প্রতীকী চিত্র।
বাড়ির অমতে বিয়ে করেছিলেন। তাই বলে বিয়ের তিন মাস কাটতে না কাটতেই যে স্বামীকে হারাতে হবে তা বুঝতে পারেননি ২৩ বছরের অবন্তী। কিন্তু সেটাই হল। অবন্তীর অভিযোগ, তাঁর বাবা, মামা ও পরিবারের অন্য সদস্যরাই তাঁর স্বামী হেমন্তকে অপরহণ করে খুন করেছেন। তদন্তে নেমে অবন্তীর পরিবারের ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, জাতপাতের কারণেই এই খুন।
এই ঘটনা তেলঙ্গানার। বৃহস্পতিবার ২৬ বছরের হেমন্ত খুন হন সাঙ্গারেড্ডি জেলার কিস্তাইয়াগুড়ায়। পেশায় ইন্টিরিয়র ডিজাইনার হেমন্তের সঙ্গে অবন্তীর সম্পর্ক প্রায় আট বছরের। কিন্তু রাজি ছিল না অবন্তীর পরিবার। রাজি করানোর চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত গত ১১ জুন দু’জনে কুতুবুল্লাপুরের সাব রেজিস্ট্রার অফিসে বিয়ে করে নেন। বিয়ের পর হেমন্ত স্ত্রীকে নিয়ে বাবা মায়ের বাড়িতে না উঠে গাছিবোউলির টিএনজিও কলোনিতে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার অবন্তীর বাবা লক্ষ্মা রেড্ডি ও মা অর্চনা রেড্ডি আসেন টিএনজিও কলোনির বাড়িতে। সেখানে তখন হেমন্ত, অবন্তী দু’জনেই ছিলেন। মেয়ে জামাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে অবশ্য শুধু শ্বশুর, শাশুড়িই নয়, আসেন অবন্তীর দুই মামা বিজয়েন্দর রেড্ডি, যুগন্ধর রেড্ডি এবং পরিবারের আরও বেশ কয়েক জন। এত জন মিলে আলোচনা করতে আসায় হেমন্তও তাঁর বাবা-মাকে আড়াইটা নাগাদ ফোন করেন এবং তাঁদের আসতে বলেন। কিন্তু তার মধ্যেই নব দম্পতিকে একটি গাড়িতে তুলে নেন অবন্তীর বাপের বাড়ির লোকজন। বলেন অবন্তীদের বাপের বাড়ি চন্দননগরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাঁদের।
হেমন্তর বাবা-মা আসার সময় অবন্তীর বাপের বাড়ির গাড়িগুলি দেখতে পান। তাঁরাও এবার ওই গাড়ির পিছু নেন সেই সঙ্গে পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানান। অবন্তীর বাপের বাড়ির লোকজনের গাড়িগুলি আউটার রিং রোডে গোপনপল্লি টান্ডা ক্রসরোডে পৌঁছলে হেমন্ত ও অবন্তী চলন্ত গাড়ি থেকে ঝাঁপ দেন। খালি পায়েই তাঁরা দৌড়তে শুরু করেন। কিন্তু হেমন্তকে ধরে ফেলেন যুগন্ধর রেড্ডি। টেনে তোলেন গাড়িতে। এবার তাঁকে সাঙ্গারেড্ডির দিকে যান। ইতিমধ্যেই গোপনপল্লী টান্ডা ক্রসরোডের ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। অবন্তীর বাপের বাড়ির লোকজনকে আটক করে। সেই সঙ্গে অপহরণের একটি মামলাও দায়ের হয়। হেমন্তকে খোঁজার জন্য শুরু হয় তল্লাশি।
আরও পড়ুন: জিভে জল আনা মাস্ক, চশমা ঝাপসা হওয়ার সমস্যায় শৈল্পিক ছোঁয়া
শুক্রবার সাড়ে তিনটে নাগাদ যুগন্ধর রেড্ডিকে পুলিশ শমিরপেট থেকে তোলে, শুরু হয় জেরা। যুগন্ধর জানান তিনি এবং আরও দু’জন মিলে হেমন্তকে গলা টিপে খুন করেছেন, দেহ সাঙ্গারেড্ডির একটি জায়গায় লুকিয়ে রেখা হয়েছে। পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছে হেমন্তর দেহ উদ্ধার করে। অটপসির জন্য দেহ পাঠানো হয়েছে ওসমানিয়া জেনারেল হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: বিরাট-ব্যর্থতায় অনুষ্কাকে দায়ী করেননি, সাফাই গাওস্করের
হেমন্তর মা লক্ষ্মীরানি অভিযোগ করেছেন, জাতপাত ও পরিবারে আর্থিক অসাম্যের কারণেই তাঁর ছেলে খুন করা হয়েছে। লক্ষ্মী জানিয়েছেন, তাঁরা অবন্তীর বাপেরবাড়ির পরিবারের থেকে উচ্চবর্ণ হলেও আর্থিক দিক থেকে তুলনায় গরিব’। তাঁর দাবি অবন্তীর বাবা হেমন্তকে বিয়ের পরই খুনের হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা ভেবেছিলেন বাড়ির অমতে বিয়ে করার জন্য রেগে আছেন। কয়েক মাস গেলেই রাগ কমে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে ছেলেকে হারাতে হবে তা কল্পনাও করেননি। অবন্তীও তাঁর বাবা ও পরিবারের অন্যদের বিরুদ্ধে স্বামীকে খুনের অভিযোগ তুলেছেন। অবন্তী বলেছেন, এ জন্য তিনি বাবা ও অন্যদের কখনই ক্ষমা করবেন না। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ১৩ জনকে আটক করে মামলা রুজু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy