জ্বর, সর্দিতে ভুগছেন উত্তরবঙ্গের মানুষ। প্রতীকী চিত্র।
ভাইরাল সংক্রমণের জেরে উত্তরবঙ্গে সর্দি, কাশি, জ্বর হচ্ছে ব্যাপক হারে। অনেকেই ওষুধের দোকান থেকে নিজেদের মতো করে নানা অ্যান্টিবায়োটিক, গলা ব্যথার ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। তাতে ভবিষ্যতে বিপদ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের। সাধারণ জ্বর, সর্দির জন্য ‘প্যারাসিটামল’ দোকান থেকে কিনে খাওয়া গেলেও অন্য কোনও ওষুধ, বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া ঠিক নয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিসিডিএ)। সংগঠনের তরফে দোকানগুলোকে প্রেসক্রিপশন ছাড়া, অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করতে নিষেধ করা হচ্ছে।
শিলিগুড়ির চিকিৎসক শেখর চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় ভাইরাসে এখন জ্বর, সর্দি-কাশি খুব বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু ভাইরাল সংক্রমণে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনও ভূমিকা নেই। এই সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট দেখা যাচ্ছে। কোনও কোনও সময় ভাইরাল সংক্রমণের পরে ব্যাটেরিয়াল সংক্রমণও ঘটে। তখন অ্যান্টিবায়োটিক দরকার হয়। অনেককেই দেখা যাচ্ছে দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেতে। তাতে কারও সারছে, তবে অনেকেরই সারছে না। তাঁদের তখন অন্য অ্যান্টিবায়োটিক দরকার হচ্ছে। তাই না বুঝে ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক।’’
চিকিৎসক-মহল এবং ওষুধের দোকান সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্বর বা সর্দি হলেই ওষুধের দোকানগুলো থেকে অনেকেই ‘অ্যাজিথ্রোমাইসিন’ জাতীয় ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। কাশির সিরাপও দেদার বিক্রি হচ্ছে। গলা ব্যথা হলে ‘অ্যাসিক্লোফেনাক’, ‘ডাইক্লোফেনাক’, ‘নিমেসুলাইড’ জাতীয় ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। কিন্তু তা কতটা নিরাপদ? উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ‘চেস্ট’ বিভাগের প্রধান ইন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ‘‘শুকনো কাশি এবং কফ ওঠার জন্য আলাদা সিরাপ দেওয়া হয়। না বুঝে সলবুটামল জাতীয় সিরাপ খেলে হৃদ্রোগীদের সমস্যা হতে পারে। ব্যথার ওষুধও যা খুশি খেলে কিডনির সমস্যা হতে পারে, হৃদ্রোগের আশঙ্কা থেকে যায়। পেটে আলসার থাকলে, তার উপরেও প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া, অ্যান্টিবায়োটিক নিয়মসূচি মেনে না খেলে তা শরীরে ‘রেজ়িস্ট্যান্ট’ হয়ে উঠতে পারে। পরে আর একই ওষুধ কাজে দেয় না।’’
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, কোন ওষুধ খেতে হবে, তা চিকিৎসকই ঠিক করে দেবেন। কারণ, সব অ্যান্টিবায়োটিক সব ক্ষেত্রে কাজ করে না। তাঁদের বক্তব্য, কখনও অসুখ জটিল হয়ে নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ঘটছে। তখন কড়া মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তিও করতে হচ্ছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান শর্মিলা মল্লিকের কথায়, ‘‘যে কোনও ওষুধই চিকিৎসকের পরামর্শে খাওয়া ভাল। অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। কাশির যে কোনও সিরাপ বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত নয়।’’ বিসিডিএ-র দার্জিলিং জেলা সম্পাদক বিজয় গুপ্ত বলেন, ‘‘আমরা ওষুধের দোকানগুলোকে বলছি, প্রেসক্রিপশন ছাড়া, অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না করতে। ১৫ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের একটি কর্মসূচিতেও বিষয়টি থাকছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy