নতুন সংসার শুরুর আগে সন্তানকে কী ভাবে সামলাবেন? ছবি: সংগৃহীত।
শিশুর জীবনের সবচেয়ে শক্তিশালী দুই স্তম্ভ হল বাবা-মা। তাদের সম্পর্ক যখন ভেঙে যায়, তখন সন্তানের উপর তার প্রভাব হয় নানাবিধ। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে আইনি দাড়ি পড়ে গেলে শিশুর গোটা জগৎটাই যেন বদলে যায়। তাদের মনের মধ্যে কাজ করে ভয় আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের টানাপড়েন। খুদের মনের পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায় যখন, বাবা কিংবা মা আবার বিবাহবন্ধনে জড়িয়ে পড়েন। ঠিক যেমনটা হয়েছিল অভিনেতা ফারহান আখতারের সঙ্গে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ফারহান বলেন, ‘‘যখন বাবা জাভেদ আখতার ও শাবানা আজ়মির বিয়ে হয়, তখন আমার মনে হয়েছিল বাবা আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। বাবার সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্কে ফিরতে আমার অনেকটা সময় লেগেছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অবশ্য শাবানার অনেকটাই অবদান ছিল।’’
বাবা-মায়ের মধ্যে কেউ এক জন নতুন করে সংসার শুরু করলে সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর যে আঘাত লাগে, তা চটজলদি সারে না। তাদের মনে হয়, বাবা-মা হয়তো নতুন সঙ্গীকে পেয়ে তাদের আর আগের মতো ভালবাসবেন না। বাবা কিংব মায়ের তারা যেন আর আগের মতো বিশ্বাস করতে পারেন না। তাদের আচরণের মধ্যে হিংসা, রাগ, জেদ বেশি করে প্রকাশ পায়। কেউ কেউ আবার মানসিক অবসাদেও ভুগতে শুরু করে। তাদের অস্তিত্ব নিয়েও মনের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
পরিবারে এমন বদল আসলে অভিভাবকেরা কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবেন?
১) অভিভাবকের জীবনে নতুন কোনও সঙ্গী এলে সে বিষয়ে খোলাখুলি সন্তানের সঙ্গে কথা বলে রাখুন। নিজের সিদ্ধান্ত তাদের উপর চাপিয়ে না দিয়ে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাদের মতটাও জানুন। সঙ্গীর সঙ্গে খুদের আলাপ করান। তার পর একান্তে খুদের মনের কথা জানার চেষ্টা করুন। তা হলে তার মন হবে আপনার জীবনে তারও সমান গুরুত্ব রয়েছে।
২) আপনার জীবনে সন্তানের জায়গাটি অন্য কেউই নিতে পারবে না, সেই কথা ওকে বুঝিয়ে বলুন। পরিবারে নতুন কোনও সদস্য এলে তার কদর কমে যাবে না, সেই বিষয়টি নিয়ে সন্তানের সঙ্গে আলাপচারিতায় বসুন।
৩) অভিভাবকের বিয়ের কথা শোনার পর, সন্তানের আচরণমে বদল আসাটা খুব স্বাভাবিক। সকলের ক্ষেত্রে বহিঃপ্রকাশ এক রকম হয় না। এই সময়ে সন্তানকে বকাবকি না করে, ধৈর্য নিয়ে পরিস্থিতির সামাল দিতে হবে।
৪) এই পরিস্থিতিতে সন্তানকে বাড়তি সময় দিতে হবে, ওর প্রতি বেশি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। ওর হীনম্মন্যতা দূর করার দায়িত্ব কিন্তু আপনারই।
৫) সন্তানের মধ্যে আচরণগত সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই তাকে কাউন্সেলিং করাতে হবে। কোনও বাবা-মা যখন তার ছেলে বা মেয়েকে থেরাপি করাতে নিয়ে যাচ্ছেন, তার অর্থ তিনি সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত। এটা ইতিবাচক দিক। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে যত ঝড়ই বয়ে যাক, সন্তান যে তাঁদের দু’জনের ভালবাসার, সেটা মনে রাখাটা ভীষণ ভাবে জরুরি। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রাক্তনের সাহায্য নিতে হলেও মনের মধ্যে জড়তা না রাখাই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy