—ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে বেজিং এর পক্ষে ফের জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ শুরু হতেই পাল্টা ঘা দিল ভারত। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে চিন আলোচনা শুরু করেছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে চিনের মাথা গলানোটা এই প্রথম নয়। এর আগেও তারা এই চেষ্টা করছে, যদিও আন্তর্জাতিক সমর্থন পায়নি। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চিনের নাক গলানোর বিষয়টিকে আমরা দৃঢ় ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।’
গালওয়ান সীমান্ত থেকে চিনকে পিছু হটাতে সামরিক পর্যায়ে চেষ্টা যেমন চলার চলছে। পাশাপাশি কূটনৈতিক স্তরেও বেজিংয়ের মোকাবিলা করতে আক্রমণাত্মক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি ভারতে চিনের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রভাব যতটা কমানো যায়, তার জন্য পথ খোঁজা শুরু করেছে সাউথ ব্লক। গত এক মাসে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল দু’টি বৈঠক করছেন সরকারের ‘চায়না স্টাডি গ্রুপ’-এর সঙ্গে। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে স্টাডি গ্রুপের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ভারতের মাটিতে চিনের ‘সফট পাওয়ার’ কমাতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
ইতিমধ্যেই চিনের প্রস্তাবিত ৭টি কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট-এর বিষয়ে পুর্নবিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। ভারতের ৭টি প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ ভাবে ভাবে এই চিনা সংস্থার কাজ শুরু করার কথা ছিল। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, সেগুলিও আপাতত বন্ধ রাখা হবে। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেন, ‘ভারতের মাটিতে বিদেশি রাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র খোলা নিয়ে ২০০৯ সালে বিদেশ মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী, কনফুসিয়াস সেন্টার-সহ যে কোনও স্বয়ংশাসিত বিদেশি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে ভারতের কোনও সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করতে হলে বিদেশ মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হয়। ফলে অনুমতি না-দেওয়া হলে ধরে নিতে হবে, বিদেশ মন্ত্রকের নির্দেশিকার শর্ত কোথাও লঙ্ঘিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: চিনা অনুপ্রবেশের নথি গায়েব প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে
আরও পড়ুন: সেনাকে ফেসবুক থেকে দূরে রাখার নির্দেশ বহাল
২০১৮ সালে তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র বৈঠকে ‘সহযোগিতার দশটি স্তম্ভ’ (টেন পিলার্স) তৈরি হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল, দু দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো, ফিল্ম এবং টেলিভিশন চ্যানেল-এর সম্প্রচার সহযোগিতা, ভারত এবং চিনের জাদুঘরের মধ্যে প্রশাসনিক সহযোগিতা, পর্যটন, ক্রীড়া এবং যুবশক্তির সমন্বয়ের মতো বিষয়গুলি। এ ছাড়া ভারত এবং চিনের নির্দিষ্ট শহরের মধ্যে বাণিজ্যিক এবং পরিষেবা ক্ষেত্রে সম্পর্ক তৈরি (সিস্টার সিটি), শিক্ষা, যোগ, পর্যটনের মতো ক্ষেত্রে গাঁটছড়া বাঁধা হয়েছিল। এ বার সব ক’টি সমন্বয়ের পরিধি ধাপে ধাপে কমানো হবে বলে। চিনা বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার ভারতে বেজিং এর প্রভাব সব ক্ষেত্রেই কমানোর চেষ্টা করছে। তা সে বাণিজ্যিক হোক বা সাংস্কৃতিক।
পাশাপাশি লাদাখ সংলগ্ন ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা’ থেকে চিনা সেনা সরানোর প্রসঙ্গে আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, দু’দেশের সীমান্ত সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি স্তরে ৫ জুলাই ফোনালাপে ঐকমত্য হয়েছিল যে দ্বিপাক্ষিক প্রটোকল অনুযায়ী দ্রুত এবং সম্পূর্ণ সেনা পশ্চাদপসরণ করা হবে। তাঁর বক্তব্য, ‘ভারত এবং চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সার্বিক উন্নতির জন্য সেনা পিছনো এবং সীমান্তে সেনা সমাবেশ কমানোটা অত্যন্ত জরুরি। ভারত এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আশা করছি চিনও এই লক্ষ্য পূরণে ঐকান্তিক ভাবে কাজ করবে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy