নানা রঙের আবিরে ভর্তি থালা। চুড়ো করে ঢেলে দেওয়া হলুদ, কমলা, সবুজ, গোলাপি, লাল, নীল, বেগনি। রামধনুর সাত রং দেখলে যেমন আনন্দ হয়, দোলের আবিরে সাজানো ওই থালা দেখলেও একই রকম মন ভাল হয়ে যায়। কিন্তু যাঁরা দোল খেলেন না বা যাঁদের দোল খেলার সঙ্গীর অভাব, তাঁরা কী ভাবে খেলবেন রং নিয়ে! বস্তুত রং নিয়ে খেলার জায়গা অনেক। শুধু ভাবতে হবে শিল্পীর মতো করে। যদি রান্না করতে ভালবাসেন, তবে রং নিয়ে খেলতে পারেন খাবারের থালাতেও। দোলের আবিরের পাত্রের মতো তাঁরা সাজিয়ে তুলতে পারেন খাবারের থালাকেও। তেমন হলে দোলে তো বটেই, অন্য যে কোনও দিন রঙের উৎসব হতে পারে খাওয়ার টেবিলে।
কী কী রাখতে পারেন থালায়?
তিনটি মৌলিক রং— লাল, নীল আর হলুদ। রঙিন পাতে সেই তিন রঙের খাবার তো রাখবেনই। পাশাপাশি রাখতে পারেন সবুজ, গাঢ় গেলাপি, কমলা এবং সাদা রঙের খাবারও।
লাল মাস

লাল রঙের মাংস। রাজস্থানের এই রান্না গোটা ভারতে বিখ্যাত তার স্বাদের জন্য। দোলের দিন মাংস-ভাত তো বাঙালির চিরকালীন পছন্দ। এ বারের দোলে না হয় আলু দিয়ে পাঁঠার ঝোলের বদলে বানিয়ে নিন রাজস্থানি লাল মাস। লাল মাসের লাল রং আসে মাথানিয়া লঙ্কা থেকে। এখন অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মে এবং ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কিংবা বড় মশলার দোকানেও সহজেই কিনতে পাবেন এই লঙ্কা।
অপরাজিতা ভাত

লাল হল। এ বার নীলের পালা। ভাবনায় যখন রঙের মেলা, তখন সাদা ভাত না-ই বা খেলেন। বদলে বানিয়ে নিন অপরাজিতা ভাত। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ঠাসা ওই ফুলের চা বানিয়ে খান অনেকে। তা দিয়ে ভাতও রান্না করা যায়। তাইল্যান্ডে এবং মালয়েশিয়ায় ওই ভাত জনপ্রিয়। নাম ‘নাসি কারাবু’। স্বাদের থেকেও এই ভাতের বিশেষত্ব গন্ধে। তবে চাইলে স্বাদ অনুযায়ী ঝাল, মিষ্টি বা নোনতা বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
ডাল

বিরিয়ানি না খেলেও চলবে, কিন্তু ডাল-ভাত লাগবেই। অন্তত বাঙালিদের তো বটেই। মেনুতে যখন নানা রকমের পদ থাকছেই, তখন ডালও নয় হোক একটু বাহারি। উত্তর ভারতীয় পদ্ধতিতে বানিয়ে ফেলুন পেঁয়াজ, শুকনো, লঙ্কা, রসুন ফোড়ন দিয়ে বাসন্তী হলুদর রঙের শাহি ডাল বাসন্তী। যে কোনও ডাল দিয়েই রান্না করা যেতে পারে। উত্তর ভারতে সাধারণত এতে মটর ডাল আর মুসুর ডাল মিলিয়ে দেওয়া হয়।
পালং পনির বা সর্ষো দা শাগ

পালং শাক এখনও বাজার থেকে চলে যায়নি। আর আমিষের নানা পদের সঙ্গে দু’-একটি নিরামিষ থাকাও জরুরি। তা ছাড়া, সবুজ বাদ দিয়ে রঙিন থালা সম্পূর্ণ হয় কী করে? পালং পনির সেই অভাব পূরণ করবে। এই পদও উত্তর ভারতেরই। মূলত পঞ্জাবের। তবে পালং পনির যদি ভারী খাবার মনে হয়, তবে তার বদলে পাতে সবুজ রঙের ছোঁয়া দিতে বানিয়ে নিতে পঞ্জাবেরই আরও একটি জনপ্রিয় পদ সর্ষো দা শাগ। সর্ষে শাক দিয়ে তৈরি ওই খাবার পঞ্জাবে মকাইয়ের রুটির সঙ্গে খাওয়া হলেও নীল ভাতের সঙ্গে খেতে মন্দ লাগবে না।
কমলা কাতলা

মাছ ছাড়া বাঙালির কোন ভোজ সপূর্ণ হয়? যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানের জন্যও মাছ রান্না করতেই হয় বাঙালি বাড়িতে। রামধনুর একটি রঙের ভার নয় দিন সেই মাছের খাবারেই। বাংলার পুরনো রেসিপি কমলালেবুর রস দিয়ে কাতলা মাছের রান্না। নাম ‘কাতলা কমলা’। শীতের খাবার। কিন্তু বসন্তে খেতেই বা আপত্তি কিসে! কমলালেবু তো এখনও পাওয়া যাচ্ছে।
গোলাপের পায়েস

শেষ পাতে মিষ্টিমুখ। গোলাপি রঙের পায়েস বানান গোলাপের পাপড়ি দিয়ে। চাল দিয়ে বানাতে পারেন। আবার সাবুদানা দিয়েও বানাতে পারেন। লাগবে ৫-৬টি গোলাপের পাপড়ি, রোজ় সিরাপ, দুধ, ঘি, কাজু কিশমিশ আর চিনি। অল্প সময়েই বানানো যায়। দেখতে হয় নজরকাড়া।
বাকি রইল বেগনি

রামধনুর সাত রং প্রায় সম্পূর্ণ। বাকি শুধু বেগনি। সেই রঙের অভাব পূরণ করতে পারে রঙিন পাঁপড়। ঠিক বেগনি না হলেও হালকা ম্যাজেন্টা রঙের বিটের পাঁপড় কিনতে পাওয়া যায় বাজারে। ভেজে দিন সেই পাঁপড়। রঙিন থালা তৈরি।
- দোলযাত্রা প্রধানত বৈষ্ণব ধর্মীয় লোকেদের উৎসব হলেও সকলেই এই উৎসবে মেতে ওঠেন। আগামী ১৪ মার্চ শুক্রবার শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা উৎসব।
- দোলে যদি রং খেলতেই হয়, তার আগে থেকেই ত্বকের যত্ন নেওয়া ভাল। এমন কিছু প্রসাধনী ব্যবহার করবেন না, যাতে কিছু বিশেষ ধরনের রাসায়নিক মেশানো আছে।
-
ভিন্ধর্মী বলেই কি ফহাদের গালে রং নেই? কটাক্ষ শুরু হতেই স্বামীর পাশে দাঁড়ালেন স্বরা
-
রং ছাপিয়ে প্রেমের জোয়ার! আবিররাঙা নীল-তৃণা, সুস্মিতার জন্য সাহেবের মেনু কী?
-
ফোনে রং ঢুকে গিয়েছে? জলে ভিজে ফোন বন্ধ, মুশকিল আসান হবে সহজ কিছু কৌশলে
-
রং খেলার পর হাঁচি-কাশি, অ্যালার্জির সমস্যা হচ্ছে? কোন কোন পানীয় বাড়ির সকলকে খাওয়াবেন
-
‘কিশোরী’ নয়, দেব রঙিন অন্য রঙে! দুই ‘সন্তান’ নিয়ে পুজোপাঠে মিমি, ঊষসী কলকাতার মালাইকা?