সানিয়া মির্জা। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে আছেন সানিয়া মির্জা। তাঁর চোখের তলায় কালি। পাশে দাঁড়িয়ে এক চিকিৎসক তাঁকে কিছু বোঝাচ্ছেন। তার পরে ইঞ্জেকশন দিচ্ছেন সানিয়াকে। মুছিয়ে দিচ্ছেন সানিয়ার মুখ। ইনস্টাগ্রামের পাতায় এমনই একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে সানিয়া জানিয়েছেন, কী হয়েছে তাঁর। কিসেরই বা চিকিৎসা চলছে!
না, কোনও রকম শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন না প্রাক্তন ভারতীয় টেনিস তারকা। তিনি চিন্তিত তাঁর চোখের তলার কালি নিয়ে। সেই চিকিৎসার জন্যই দুবাই গিয়েছেন সানিয়া।
ভারতীয় টেনিসে ‘গ্ল্যামার’-এর ছোঁয়া সানিয়ার দৌলতেই। উজ্জ্বল ত্বক, কানের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত ছোট-বড় রুপোলি দুল, সাদা মিনিস্কার্ট আর টিশার্টে মাথায় পনিটেল বাঁধা ঝকঝকে সানিয়াকে টেনিস কোর্টে পুতুলের মতো দেখাত। সেই সানিয়া টেনিস কোর্টকে বিদায় জানালেও গ্ল্যামার দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারেননি। ধারাভাষ্যকার, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মুখ হিসাবে তুঙ্গে উঠেছে জনপ্রিয়তা। সেই সব পেশাদারি দায়িত্বের প্রয়োজনেই ঝকঝকে থাকতে হয় সানিয়াকে। কিন্তু তাঁরও তো চোখের তলায় কালি পড়ে। সেই কালি কী ভাবে ঢাকেন প্রাক্তন টেনিস তারকা? সানিয়া তাঁর ‘গ্ল্যামার’ মন্ত্রের খোঁজ দিয়ে ইনস্টাগ্রামের পাতায় লিখেছেন, ‘‘ম্যাজিক হ্যাপেনস হিয়ার’’ অর্থাৎ ‘‘এখানে জাদু হয়।’’ কিসের জাদু? ইনস্টাগ্রামে সানিয়া লিখেছেন, ‘‘আমার চোখের নীচের কালির জন্য অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট চিকিৎসা হোক বা ত্বক উজ্জ্বল করার যে কোনও চেষ্টা, জাদুটা এখানেই হয়।’’
চোখের কালির চিকিৎসা কী ভাবে সম্ভব?
টলিউডের বহু তারকার ত্বকের চিকিৎসা করেন কলকাতার অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিস্ট চিকিৎসক ডলি গুপ্ত। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, চোখের নীচের কালো ছোপ কি পুরোপুরি তুলে ফেলা যায়? জবাবে ডলি বলছেন, ‘‘কোনও কিছুই ওই ভাবে পুরোপুরি সারানো সম্ভব নয়। চিকিৎসা করার পরেও অনেক কিছু বজায় রাখতে হয়। তবে দীর্ঘমেয়াদি ফল মেলে। বিশেষ করে চোখের তলায় কালি পড়লে, জীবনযাপন ঠিক করা বেশি জরুরি। পাশাপাশি জানতে হবে, শরীরে কোনও জরুরি উপাদানের ঘাটতি থাকছে কি না।’’
সানিয়ার ‘জাদু’ আসলে কী?
সানিয়ার মতো তারকাদের জীবনযাপন সময়ের তারে বাঁধা। সুস্বাস্থ্যের জন্যও তাঁরা অনেক নিয়ম মেনে চলেন। তার পরেও যদি তাঁদের চোখের তলায় কালি পড়ে, তবে অনেকেরই তেমন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসায় সুরাহা হতে পারে? ডলি জানাচ্ছেন, সানিয়া যে চিকিৎসা করান তার নাম ‘মরফিয়াস ৮’। এই চিকিৎসা শুধু সানিয়া একা নন, হলিউডের তারকা কিম কার্দাশিয়ান, ক্লোয়ি কার্দাশিয়ান, জেনিফার অ্যানিস্টন, টম ক্রুজ়েরাও করান। যে করিনা কপূর খান দিন কয়েক আগে বলেছেন, তিনি বোটক্স করান না, তিনিও ‘মরফিয়াস ৮’-এর সাহায্য নিয়েছেন। এই চিকিৎসার সুবিধা হল, এর ফল দীর্ঘস্থায়ী হয়।
মরফিয়াস৮ কী?
‘মরফিয়াস ৮’ আসলে একটি ব্র্যান্ডের নাম। যে পদ্ধতিতে চিকিৎসা হয়, তাকে বলা হয় মাইক্রোনিডলিং রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ট্রিটমেন্ট। ডলির কথায়, ‘‘এই চিকিৎসা কলকাতাতেও হয়। এর জন্য যে অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেটি রেডিয়োফ্রিকোয়েন্সির সাহায্যে মাইক্রোনিডলিং প্রযুক্তিতে ত্বকের গভীরে পৌঁছে সমস্যার সমাধান করে। তবে সানিয়ার মতো তারকারা এর সঙ্গে অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিও মিলিয়ে নেন আরও ভাল ফল পাওয়ার জন্য।’’ প্লেটলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা ইঞ্জেকশন তার মধ্যে অন্যতম।
মাইক্রোনিডলিং চিকিৎসা কত দিন স্থায়ী হয়?
কী ধরনের ব্র্যান্ডের ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে এই চিকিৎসার স্থায়িত্ব। ডলি বলছেন, ‘‘এই চিকিৎসার সুফল ৩ মাস থেকে দেড় বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। অনিয়মিত জীবনযাপন না করলে আরও বেশি দিন স্থায়ী হতে পারে এর প্রভাব।’’
খরচ কী রকম?
এ দেশে মাইক্রোনিডলিং চিকিৎসার খরচ কমপক্ষে ২৫-৩৫ হাজার টাকা। তবে কী চিকিৎসা করাতে চান, ত্বক কী অবস্থায় রয়েছে, সে সবের উপরেও খরচ নির্ভর করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy