শরীর সবল রাখতে, রোজকার ডায়েটে পুষ্টি বজায় রাখতে, প্রোটিনের ঘাটতি মেটাতে রোজকার খাবারের পরিবর্তে অনেকেই প্রোটিন শেক খান। ওজন কমাতে, অনেকেই এই ধরনের শেকে ভরসা রাখেন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই কড়া ডায়েট করেন। তাই পুষ্টির জোগান বজায় রাখতে তাঁরা ভরসা রাখেন প্রোটিন শেকে। কিন্তু প্রোটিন শেকের গুণাগুণ কী? জেনে নিন
প্রোটিন কী ভাবে খাবেন?
শরীরে ফার্স্ট ক্লাস প্রোটিন আসে মাংস, মাছ, ডিম ও দুগ্ধজাতীয় প্রডাক্ট থেকে। আর সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিনের উৎস ডাল, সয়াবিন, রাজমা, ছোলা, ছাতু ইত্যাদি। কিন্তু খাবার থেকে পর্যাপ্ত প্রোটিন শরীরে না পৌঁছলে তখনই কাজে দেবে প্রোটিন শেক। পুষ্টিবিদ সুবর্ণা রায়চৌধুরীর মতে, ‘‘সুস্থ থাকতে হলে ফার্স্ট ক্লাস ও সেকেন্ড ক্লাস, দু’টি প্রোটিনই খাওয়া দরকার। কিন্তু চাহিদা মতো মাছ, মাংস, ডিম না খেলে প্রোটিনের ঘাটতি তৈরি হয়। অন্য দিকে আবার ডাল ও তা থেকে উৎপন্ন প্রডাক্ট, সয়াবিন, রাজমার মতো খাবার পুরোপুরি বর্জন করলেও প্রোটিনের অভাব ঘটে। খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের ঘাটতি, প্রোটিন শেক দিয়ে পূরণ করা সম্ভব।’’
প্রোটিন শেক আসলে কী?
প্রোটিন পাউডারের মধ্যে সব খাদ্যবস্তুর প্রোটিন থাকার সঙ্গে নিউট্রিয়েন্টসও (যেমন কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, মিনারেলস ইত্যাদি) থাকে। পরিমাণ মতো ঈষদুষ্ণ জলে গুলে, পানীয়ের মতো পান করা হয় এই প্রোটিন শেক। তবে প্রোটিন পাউডারের উপাদানের অনেক ফারাক হয়। তাই আপনার যা দরকার, ডায়াটিশিয়ানের সঙ্গে কথা বলে সেটা বুঝে কিনুন।
নিজে তৈরি করুন
• প্রোটিন পাউডার হাতের নাগালে না পেলে কী করবেন? বাড়িতে যে মিল্ক শেক তৈরি করা হয়, তাতেও প্রোটিন রয়েছে। কিন্তু তাতে ব্যালান্স আনতে দুধের সঙ্গে ছাতু, বাদাম মেশাতে পারেন। দুধের বদলে দইও ব্যবহার করা যায়। কিন্তু তা সাময়িক কাজ দেবে
মিলের বদলে প্রোটিন শেক?
দিনের একটা মিল বা স্ন্যাক্সের বদলে প্রোটিন শেক খেতে পারেন।
• শরীর সবল রাখতে, প্রোটিনের ঘাটতি হলে, বদহজম, অ্যালার্জি হলে প্রোটিন শেক বিকল্প হতে পারে।
• কঠিন রোগে রাইলস টিউব দিয়ে খাবার গ্রহণ করতে হলেও প্রোটিন শেক দেওয়া হয়।
• পেশির সক্ষমতা বাড়াতে ফিটনেস এক্সপার্টরা প্রোটিন শেক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এর ব্যবহার বেশি। কারণ প্রোটিন শেক খেলে অনেকক্ষণ খিদে পায় না। পুষ্টিও জোগায়। পেশির গঠনে সহায়ক।
সচেতনতাই ভরসা
তবে প্রোটিন শেক খাওয়ার আগে মনে রাখবেন, শরীরে বাড়তি প্রোটিন তৈরি হলেও বিপদ। মাছ, মাংস ইত্যাদি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেয়েও প্রোটিন শেক খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সুবর্ণার কথায়, ‘‘বয়স, উচ্চতা ও শারীরিক ক্ষমতা বুঝে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রোটিন শেক খান। রোজকার ডায়েটে হাই প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তার কারণে প্রোটিন শেক খেলে লেবেলে দেখে নেবেন, সেটির বেস কী? বেশির ভাগ প্রোটিন পাউডার মিল্ক বেসড হয়। তাই দুধ জাতীয় প্রডাক্টে সমস্যা থাকলে বেছে নিতে পারেন সয়া বেসড প্রোটিন পাউডার।’’ আবার শারীরিক অসুস্থতায় অ্যালবুমিনের মাত্রা কম হলে ডিমের সাদা অংশের বদলে অ্যালবুমিন পাউডার গুলে শেক বানিয়ে খেতে পারেন। অনেকের হাই প্রোটিনের দরকার পড়ে না। যেমন কিডনির অসুখে ভুগলে ঠিকঠাক খেতে না পারলে, লো ক্যালরি প্রোটিন শেক খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। হাই প্রোটিনের দরকার হলেও বাড়তি পটাশিয়াম ও নুন খাওয়ায় নিষেধ থাকলে এমন প্রোটিন শেক বাছুন, যাতে পটাশিয়াম ও নুন সীমিত।
কোন ধরনের প্রোটিন পাউডার আপনার দরকার, তা নির্ধারণ করবেন চিকিৎসক। ক’স্কুপ আর কতবার খাবেন, সে বিষয়েও চিকিৎসক বা ডায়াটিশিয়ানের কথা শুনে চলতে হবে। প্রোটিন শেক খাওয়া শুরু করলেও, তা অভ্যেসে পরিণত করবেন না। ক্লিনিকাল নিউট্রিশনিস্ট হিনা নাফিস বললেন, ‘‘দীর্ঘমেয়াদি প্রোটিন শেক খাওয়ার ফল কিন্তু ভাল নয়।’’
যাঁরা শরীরচর্চা করেন, প্রোটিন শেকের উপরে ভরসা রাখেন বেশি। সুবর্ণার কথায়, ‘‘ঘন ঘন প্রোটিন শেক খাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। পেশির ক্ষয় রুখতে বাড়তি প্রোটিন শরীরে চলে গেলে তা মেদ হয়ে জমা হতে পারে। খাবারের পরিমাণ আর প্রোটিন শেক কতটা নেবেন, সে বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।’’ অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির উপরে চাপ ফেলে। এতে কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। পেটের সমস্যাও হতে পারে।
তাই কোনও মিলের বদলে প্রোটিন শেক খেতে চাইলে ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শ নিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy