গুয়াহাটি থেকে ডিব্রুগড়ে প্লাজ়মা পৌঁছে দিলেন অসম পুলিশের দুই কর্মী। রবিবার সকালে। —নিজস্ব চিত্র
এক জন করোনা রোগীর প্রাণ বাঁচাতে রিলে করে গাড়ি ছুটিয়ে আট ঘণ্টায় ৪৫০ কিলোমিটার রাস্তা পার করে প্লাজ়মা পৌঁছে দিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা। অন্য এক পুরোহিতের জীবন রক্ষায় আরও দ্রুত গুয়াহাটি থেকে প্লাজ়মা নিয়ে ডিব্রুগড়ের অসম মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছলেন দুই পুলিশকর্মী। অচেনা মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসায় স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশকর্মীদের ধন্যবাদ দিচ্ছেন রোগীর পরিবার।
ডিব্রুগড়ের চিকিৎসক ভাস্কর পাপুকন গগৈ জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ অসম মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন এক পুরোহিতের এবি পজ়িটিভ প্লাজমার দরকার হয়। অন্য কোনও হাসপাতালে তা না থাকায় ভাস্কর ফোন করেন ডিজিপি ভাস্করজ্যোতি মহন্তকে। ডিজিপি সঙ্গে সঙ্গে হাবিলদার যোগেশ দোলে ও কনস্টেবল জিতুমণি ডেকাকে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের প্লাজ়মা ব্যাঙ্কে পাঠান। তাঁরা প্লাজমা নিয়ে ঝড়ের
বেগে গাড়ি চালিয়ে রবিবার সকাল সওয়া সাতটায় ডিব্রুগড় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেন। সাড়ে আটটার মধ্যে রোগীকে প্লাজ়মা দেওয়া শুরু হয়।
এর আগে শুক্রবার রাতে কয়েক জন স্বেচ্ছাসেবক ডিব্রুগড় মেডিক্যাল কলেজের করোনা আক্রান্ত নার্সের জন্যে গুয়াহাটি থেকে রিলে করে গাড়ি চালিয়ে প্লাজ়মা পৌঁছে দেন। ওই নার্সের পরিবার খোঁজ নিয়ে দেখেন, অসম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল তো বটেই যোরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্লাজ়মা ব্যাঙ্কেও স্টক শেষ। ডিব্রুগড়ে প্লাজ়মা অভিযান চালানো ভাস্করবাবু গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খবর নিয়ে দেখেন সেখানে প্লাজ়মা রয়েছে।
কিন্তু আনবে কে? সাহায্য নেন মাড়োয়ারি যুব মঞ্চের। যেহেতু আন্তঃজেলা গাড়ি চলাচল বন্ধ। তাই ঠিক হয় গুয়াহাটি থেকে ডিব্রুগড় পর্যন্ত সব জেলার সীমানায় এক গাড়ি থেকে নামিয়ে অন্য গাড়িতে তোলা হবে প্লাজমা। শুক্রবার রাত সাড়ে দশটায় গুয়াহাটি থেকে প্লাজমা নিয়ে রওনা হয় প্রথম দল। এর পর মরিগাঁও, নগাঁও, গোলাঘাট, যোরহাট, শিবসাগর হয়ে শনিবার সকালে সেই প্লাজ়মা ডিব্রুগড় পৌঁছয়। পথে পড়েছে বানভাসি এলাকা। তুমুল বৃষ্টি। কিন্তু গাড়ি থামায়নি কোনও দল।
প্লাজ়মা অভিযানের অন্যতম কর্তা তথা স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি সেক্রেটারি পমি বরুয়া বলেন, “অচেনা রোগীর জন্য এত জন মানুষের নিঃস্বার্থ উদ্যোগ এই অতিমারির আবহেও আমাদের কাছে আশার আলো। উপসর্গ থাকার পরেও যাঁরা সুস্থ হয়ে উঠছেন তাঁদের সকলকে অনুরোধ করছি, প্লাজ়মা দান করুন। এক জনের প্লাজ়মা দুইজন রোগীকে সুস্থ করে।”
অসমে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়িয়েছে। ৪১ হাজারের বেশি রোগী সুস্থ হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা ১৪৫। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, গুয়াহাটিতে করোনা আক্রান্ত যে সব রোগী বাড়িতেই থাকতে চান, তাঁদের সরকারের তরফে পাল্স অক্সিমিটার ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বিনামূল্যে দেওয়া হবে। ১০৪ হেল্পলাইন মারফত টেলি-মেডিসিন পরিষেবাও দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy