সরস্বতী পুজো এসে গেল। হাতে সময় খুব কম। কিন্তু অফিসে কাজের চাপে আর পার্লারে যাওয়ার সময় হচ্ছে না। এ দিকে ধুলোময়লা, নোংরা জমে ত্বকের অবস্থা বেহাল। নাকের উপর ব্ল্যাকহেড্স, চোখের তলায় কালির দাগ দেখতে মোটেই ভাল লাগছে না। বাড়ি ফিরে যত্ন করে রূপচর্চা করারও সময় নেই। হয়তো ভেবে রেখেছেন, পুজোর আগের দিন পার্লারে গিয়ে গাঁটের কড়ি খসিয়ে কোনও দামি ফেশিয়াল করে নিলেই ত্বকে জেল্লা ফিরে আসবে। তা কিন্তু একেবারেই নয়। বরং ঘরোয়া উপকরণ দিয়েই যদি রূপচর্চা করেন, তা হলে পুজোর দিন আপনার ত্বকই সবচেয়ে বেশি জেল্লাদার হয়ে উঠবে। মেকআপ করার দরকারই পড়বে না।
পুজোর সকালে শাড়ির সঙ্গে সাজ মানানসই তখনই হবে, যখন ত্বক ভিতর থেকে সতেজ থাকবে। তার জন্য তিন ফেসপ্যাকই যথেষ্ট। রাতে ঠাকুর সাজানোর ফাঁকে নিজের জন্য বার করতে হবে ১৫ মিনিট। সামান্য উপকরণেই তৈরি হয়ে যাবে প্যাক। এক রাতের মধ্যেই ঝলমল করবে ত্বক।
হলুদের গুণে মুছবে দাগছোপ
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হলুদের গুণে দাগছোপ উঠে যাবে। ত্বকের রন্ধ্রে জমে থাকা ধুলোময়লা টেনে বার করতে হলুদের জুড়ি মেলা ভার। হলুদের ফেসপ্যাক মুখে লাগালে প্রথমেই ত্বকে ঠান্ডা অনুভূতি হবে। হলুদ ত্বকে লাগালে, ত্বকের রং উজ্জ্বল হয়, ব্রণ-ফুস্কুড়ির সমস্যা কমে। হলুদের ফেসপ্যাক এক দিনেই মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।
কী ভাবে ফেসপ্যাক বানাবেন?
আধ চা-চামচ হলুদ গুঁড়োর সঙ্গে এক চা চামচ বেসন, এক চা চামচ দই আর কয়েক ফোঁটা মধু একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে।
আরও পড়ুন:
হালকা হাতে বা ব্রাশ দিয়ে মুখে-গলায়, দুই হাতেও মেখে নিতে পারেন। হলুদের ফেসপ্যাক লাগানোর পরে ১৫-২০ মিনিট রাখবেন। তার বেশি নয়। এর পর ঈষদুষ্ণ জলে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিতে হবে।
ট্যান পড়া ত্বকের জেল্লা ফেরাবে সুজি
জলখাবারে সুজি তো খান, তা দিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে দেখেছেন কখনও? সুজি ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে পারে। সুজির সঙ্গে দই বা কফি মিশিয়ে রূপচর্চা করেন অনেকেই। এতে খুব তাড়াতাড়ি ত্বকের জেল্লা ফিরে আসে। রোদে ঘুরে যাঁদের ত্বকে ট্যান পড়েছে, তাঁরা সুজি দিয়েই বানিয়ে নিতে পারেন ফেসপ্যাক।
কী ভাবে বানাবেন?
২ চা চামচ সুজির সঙ্গে ১ চা চামচ দই, এক চামচ মধু ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে নিতে হবে। মিশ্রণটি যেন মিহি হয়, দলা পাকিয়ে গেলে চলবে না। মিশ্রণটি একটু পাতলা করতে হবে। যদি সুজি দলা পাকিয়ে যায়, তা হলে আরও এক চামচ দই মিশিয়ে নিতে পারেন।
ত্বকে ভাল করে এই ফেসপ্যাক লাগিয়ে ২০ মিনিট থাকতে হবে। ওই সময়ে মুখে গরম জলের ভাপ নিলে ত্বকের রন্ধ্রে জমে থাকা ধুলোময়লা বেরিয়ে যাবে। এর পর ঈষদুষ্ণ জলে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
জাদু করবে নারকেল তেল
ত্বক যদি খুব শুষ্ক হয়ে যায়, চামড়া কুঁচকে যায়, তা হলে সেই ত্বকের জন্য নারকেল তেলই ভাল। কোনও রকম প্রসাধনী ব্যবহার না করে নারকেল তেল নিয়েই রূপচর্চা করলে উপকার পাবেন। নারকেল তেলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন ই ও ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
নারকেল তেলের প্যাক কী ভাবে বানাবেন?
এক চা চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে নিন। ঘন মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। তার পর ধীরে ধীরে মুখে মালিশ করুন এই মিশ্রণ। ৩০-৪০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। এই ফেসপ্যাক খুব তাড়াতাড়ি ত্বকের জেল্লা ফেরাবে। ত্বক নরম এবং মসৃণও করবে।