নীল রঙের ভাতে চ্যাপটা সবুজ মটরশুঁটি। — নিজস্ব চিত্র।
সরু গলিপথ। তার দু’পাশে পসরা সাজানো খাবারের। কান না পাতলেও শোনা যায় লোহার কড়াই বা তাওয়ায় হাতা-খুন্তির ঝনঝনাৎ বা গরম তেলে রান্নার চড়বড়ানো আওয়াজ। সেই সব শব্দের আশপাশে ভিড় খাদ্যরসিকদের। তাদের পেরিয়ে হেঁটে যেতে যেতে চোখে পড়ে রং-বেরঙের খাবার। মহাদেশ এশিয়ার ‘স্ট্রিটফুড’ বললে কিছুটা এমন দৃশ্যই ভাবনায় আসে। এ বার সেই দৃশ্য সামনাসামনি দেখতেও পাবেন। তার জন্য হংকং, জাপান, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, মঙ্গোলিয়া বা মালয়েশিয়ার টিকিট কাটতে হবে না। খাদ্যরসিকেরা চাইলে পর্বতই আসবে মহম্মদের কাছে। কারণ, এশিয়ার স্ট্রিটফুডের গন্ধমাদনকে কলকাতার লাগোয়া সল্টলেকে এনে ফেলেছে বাঙালি হোটেল ব্যবসায়ী অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের সংস্থা স্পেশ্যালিটি রেস্টুরেন্টস লিমিটেড। নাম দিয়েছে ‘বিজ়ার এশিয়া’।
ঠিকানা সল্টলেক সেক্টর ৩-এর প্রাইমার্ক স্কোয়্যারের তিনতলা। তবে লিফ্টের দরজা খোলার পর চোখের সামনে সল্টলেক বা কলকাতার চিহ্ণ থাকবে না। ডানা মেলবে পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি আর লোকশিল্প। কোথাও তাইল্যান্ডের আলপনার মতো দেখতে হরফের দেওয়াল লিখন, কোথাও জাপানি স্থাপত্য, কোথাও বা মাথার উপর থেকে ঝোলা আলোর চারপাশে কাচের ক্যানভাসে চিন-কোরিয়া-মঙ্গোলিয়ার রং-তুলির টান। আবার কোথাও পরদা দেখলে মনে হবে সার দিয়ে শিকে গাঁথা লাল রঙের মাংসের টুকরো ঝুলছে, ঠিক যেমন দেখা যায় হংকং কিংবা তাইওয়ানের পথের ধারের খাবেরের দোকানে।
ছিমছাম বসার জায়গা। চারপাশে পর পর খাবারের ‘লাইভ কাউন্টার’। কোথাও ডিমসাম, কোথাও সুশি, কোথাও স্যুপ, কোথাও আবার ন্যুডলস, ককটেল, এমনকি, লাইভ ডেজ়ার্ট কাউন্টারও। কলকাতায় বসে পূর্ব এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার পরিবেশে সেখানকার খাবারের স্বাদ নেওয়া এক রকমের অভিজ্ঞতাই। কিন্তু রেস্তরাঁর নামে ‘বিজ়ার’ কেন? প্রশ্ন শুনে রেস্তরাঁর কর্ণধার অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘কারণ, এখানে যা যা হবে, সবই বিজ়ার অর্থাৎ, অদ্ভুত। সাধারণ রেস্তরাঁয় যে অভিজ্ঞতা হয় না, তেমন বহু কিছু এখানে এলে পাওয়া যাবে। লাইভ মিউজ়িক, ওয়াক ইন বটল বার, নাটকীয় আলো, নাটকীয় সাজসজ্জা, নাটকীয়তা থাকবে খাবারের মেনুতেও। এক ছাদের নীচে কয়েক নিমেষে আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন হংকং থেকে চিন হয়ে কোরিয়া, জাপান, মঙ্গোলিয়া, ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া— সব। মোদ্দা কথা হল খাবার, রং, নকশা, আবহ, সব মিলিয়ে একটা উন্মাদনার অভিজ্ঞতা দিতে চাই আমরা, যা এই প্রজন্মের পছন্দ। রেস্তরাঁর নামেও সেই উন্মাদনারই ঝলক রয়েছে।’’
মেনল্যান্ড চায়না থেকে শুরু করে ওহ! ক্যালকাটা, চৌরঙ্গি (লন্ডন), এশিয়া কিচেন, গং, রিয়াসত, ক্যাফে মেজ়ুনা, সিগরি গ্লোবাল গ্রিল, ফ্লেম অ্যান্ড গ্রিল, জঙ্গল সাফারি, এপিসোড ওয়ান, হপ্পিপোলা, হাকা, ড্যারিওল, সুইট বেঙ্গলের মতো ব্র্যান্ড তৈরি করেছে অঞ্জনের স্পেশ্যালিটি রেস্টুরেন্টস লিমিটেড। সেই ছাতার তলায় নতুন সংযোজন ‘বিজ়ার এশিয়া’। তবে এটি ফাইন ডাইনিং রেস্তরাঁ নয়। ‘বিজ়ার এশিয়া’কে বরং থিম রেস্তরাঁ বলা যেতে পারে। এখানে কোনও আ লা কার্টে খাবার নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। পুরোটাই বুফে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টে পর্যন্ত মধ্যাহ্ণভোজের সময়। নৈশভোজের জন্য রেস্তরাঁর দরজা খুলবে সন্ধ্যা ৭টা থেকে। চলবে রাত ১১টা পর্যন্ত। খরচ মাথাপিছু ৭৪৫ টাকা থেকে শুরু হয়ে ৯৯৫ টাকার মধ্যে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy