Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
COVID-19

৫০ লক্ষ ছাড়াল দেশের মোট আক্রান্ত, এক দিনে ১২৯০ জনের মৃত্যু

আমেরিকার পর বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসাবে ৫০ লক্ষের গণ্ডি পার করল ভারত।

মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক— তিন রাজ্যেই দৈনিক আক্রান্ত গত কয়েকদিনের তুলনায় কমেছে। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক— তিন রাজ্যেই দৈনিক আক্রান্ত গত কয়েকদিনের তুলনায় কমেছে। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:৩৯
Share: Save:

দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ লক্ষ ছাড়াল। আমেরিকার পর বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসাবে ৫০ লক্ষের গণ্ডি পার করল ভারত। বেশ কিছু দিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজারের বেশি থাকার পর গতকাল ৮৩ হাজারে নেমেছিল। আজ তা ফের ৯০ হাজার পেরলো। সেই সঙ্গে এক দিনে মৃত্যুও প্রায় ১৩০০ ছুঁইছুঁই। তবে গত পাঁচ দিনের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষা হয়েছে অনেক বেশি।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৯০ হাজার ১২৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫০ হাজার ৯৫৬ ও ৩৬ হাজার ৬৫৩ জন। আমেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় ভারতের দৈনিক সংক্রমণ অনেক বেশি। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এই ধারা অব্যাহত রয়েছে।

বুধবার ৯০ হাজার বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৫০ লক্ষ ২০ হাজার ৩৫৯ জন। প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকায় মোট আক্রান্ত ৬৬ লক্ষ ৪ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ৪৩ লক্ষ ৮২ হাজার।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )

মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক— দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে দেশের মধ্যে এগিয়ে এই তিনটি রাজ্য। তবে এই তিন রাজ্যেই দৈনিক আক্রান্ত গত কয়েকদিনের তুলনায় কমেছে। মহারাষ্ট্রে ২০ হাজারেই বন্দি রয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশেও ১০ হাজারের থেকে কমেছে। গত ক’দিন ধরে কর্নাটকেও তা সাড়ে সাত হাজারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে প্রায় সাত হাজার হয়েছে। দিল্লিতে ফের চার হাজারের উপরে উঠেছে। বিহারে সংক্রমণ আশ্চর্যজনক ভাবে ৫০০তে নেমে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা একই আছে। কিন্তু ওড়িশা ও ছত্তীসগঢ়ে দৈনিক সংক্রমণ আজও লাগামছাড়া। কেরল, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলির দৈনিক সংক্রমণ নিয়ে যথেষ্ট চিন্তার কারণ রয়েছে।

আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় মৃত্যুর হার কম হলেও, ভারতে দিন দিন বাড়ছে মোট মৃত্যুর সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৯০ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৮২ হাজার ৬৬ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ৩০ হাজার ৪০৯ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ৮ হাজার জনের। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ৪৮১। অন্ধ্রপ্রদেশেও মোট মৃত আজ পাঁচ হাজার ছাড়াল। দেশের রাজধানীতে সংখ্যাটা ৪ হাজার ৮০৬। উত্তরপ্রদেশ (৪,৬০৪), পশ্চিমবঙ্গ (৪,০৬২), গুজরাত (৩,২৪৪) ও পঞ্জাব (২,৫১৪) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ (১,৮২০), রাজস্থান (১,২৬৪), হরিয়ানা (১,০২৬), তেলঙ্গানা (৯৯৬) ও জম্মু ও কাশ্মীরে (৯১৪) মোট মৃত্যু বেড়ে চলেছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরী, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যার মধ্যেই আশার আলো কোভিড রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠা। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৩৯ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৬০ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের সাড়ে ৭৮ শতাংশের বেশি সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৮২ হাজার ৯৬১ জন।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গত দু’দিন ধরে দেশের সংক্রমণ হার ৮ শতাংশের নীচে। আজ তা ৭.৮৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে ১১ লক্ষ ৪২ হাজার ৮৪২ জনের। যা গত পাঁচদিনের তুলনায় অনেকটাই বেশি।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )

কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু— দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত প্রায় ১১ লক্ষ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশে ৫ লক্ষ ৮৩ হাজার। তামিলনাড়ুতে মোট ৫ লক্ষ ১৪ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছেন। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট সংক্রমিত চার লক্ষ ৭৫ হাজার। উত্তরপ্রদেশেও সংখ্যাটা ৩ লক্ষ ২৪ হাজারে পৌঁছেছে। দিল্লিতে ২ লক্ষ ২৫ হাজার। পশ্চিমবঙ্গে তা ২ লক্ষ ৯ হাজার। বিহার ও তেলঙ্গানাতে ১ লক্ষ ৬০ হাজার পার করেছে। ওড়িশাতে ১ লক্ষ ৫৮ হাজার ও অসমে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার। গুজরাত, কেরল ও রাজস্থানেও এক লক্ষ ছাড়িয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্ত এক লক্ষের দোরগোড়ার দাঁড়িয়ে। পঞ্জাব (৮৪ হাজার), ছত্তীসগঢ় (৭০ হাজার), ঝাড়খণ্ড (৬৪ হাজার), জম্মু ও কাশ্মীরে (৫৬ হাজার) মোট আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।

পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ বেশ কিছু দিন ধরে তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ২২৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ৯ হাজার ১৪৬ জন। যদিও এর মধ্যে এক লক্ষ ৮১ হাজারেরও বেশি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন চার হাজার ৬২ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19 Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy