গুরুতর অসুস্থ হলেন। টানা বহু দিন স্কুলে যেতে পারলেন না বলে স্কুলে নাম কেটে গেল। কিন্তু পরিস্থিতি জানতে পেরে প্রধানশিক্ষক উমাচরণ মিত্র তাঁকে আবার ভর্তি নিলেন। পরবর্তী কালে প্রধানশিক্ষক টোয়েন্টিম্যান সাহেবেরও প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি এবং তাঁর কাছেই দুরন্ত ইংরেজি লেখা ও বলা শিখেছিলেন।

১৮৪৯ সাল। প্রথম হয়ে জুনিয়র স্কলারশিপ পেয়ে হিন্দু কলেজে ভর্তি হলেন। তাঁর মেধা দেখে মুগ্ধ হলেন অধ্যক্ষ সাটক্লিফ ও দর্শনের অধ্যাপক জেনস। তত দিনে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়েছে আর মহেন্দ্রলাল বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চশিক্ষা চালাবেন বলে ঠিক করে ফেলেছেন। লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া। ১৮৫৪ সালে সেখানে ভর্তি হলেন। ঠিক তার পরের বছর ২৪ পরগনার বন্দিপুর গ্রামের মহেশচন্দ্র বিশ্বাসের মেয়ে রাজকুমারীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হল।

মেডিক্যাল শিক্ষা

জানার অনন্ত খিদে মহেন্দ্রর, আর তেমনই মেধা ও স্মৃতিশক্তি। একবার লেকচার শুনলে তা আদ্যন্ত মনে গেঁথে যায়।

তখন তিনি মেডিক্যালে সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র। এক বার এক আত্মীয়ের জন্য আউটডোর থেকে ওষুধ নিতে যাচ্ছেন, সেখানে ফিফথ ইয়ারের ছাত্রদের ক্লাস নিচ্ছিলেন চক্ষু বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আর্চার। ছাত্রদের একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন। কেউ বলতে পারল না, কিন্তু হঠাৎ ভিড়ের মধ্য থেকে মহেন্দ্র ঠিক উত্তর দিলেন। অবাক হলেন আর্চার। আরও কয়েকটি প্রশ্ন করলেন, ঠিক উত্তর গড়গড় করে বলে গেলেন মহেন্দ্রলাল। মেডিক্যাল কলেজে সুনাম ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগল না। তাঁর পড়ার ও জানার ব্যাপ্তি অধ্যাপকদের মুগ্ধ করল। বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয়ে লেকচার দেওয়ার জন্য মহেন্দ্রর ডাক পড়ত। অ্যান্যাটমি, ফিজিয়োলজি, সার্জারি, ধাত্রীবিদ্যার মতো অনেক বিষয়ে মেডেল পেয়েছিলেন। নতুন নতুন মেডিক্যাল জার্নালে সারাদিন ডুবে থাকতেন। ফাইনাল পরীক্ষায় একটা প্রশ্নের উত্তরে পাঠ্যবইয়ের পুরনো পরিসংখ্যানের বদলে এক নতুন মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত আপ-টু-ডেট তথ্য লিখেছিলেন। তাতে পরীক্ষক নম্বর কেটে নেওয়ায় গোল্ড মেডেল হাতছাড়া হয় মহেন্দ্রলালের। তবে কৃতিত্বের সঙ্গে ১৮৬০ সালে মেডিসিন ও সার্জারিতে লাইসেনসিয়েট (এলএমএস) পাশ করেন। তিন বছর পর এমডি হন। তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় এমডি।

অ্যালোপ্যাথি থেকে হোমিয়োপ্যাথি

অল্পদিনের মধ্যেই অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক হিসেবে তাঁর প্র্যাকটিস জমে উঠল। রোগীরা ভিড় করতে থাকলেন। ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বঙ্গীয় শাখার সম্পাদক করা হল তাঁকে। নামী চিকিৎসক তখন হোমিয়োপ্যাথির কট্টর বিরোধী। যেখানে পারেন সেখানে হোমিয়োপ্যাথিকে দুরমুশ করেন। ‘হাতুড়ে চিকিৎসা’ বলে গালমন্দ করতেও ছাড়েন না। এরই মধ্যে এক বিচিত্র কাণ্ড হল। এক পত্রিকায় মরগ্যানের লেখা ‘ফিলোজ়ফি অব হোমিয়োপ্যাথি’ বইয়ের সমালোচনা লেখার অনুরোধ এল তাঁর কাছে। মহেন্দ্রলাল মনে করলেন, এ বার হোমিয়োপ্যাথিকে সমালোচনায় ঝাঁজরা করে দেবেন। কিন্তু ভবিতব্য ছিল অন্য। সমালোচনা লেখার জন্য বই যত পড়েন, তত আকৃষ্ট হন সেই চিকিৎসা পদ্ধতিতে।

ওয়েলিংটন এলাকার বাসিন্দা কলকাতার অন্যতম ধনী রাজেন্দ্রলাল দত্ত সেই সময় হোমিয়োপ্যাথির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনিও দু’বছর মেডিক্যাল কলেজে অ্যালোপ্যাথি পড়ে ছেড়ে দেন। কোনও ডিগ্রি ছাড়াই হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসা করতেন। মহেন্দ্রলাল তাঁর কাছে গিয়ে ওষুধের প্রয়োগ আর ফল দেখতে শুরু করলেন। ক্রমশ রাজেন্দ্রলালকে গুরু মানলেন। রাজেন্দ্রও অত্যন্ত স্নেহ করতেন তাঁকে। শেষ পর্যন্ত বিশিষ্ট অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল ঠিক করলেন, তিনি হোমিয়োপ্যাথি প্র্যাকটিস করবেন। নিন্দার ঝড় উঠল। ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন থেকে বার করে দেওয়া হল তাঁকে। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়, শিক্ষক সকলে এমন কাজ করতে বারণ করলেন। কিন্তু মহেন্দ্রকে নড়ানোর জো কারও নেই। শুরু হল প্র্যাকটিস। সেই সঙ্গে হোমিয়োপ্যাথি নিয়ে লেখালিখির জন্য ‘ক্যালকাটা জার্নাল অব মেডিসিন’ প্রকাশ করা শুরু করলেন।

প্রথম কয়েক মাস কোনও রোগী এল না তাঁর কাছে। কিন্তু তার কিছু দিনের মধ্যেই হোমিয়োপ্যাথি প্র্যাকটিস করে তিনিই হয়ে উঠলেন কলকাতার শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশবচন্দ্র সেন থেকে শুরু করে শ্রীরামকৃষ্ণ, কে না ছিলেন তাঁর রোগীর তালিকায়! পরে এক জায়গায় বলেছিলেন, প্রথম দিকে যখন কোনও রোগী পেতেন না তখন দিনরাত ‘মেটিরিয়া মেডিকা’ পড়তেন। সেটা পরবর্তী কালে খুব কাজে লেগেছিল। জীবনের কোনও অভিজ্ঞতাই আসলে ফেলা যায় না।

চিকিৎসাপদ্ধতির ব্যাপারে উদার ছিলেন। প্রয়োজনে পুঁথিপড়া বিদ্যাকে নিজের অভিজ্ঞতা বা অনুভব অনুযায়ী একটু এ দিক-ও দিক করতে ইতস্তত করতেন না। এক বার শ্যামপুকুর বাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণের চিকিৎসা করার সময়ে বলেছিলেন, ‘‘ম্যালেরিয়া হলে সরাসরি কুইনাইন দিতে হবে। তখন অত ‘ওবিডিয়েন্স টু হ্যানিম্যান’ চলে না।’’ রামকৃষ্ণদেবের চিকিৎসায় তাঁর মত নিয়েই কবিরাজ বা অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসককে ডাকা হত। তিনি কখনও অমত করেননি।

বিজ্ঞানসভার প্রতিষ্ঠা

আধুনিক বিজ্ঞানচর্চা না করলে ভারতীয়দের কোনও দিন উন্নতি সম্ভব নয় বলে, মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন। ‘ক্যালকাটা জার্নাল অব মেডিসিন’ চালু করার পর ১৮৬৯-এ সেখানে ভারতীয়দের প্রাকৃতিক বিজ্ঞান চর্চার জন্য জাতীয় সভা দরকার বলে জানালেন। লন্ডনের ‘রয়্যাল ইনস্টিটিউট’ বা ‘ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর দি অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স’ এর নীতি অনুসরণ করে সেখানে কাজ হবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থাকবে সম্পূর্ণ ভারতীয়দের পরিচালনায়। হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় ১৮৭০ সালের ৩ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় বিজ্ঞানসভার। তিন বছর পর বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ১৮৭৩ সালে বিজ্ঞানসভা প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তহাতে দান করার অনুরোধ জানানো হল।

রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রমেশচন্দ্র মিত্র, কেশবচন্দ্র সেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায়, যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর, কাশিমবাজারের মহারাজ, পাতিয়ালার মহারাজ, রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অনেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য এগিয়ে এলেন। জমিদার কালীকৃষ্ণ ঠাকুরের কাছ থেকে বিদ্যাসাগর ২৫০০ টাকা জোগাড় করে এনেছিলেন। মহেন্দ্রলাল নিজে দিয়েছিলেন ১ হাজার টাকা। কেশবচন্দ্র সেনের সাহায্যে কোচবিহারের মহারাজের থেকেও অনেক আর্থিক সাহায্য এসেছিল।

১৮৭৬ সালের ২৯ জুলাই ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স’-এর উদ্বোধন হল কলেজ স্ট্রিট ও বৌবাজারের সংযোগস্থলে সরকার থেকে লিজ় নেওয়া একটি বাড়িতে। ভিজিয়ানগরমের মহারাজ মহেন্দ্রলালের চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছিলেন। ফি দিতে চাইলে তার বদলে ডাক্তারবাবু বিজ্ঞানসভার জন্য দান চাইলেন। মহারাজের দেওয়া ৪০ হাজার টাকায় বিজ্ঞানসভার পরীক্ষাগার তৈরি হল। এখানকার পাঠ্যবিষয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত ছিল। জগদীশচন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, চুনীলাল বসু, প্রমথনাথ বসু, গিরীশচন্দ্র বসুর মতো বহু খ্যাতনামা ব্যক্তি এখানে বক্তৃতা দিতেন। জগদীশচন্দ্র প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস পরিচালনা করতেন এবং পাশাপাশি গবেষণা চালাতেন।

বিজ্ঞানসভার জন্য আজীবন হন্যে হয়ে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা করে গিয়েছেন মহেন্দ্রলাল। ১৯০২ সালে এক অধিবেশনে ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছিলেন, ‘‘আমার জীবন ব্যর্থ হয়েছে বলে আমার ধারণা হয়েছে। আমি সে কাজ সম্পন্ন করতে পারিনি, যার জন্য আপনাদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। যে সহযোগিতা পাওয়া গিয়েছে তা দিয়ে তিনটি অধ্যাপকের মধ্যে একটির যোগ্য তহবিলও সৃষ্টি হয়নি।’’ ঘটনাচক্রে বিজ্ঞানসভা আরও বিকশিত হয়েছিল মহেন্দ্রলালের মৃত্যুর পরে।

১৯০৭ সালে শ্রী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন এই বিজ্ঞানসভার সদস্য হন এবং গবেষণা শুরু করেন। ১৯১৭ সালে স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তাঁকে বিশেষ সম্মান দিয়ে বিজ্ঞান কলেজে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে গবেষণার সব যন্ত্রপাতি ছিল না। ফলে তিনি বিজ্ঞানসভাতেই কাজ করতে থাকেন। ১৯৩০ সালে তিনি আবিষ্কার করেন আলোকরশ্মি বিকিরণের নতুন তথ্য ‘রমন এফেক্ট।’ যার জন্য তিনি নোবেল প্রাইজ় পান। এরও অনেক পরে মেঘনাদ সাহার চেষ্টায় বিজ্ঞানসভা বৌবাজার থেকে যাদবপুরে চলে আসে পঞ্চাশের দশকের গোড়ায়।

রামকৃষ্ণদেবের ডাক্তার

রানী রাসমণির জামাই মথুরামোহন বেঁচে থাকার সময় মহেন্দ্রলাল সরকার কয়েক বার দক্ষিণেশ্বরে আসেন এবং শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে সামান্য পরিচিত হন। ১৮৮৫ সালের কোনও এক সময় তাঁকে চিকিৎসার জন্য আনা হয় মহেন্দ্রলালের শাঁখারিটোলার (এখনকার মহেন্দ্র সরকার স্ট্রিট) বাড়িতে। সেই অভিজ্ঞতা দক্ষিণেশ্বরের রাখাল ডাক্তারকে বলেছিলেন রামকৃষ্ণদেব—‘‘মহেন্দ্র সরকার দেখেছিল, কিন্তু জিভ এমন জোরে চেপেছিল যে ভারী যন্ত্রণা হয়েছিল, যেন গরুর জিভ চেপে ধরেছে।’’ পরে আবার অন্য জায়গায় বলেছেন, ‘‘খুব ভাল করে দেখবে বলে টিপেছিল।’’

শ্যামপুকুরে থাকার সময়ে মহেন্দ্রলালকে আবার দেখানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ বা হোমিয়োপ্যাথ চিকিৎসক প্রতাপচন্দ্র মজুমদারের মধ্যে কোনও একজন। সেখানে মহেন্দ্রলাল প্রথম আসেন ১৮৮৫ সালের ১২ অক্টোবর। কেউ কেউ বলেন, প্রথম দিন তিনি ১৬ টাকা ফি নিয়েছিলেন, পরে আর টাকা নিতেন না। দিনের পর দিন রামকৃষ্ণদেবের কাছে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতেন, আলোচনায় যোগ দিতেন, হাসিঠাট্টা-তর্কবিতর্কও চলত। রামকৃষ্ণদেবকে বলতেন, ‘‘তোমার সত্যানুরাগের জন্যই তোমায় এত ভাল লাগে। তুমি যেটা সত্য বলিয়া বুঝ, তার একচুল এ দিক ও দিক করে চলতে পার না। অন্যস্থানে দেখি, তারা বলে এক, করে এক। ঐটে আমি আদৌ সহ্য করতে পারি না।’’

মহেন্দ্রলাল ঈশ্বর মানতেন, কিন্তু অবতার, অলৌকিকত্ব, মূর্তিপুজোর ঘোর বিরোধী ছিলেন। বরাবর বলতেন, ‘‘বিশ্বাস অন্ধ এবং ধর্ম অযৌক্তিক। এদের স্থান হৃদয়ে, বুদ্ধির সঙ্গে এদের সম্পর্ক নেই।’’ আপাদমস্তক বিজ্ঞানের সাধক চিকিৎসক শ্রীরামকৃষ্ণকে তিনি কখনও প্রণাম করেননি বা বাড়তি শ্রদ্ধাভক্তি দেখাননি। বরং তাঁর সঙ্গে মিশেছিলেন বন্ধুর মতো। বুদ্ধিদীপ্ত তর্কবিতর্ক-আলোচনা চলত, পরস্পরের যুক্তি খণ্ডনও করতেন। কিন্তু মানসিকতা ও ধ্যানধারণার বিপুল অমিল সত্ত্বেও রামকৃষ্ণ ও মহেন্দ্রলাল অমোঘ মোহময় বাঁধনে আবদ্ধ থেকেছেন শেষ পর্যন্ত।

শ্যামপুকুর বাটীতে এক বার সকলের সামনেই মহেন্দ্রলাল মা কালীকে নিয়ে কটু কথা বলেছিলেন। শুনে সবাই হেসে ফেলেছিলেন। তিনিই আবার এক দিন রামকৃষ্ণকে বলছেন, ‘‘যখন তুমি গাচ্ছিলে ‘দে মা পাগল করে, আর কাজ নেই জ্ঞানবিচারে’ তখন আর থাকতে পারি নাই। তার পর অনেক কষ্টে ভাব চাপলুম, ভাবলুম যে, ডিসপ্লে করা হবে না।’’ এক দিন শ্রীরামকৃষ্ণের দেওয়া একটি উপমা শুনে তারিফ করায় রামকৃষ্ণ বললেন, ‘‘একটা থ্যাঙ্ক ইউ দাও।’’ ডাক্তারবাবুর উত্তর ছিল, ‘‘তুমি কি বুঝছ না মনের ভাব? কত কষ্ট করে তোমায় দেখতে আসছি?’’

তাঁর বৈজ্ঞানিক সত্তা ও আধ্যাত্মিক সত্তার মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব নিরন্তর চলত। রামকৃষ্ণ সেটা বুঝতে পারতেন। চিকিৎসকের ভিতরকার ভাগবৎ সত্তা অনুভব করতেন, তাই হয়তো বলেছিলেন, ‘‘তুমি রোসবে।’’ নিজের ভক্তদের দিয়ে রামপ্রসাদের ও কমলাকান্তের বই আনিয়ে তার মধ্যে কয়েকটা গান বেছে নিয়ে বলতেন, ‘‘এই সব গান ডাক্তারের ভিতর ঢুকিয়ে দেবে।’’

কাশীপুরে থাকাকালীন শেষ দিকে মহেন্দ্রলালের অনুমতি নিয়েই রামকৃষ্ণদেবের চিকিৎসা করতেন বাগবাজারের কবিরাজ নবীনচন্দ্র পাল, কারণ মহেন্দ্রলাল নিয়মিত আসতে পারতেন না। শ্রীরামকৃষ্ণের মৃত্যুর ব্যাপারে মহেন্দ্রলালের ডায়েরি থেকে জানা যায়, তিনি কাশীপুর উদ্যানবাটীতে এসে রামকৃষ্ণদেবকে দেখে ঘোষণা করেন, এটা সমাধি নয়, আগের রাতে একটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ডায়েরিতে ইংরেজিতে লিখেছিলেন, ‘খাবার পর যেতে হয়েছিল প্রথম ডাফ স্ট্রিটের এক মহিলা রোগীকে দেখতে, তার পর পরমহংস দেবের কাছে, গিয়ে যাঁকে মৃত দেখলাম। তিনি গতরাত্রি একটায় মারা গিয়েছেন। দেখলাম—বাঁ পাশ ফিরে শুয়ে আছেন। পা দু’টি গুটানো, চোখ খোলা, মুখ খানিকটা খোলা। তাঁর ভক্তরা মনে করেছিলেন তিনি সমাধিস্থ, মৃত নন। আমি সেই ধারণা দূর করলাম। তাঁর একটা ফটো তুলতে বললাম এবং আমার চাঁদা হিসাবে দশ টাকা দিলাম।’ শ্মশানযাত্রী হননি তিনি।

কেমন ছিলেন মহেন্দ্রলাল

ঝকঝকে দুটো চোখ, চওড়া কপাল, সাদা চুল আর চোয়াল পর্যন্ত নেমে আসা সাদা গোঁফ। অত্যন্ত বলিষ্ঠ চরিত্রের, গম্ভীর, স্পষ্টবক্তা। লর্ড ডাফরিন ব্রহ্মদেশ থেকে ফেরার পর যখন তাঁর সংবর্ধনার ব্যবস্থা হচ্ছে তখন মহেন্দ্রলাল সর্বসমক্ষে বলেছিলেন, ‘‘ব্রহ্মদেশ লুট করে আসার জন্য কি এই পুরস্কার?’’ একেবারে ঘড়ির কাঁটা ধরে রুটিন মেনে জীবন কাটাতেন। যে রোগী আগে আসত তাঁকে আগে দেখতেন। এই নিয়মের নড়চড় হত না। কবিরাজ, ইউনানি চিকিৎসক, সন্ন্যাসী এবং জ্যোতিষীদের ক্ষমতার ব্যাপারেও জানতে আগ্রহী ছিলেন।

ধুতি, চাদর আর চটি পরতেন। মাংস-পেঁয়াজ খেতেন না। শুধু মাছ খেতেন। বাড়িতে অনেক গরু ছিল। প্রচুর দুধ হত। দামি ঘোড়ার গাড়ি ও ভাল ঘোড়া ছিল তাঁর। কারণ সারা দিন বিভিন্ন জায়গায় রোগী দেখতে ও বক্তৃতা দিতে ছুটতে হত। আর ছিল বিরাট লাইব্রেরি। সময় পেলেই লেখালিখি করতেন। একমাত্র ছেলে অমৃতলালও নামী চিকিৎসক হয়েছিলেন।

মহেন্দ্রলালের কথাবার্তা ছিল রুক্ষ ধরনের। কিন্তু আসলে অত্যন্ত মরমি, সহানুভূতিশীল মানুষ ছিলেন তিনি। একবার নরেন্দ্রনাথকে দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘‘আমার ভাব কেউ বুঝল না। যাঁরা আমার পরম বন্ধু, তারা আমায় কঠোর-নির্দয় মনে করে।’’ আর এক বার এক দরিদ্র নিউমোনিয়া রোগীকে দেখতে গিয়েছেন। তাঁর খড়ের চালের বাড়ি। প্রেসক্রিপশনে ওষুধের সঙ্গে লিখলেন, ‘এক গাড়ি খড় পাঠিয়ে দাও।’ কম্পাউন্ডার অবাক। চিকিৎসক জানালেন, রোগীর ঝুরঝুরে খড়ের চাল চুঁইয়ে ঘরে জল পড়ে। এতে নিউমোনিয়া সারবে কী ভাবে! সেই খড় নিজে কিনে পাঠিয়েছিলেন রোগীকে।

শ্যামপুকুরে এক বার নরেন্দ্রনাথের ভজন শুনে এত খুশি হয়েছিলেন যে, তাঁকে জড়িয়ে ধরে আশীর্বাদ করে রামকৃষ্ণদেবকে বলেছিলেন, ‘‘এর মতো ছেলে ধর্মলাভ করতে এসেছে দেখে আমি বিশেষ আনন্দিত। এ একটি রত্ন, যাতে হাত দিবে সেই বিষয়েই উন্নতি সাধন করবে।’’ শেষ জীবনে নিজেও কয়েকটি গান লিখেছিলেন, তাতে দেবদেবীর মূর্তির কথা ছিল না তবে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ ও আর্তি ছিল। শেষের দিকে যখন রোগে কষ্ট পাচ্ছেন, তখনও ঈশ্বরকে ডাকতেন।

শেষ সময়

প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যায় প্রায় তিন বছর ভুগেছিলেন। মৃত্যুর বারো ঘণ্টা আগে ছেলে অমৃতলালকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোন সময়ে তাঁর মৃত্যু হবে। বলেছিলেন, ‘‘কাঁদবার এ সময় নয়, আমি উন্নততর লোকে যাচ্ছি।’’ নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেন কোনও অ্যালোপ্যাথি ওষুধ বা চিকিৎসাপদ্ধতি তাঁর উপরে প্রয়োগ করা না হয়। ১৯০৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে দুধ খাওয়ার পর ছেলের কাছে লেখার কাগজ-কলম চাইলেন। দু’-একটা টুকরো টুকরো শব্দ। তার পর হাত থেকে কলম খসে পড়ল। বিজ্ঞানসন্ধানী এক অসামান্য চিকিৎসকের জীবনখাতার পাতাও ফুরোল।

তথ্যসূত্র: শ্রীরামকৃষ্ণের ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার। লেখক, ড. জলধিকুমার সরকার, জাতীয় বিজ্ঞানচর্চার জনক মহেন্দ্রলাল সরকার। লেখক, ড. চিত্তব্রত পালিত

অন্য বিষয়গুলি:

Mahendralal Sarkar Doctor Ramakrishna Paramahamsa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy