Advertisement
E-Paper

ঘুমের মধ্যে হঠাৎ মৃত্যু, ‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম’ ঠেকাতে কী বিষয়ে সতর্ক থাকতেই হবে

অক্টোবর মাসে ‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম অ্যাওয়ারনেস মান্থ’ পালন করা হচ্ছে। অবশ্য  আমাদের দেশে ডায়ারিয়া, নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস-সহ নানা কারণে ১ বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের বাঁচানো মুশকিল হয়।

সাবধানে রাখুন সদ্যোজাতকে। ফাইল ছবি।

সাবধানে রাখুন সদ্যোজাতকে। ফাইল ছবি।

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২০ ১০:২১
Share
Save

কোভিড ভাইরাস আটকে দেওয়া নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের লড়াই চলছে, কিছু উপায় জানা গেলেও বেশির ভাগটাই এখনও অজানা। একথা ঠিক যে কয়েক বছরে চিকিৎসা বিজ্ঞান ঝড়ের গতিতে এগিয়ে গেছে। হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের মত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে গেলেও আধুনিক মেডিক্যাল সায়েন্স তা মেরামত করে এমনকি বদলে দিয়েও মানুষকে বাঁচিয়ে দিতে পারে। তবে কিছু কিছু অসুখের ক্ষেত্রে চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা এখনও দিশা পাননি। সেরকমই এক সমস্যা 'সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম' (এসআইডিএস)। এর অর্থ কোনও কারণ ছাড়াই এক বছরের কম বয়সি শিশুদের ঘুমের মধ্যে আচমকা মৃত্যু।

শীতের দেশে এই ঘটনা বেশি দেখা যায়। কিছু নিয়ম মেনে চললে ঘুমের মধ্যে সদ্যোজাতদের আচমকা শেষ নিঃশ্বাস ফেলা আটকে দেওয়া যেতে পারে। তাই সচেতন হতে হবে প্রত্যেক সদ্য মা ও তাঁদের পরিবারকে। এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে অক্টোবর মাসে ‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম অ্যাওয়ারনেস মান্থ’ পালন করা হচ্ছে। অবশ্য আমাদের দেশে ডায়ারিয়া, নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস-সহ নানা কারণে ১ বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের বাঁচানো মুশকিল হয়। তাই এই বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় না, জানালেন ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের অধিকর্তা ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষ।

বাচ্চার জন্মের ২ মাস বয়স থেকে ৪ মাস বয়সের মধ্যে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। কখনও আবার জন্মের কয়েকদিনের মধ্যেও এই ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের দেশে হাসপাতালে আচমকা সদ্যোজাতের মৃত্যু হলে সকলেই হাসপাতাল বা চিকিৎসককে দোষারোপ করেন। তবে সুস্থ শিশুর আচমকা মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কিছুই করার থাকে না।

আরও পড়ুন:সর্বনাশ তামাকেই, দেশে প্রতি ঘণ্টায় মুখের ক্যানসারে মৃত ৫​

এক বছর বয়সের কম বয়সি বাচ্চাদের ঘুমের মধ্যে কোনও কারণ ছাড়া মৃত্যু হলে এবং ময়না তদন্ত করেও কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না পেলে তখনই তাকে ‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম’ বা এসআইডিএস বলা হয়, এমনই ব্যাখ্যা করলেন অপূর্ব ঘোষ। এসআইডিএস-এর সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে জোরদার গবেষণা চললেও এখনও সদ্যোজাতের হৃদযন্ত্র আচমকা থেমে যাওয়ার কারণটি অজ্ঞাত।

নির্দিষ্ট সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ হলে আচমকা হৃদস্পন্দন থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। ফাইল ছবি।

শীতের সময় এই ঘটনার ঝুঁকি বেশি, শীত আসছে তাই হবু মা ও সদ্য মা এবং তাঁর পরিবারের এই বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সুনির্দিষ্ট কারণ জানা না গেলেও কিছু কিছু কারণকে সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোমের জন্য দায়ী করা যেতে পারে, বললেন অপূর্ব বাবু।

আরও পড়ুন:শুধুমাত্র অতিরিক্ত চিনি খেয়েই বিশ্বে মারা যান ৩.৫ কোটি মানুষ!​

যে সব শিশু অত্যন্ত কম ওজন নিয়ে জন্মায় তাদের এই সমস্যার ঝুঁকি স্বাভাবিক ওজনের শিশুদের থেকে তুলনামূলক ভাবে বেশি।

• গর্ভাবস্থায় যে সব মা ধূমপানের নেশা চালিয়ে যান, কিংবা হবু মায়ের সামনে বাবা অথবা অন্যরা সিগারেট-বিড়ি খান, সেই সব শিশুদের এসআইডিএস-এর ঝুঁকি অনেক বেশি।

• নির্দিষ্ট সময়ের আগে শিশু ভূমিষ্ঠ হলে আচমকা হৃদস্পন্দন থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

• ছেলেদের ঝুঁকি মেয়েদের তুলনায় বেশি।

• ২০ বছরের কম বয়সে সন্তানের জন্ম দিলেও ‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম’-এর সম্ভাবনা বাড়ে।

• একটি শিশুর যদি এ রকম আচমকা মৃত্যু হয়, পরবর্তী সন্তানের মৃত্যুর ঝুঁকি ১০ গুণ বেশি।

• গর্ভাবস্থায় মায়ের কোনও শারীরিক জটিলতা থাকলে তাঁদেরও ঝুঁকি বেশি।

আরও পড়ুন:ইভেরমেক্টিন কি করোনা মোকাবিলার নয়া তুরুপের তাস? কী বলছেন চিকিৎসকরা​

• বাচ্চাদের উপুড় করে ঘুম পাড়ালে আচমকা শ্বাস বন্ধ হয়ে শিশুর মৃত্যু হওয়ার ঘটনা দেখা যায়।

• অত্যন্ত নরম বিছানায় বাচ্চাকে ঘুম পাড়ালেও এই দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।

• বাবা-মা বাচ্চাকে পাশে নিয়ে ঘুমোলে এসআইডিএস-এর ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই ইউরোপ-আমেরিকায় বাচ্চাকে আলাদা বেবি কটে ঘুম পাড়ানো বাধ্যতামূলক। রাতে উঠে মা বাচ্চাকে দুধ খাইয়ে আবার কটে ঘুম পাড়িয়ে দেবেন।

• বাচ্চার গায়ে কম্বল বা অন্য চাপা দিয়ে রাখলেও এই সম্ভাবনার ঝুঁকি থাকে।

•পাহাড়ি অঞ্চল বা খুব বেশি ঠান্ডা পড়লে বাচ্চার ঘরে রুম হিটার বা কাঠ কয়লা জ্বালিয়ে ঘর গরম রাখার চেষ্টা করলেও শ্বাসকষ্ট থেকে আচমকা মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

আরও পড়ুন:খাবারে এই মৌল না থাকলে হতে পারে মারাত্মক সব রোগ

• পেটে চাপ দিয়ে উপুড় করে ঘুম পাড়ালে বাচ্চার আচমকা মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।

• অনেকে বাচ্চার গলায় হার বা কালো সুতোতে মাদুলি পরিয়ে রাখেন। এর থেকে গলায় প্যাঁচ লেগে শিশুর শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরও পড়ুন:হার্ট ভাল রাখার অব্যর্থ দাওয়াই, কেন রোজ খেতেই হবে ‘নিরামিষ মাংস’​

এই ভয়ানক ঘটনার হাত থেকে মুক্তি পেতে কারণ গুলিকে দূরে সরিয়ে রাখার পরামর্শ দিলেন অপূর্ব বাবু।

• প্রত্যেক বাবা মায়ের কৃত্রিমভাবে শ্বাস দেওয়ার ব্যাপারটা হাতে কলমে শিখে রাখা উচিত। বাচ্চার কোনও রকম সমস্যা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে সিপিআর দিয়ে তারপর নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।

• উপুড় করিয়ে ঘুম পাড়াবেন না, সোজা করে শুইয়ে রাখতে হবে।

আশপাশে কেউ ধূমপান করলেও তা ক্ষতি করে গর্ভস্থ শিশুর। ফাইল ছবি।

• ঘরে তো বটেই ঘরের আশেপাশেও কেউ যেন ধূমপান না করে খেয়াল রাখা দরকার।

• ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে বাচ্চাকে সুতির ফুলপ্যান্ট ও ফুলহাতা জামা পরিয়ে রাখতে হবে, কম্বল জাতীয় ভারি জিনিস ব্যবহার না করাই ভাল।

• শিশুকে পরিচ্ছন্ন রাখুন, অপরিচ্ছন্নতা থেকেও শিশুর নানান সংকটজনক অসুখের ঝুঁকি থাকে। বাচ্চাদের ভাল রাখার জন্য পরিচ্ছন্নতা জরুরি। নিজেরা ভাল থাকুন, সদ্যোজাতের সঠিক যত্ন নিন।

Child Child Care Newborn Baby SIDS

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।