(বাঁ দিক থেকে) অভিষেক রায়, মনামী ঘোষ এবং অর্জুন চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।
৩৬৫ দিনের অপেক্ষার শেষ। উমা আসছেন ঘরে।
বাঙালির পার্বণ মানেই আয়নার সামনে একটু বেশি ক্ষণ কাটানো। পরিপাটি করে শাড়ি পরা থেকে ভাঁজহীন পাঞ্জাবি— উৎসবের সাজ হওয়া চাই নিঁখুত। পুজোর আবহে প্রতিটি মুহূর্ত আরও রঙিন হয়ে ওঠে মনপসন্দ সাজগোজে। পাঁচ দিনের পুজোয় সাজগোজেও চাই বৈচিত্র। এক দিনের সাজ যেন অন্য দিনের সঙ্গে মিলে যায়। সাজগোজ করা যতটা সহজ বলে মনে হয়, ঠিক যে ততটাও সহজ নয়, তা অনেকেই মর্মে মর্মে অনুভব করেছেন। পুজোর ভিড়েও অন্য কারও চোখে পড়তে চাই আলাদা কৌশল। এমনিতে সাজগোজের ক্ষেত্রে ব্যক্তিপছন্দ প্রাধান্য পায়। সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে একটু টুইস্টেরও দরকার হয়। ছোটখাটো কলা-কৌশলে সাধারণ সাজেও অসাধারণ দেখাতে পারে। আনন্দবাজার অনলাইনের পাতায় শেষ মুহূর্তের সাজের খুঁটিনাটি বিষয়গুলি মনে করিয়ে দিচ্ছেন টলিউডের অন্যতম তিন ফ্যাশনিস্তা।
পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়ের টোটকা
পোশাকশিল্পী হিসাবে অভিষেক রায়ের পরিচিতি আর শুধু টলিউডে আটকে নেই। বলিউডেও হাতেখড়ি হয়েছে অভিষেকের। পটৌদি বাড়ির চৌকাঠ পেরিয়েছেন তিনি। এখন যে কোনও উৎসবেই সইফ আলি খানের পরনে থাকে অভিষেকের নকশা করা পাঞ্জাবি। অভিষেক জানান, সইফ খুবই আরামদায়ক পোশাক পরতে ভালবাসেন। সইফ মনে করেন তাতেই নাকি আসল ফ্যাশন লুকিয়ে আছে। সেটা মানেন অভিষেক নিজেও। তাই অভিষেক বলেন, ‘‘পুজোর সাজ নিয়ে ভাবার সময় শেষ। এ বার সাজগোজের পালা। তাই পোশাক বা জুতো পরার আগে মাথায় রাখতে হবে সেটা যেন স্বস্তি দেয়। পুরো লুকটা যাতে নিখুঁত হয়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।’’ পুজোয় বৃষ্টির হওয়ার একটা আশঙ্কা আছে। সে ক্ষেত্রে অভিষেকের পরামর্শ, শাড়ি সামলাতে সমস্যা হলে সালোয়ার কামিজ, কো-অর্ড হাতের কাছে গুছিয়ে রাখতে পারলে ভাল। আশ্বিনেও বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে। সেটাও ভুলে গেলে চলবে না। সে ক্ষেত্রে সকালের দিকে সুতির পোশাক পরা শ্রেয় বলে মনে করছেন অভিষেক।
ছেলেদের সাজে শেষ তুলির টান দিলেন মনামী ঘোষ
বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে মনামীর ফ্যাশন সচেতনতা আলাদা করে প্রশংসিত হয়। সাজগোজের ক্ষেত্রে অনেকেই তাঁকে অনুসরণ করেন। তবে তরুণ প্রজন্মকে যে সাজগোজ নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার আর দরকার পড়ে না, সেটাই মনে করেন মনামী। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘জেন-জি প্রজন্ম সাজগোজের বিষয়ে আমাদের চেয়েও খানিকটা এগিয়ে। আমরা বরং তাঁদের থেকে শিখি।’’ ছেলেদের সাজের ক্ষেত্রে মনামী প্রথম যে বিষয়টি মাথায় রাখার কথা জানান, তা হলে সকলের চেয়ে আলাদা দেখানো। ভিড়ের মাঝেও যাতে আলাদা করে চোখে পড়ে, ষষ্ঠী থেকেই তেমন করে সাজের পরামর্শ দেন অভিনেত্রী। তবে অন্যের নজর কেড়ে নেওয়ার জন্য যে প্রচুর সাজগোজ করতে হবে, তার কোনও মানে নেই। মোট কথা ছেলেদের উদ্দেশে মনামীর বার্তা, সাজগোজের ক্ষেত্রে যেন স্বকীয়তা বজায় থাকে। পাশাপাশি পুজোয় ছেলেদের ধুতি পরার একটা চল থাকে। মনামীর মতে, কেউ যদি ধুতি পরতে স্বচ্ছন্দ হন তা হলে ঠিক আছে। তবে আত্মবিশ্বাস না থাকলে ধুতি পরাটা ঝুঁকির। তার চেয়ে পাঞ্জাবির সঙ্গে ডেনিম পরে নেওয়া যেতে পারে। পাঞ্জাবি-ধুতির পাশাপাশি এই লুকটাও যে চমৎকার হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত মনামী। পোশাকের সঙ্গে ছেলেরাও চাইলে পরতে পারেন গয়না। কানে স্টাড অনেক পুরুষই পরেন। এ ছাড়াও পাঞ্জাবির সঙ্গে কারা ধরনের কিছু গয়না পরা যেতে পারে। হদিস দিলেন মনামী।
মেয়েদের সাজে শেষ তুলির টান দিলেন অর্জুন চক্রবর্তী
সাজগোজের ক্ষেত্রে অর্জুন নিজে ভীষণ ভাবে নির্ভরশীল স্ত্রী সৃজার উপর। বেশির ভাগ সময়ে সৃজার পছন্দেই যে তিনি সাজেন, সেটা একবাক্যে স্বীকার করে নিলেন অভিনেতা। অর্জুন বলেন, ‘‘বাড়িতে স্ত্রী হলেন আমার স্টাইলিস্ট। ও আমার পছন্দ জানে। সৃজার পছন্দেই পুজোয় সাজব।’’ নিজের সাজগোজের ক্ষেত্রে স্ত্রীর উপর অগাধ ভরসা থাকলেও মহিলাদের সাজ নিয়েও তাঁর যথেষ্ট জ্ঞান আছে। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, নারীকে সবচেয়ে সুন্দর দেখায় শাড়িতে। কেউ যদি শাড়ি পরে গোটা শহর চষে ঠাকুর দেখতে পারেন, তা হলে তাঁর শাড়ি পরাই উচিত। স্পষ্ট জানালেন অর্জুন। তবে অনুষ্ঠানের স্বাদ এবং রুচি অনুযায়ীও সাজার কথা মনে করিয়ে দিলেন অভিনেতা। বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও খেতে যাওয়ার সাজ আর ঠাকুর দেখতে যাওয়ার সাজ এক হবে না। সেটা মাথায় রাখতে বলেন অর্জুন। আবার কারও যদি শাড়ি সামলাতে সমস্যা হয়, সে ক্ষেত্রে সালোয়ার কামিজ় সবচেয়ে ভাল বিকল্প বলে মনে করেন অভিনেতা। তবে উৎসবের সময় নিজের পছন্দে সাজগোজ করা জরুরি, সেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয় অর্জুনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy