চুলের যত্নে নারকেল তেলের ব্যবহার বহু পুরনো। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ফ্যাটি অ্যাসিডে পূর্ণ নারকেল তেল চুল মসৃণ রাখতে এবং পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে। কিন্তু অনেক সময়েই দেখা যায়, শুধু নারকেল তেল মেখে কাজ হচ্ছে না। বিশেষত চুল ঝরা, খুসকি, ডগা ফাটার মতো সমস্যা চট করে সারে না।
এই সময়ে কী করবেন তা নিয়ে ভাবতে গিয়ে কেশচর্চার সঠিক উপায় খুঁজে পান না অনেকেই। তবে চুল নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন তাঁরা বলেন, মাথায় সঠিক পদ্ধতিতে তেল মালিশের নানা রকম উপকারিতা রয়েছে। তবে, শুধু নারকেল তেলে অনেক সময় চুলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি মেলে না। তাই তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন আরও কয়েকটি উপকরণ।
আরও পড়ুন:
কারিপাতা, হেনা, মেথি, তিল, জবাফুল— প্রত্যেকটি উপাদানই চুলের যত্নে ব্যবহার হয়ে আসছে বহু দিন। কারিপাতায় রয়েছে প্রোটিন ও বিটা-ক্যারোটিন, যা চুল পড়া রুখতে সাহায্য করে। এই পাতা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর, যা মাথার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে, খুশকির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। জবাফুলে অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। এটি চুলে কেরাটিন প্রোটিনের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে। এতে থাকা ভিটামিনও চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ, বি, সি, কে, প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ফসফেট, ফলিক অ্যাসিড, ফ্ল্যাভনয়েডের মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ মেথি চুল ঝরা রুখতে, খুশকি দূর করতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। এ ছাড়াও হেনা বা মেহেন্দি, তিল— সমস্ত উপাদানেরই নির্দিষ্ট পুষ্টিগুণ রয়েছে।
উপকরণ
২৫০ গ্রাম খাঁটি নারকেল তেল
১০-১২টি জবা ফুল
১ কাপ কারিপাতা
আধ কাপ মেহেন্দি পাতা
এককাপ ব্রাহ্মীশাক
৩টি আমলকি
২ টেবিল চামচ মেথিদানা
১ টেবিল চামচ কালো তিল
পদ্ধতি
সমস্ত রকম শাকপাতা ধুয়ে খুব ভাল করে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। পরিষ্কার কাপড়ে মধ্যে পাতাগুলি রেখে শুকিয়ে নিন। আমলকিও ধুয়ে শুকিয়ে কুচিয়ে নিন। লোহার কড়ায় তেল প্রস্তুত করা গেলে সবচেয়ে ভাল হয়। মাঝারি আঁচে তা তৈরি করতে হবে। তেল গরম হলে তাতে দিন আমলকি কুচি। তার পর একে একে দিন মেথিদানা, কালো তিল। আঁচ কমিয়ে সেগুলি রেখে দিন। মিনিট ১০-১৫ পরে যোগ করুন জবা ফুল। ফুল দেওয়ার কিছু পরেই তেলের রং বদলে যাবে। আঁচ বন্ধ করে সেটি ঠান্ডা করে নিন। সমস্ত উপকরণ ছেঁকে পরিষ্কার কাচের বোতলে ভরে রাখুন।
ব্যবহার বিধি
· তেল মালিশ কিন্তু নোংরা চুল বা মাথার ত্বকে করা চলে না। তাই তেল মালিশের আগে শ্যাম্পু করে চুল শুকিয়ে নেওয়া দরকার। কারণ, ভিজে চুলে মালিশ করলে চুল ঝরে পরার ঝুঁকি থাকে।
· মাথার ত্বক থেকে চুলে ভাল করে তেল লাগিয়ে হালকা হাতে মালিশ করে নিন।
· আধ ঘণ্টা বা ঘণ্টাখানেক সেই তেল মাথায় মেখে রাখুন। তার পর মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। এর মধ্যে কোনও উপকরণে কারও অ্যালার্জি থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেটি বাদ দিতে হবে। না হলে তেল ব্যবহারের আগে ত্বকের কোথাও লাগিয়ে দেখে নিন চুলকানি, জ্বালা বা অন্য সমস্যা হচ্ছে কি না। চুল ঝরার নানা কারণ থাকে। এতেও সমস্যা না মিটলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।