সন্তান জন্মের পরে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যায় অনেকেরই। হরমোনের তারতম্যের কারণে চুল পাতলাও হয়ে যেতে শুরু করে। সদ্য মা হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। কী মাখলে চুল পড়া বন্ধ হবে, সে নিয়ে ইন্টারনেটেও বিস্তর খোঁজাখুঁজি হয়। আবার দোকান থেকে রাসায়নিক দেওয়া কোনও সিরাম বা হেয়ার-মাস্ক ব্যবহার করতেও ভয় লাগে। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ উপায়ে দোকানের মতোই সিরাম বানিয়ে নেওয়া যায় বাড়িতেই।
অন্তঃসত্ত্বাদের প্রোজেস্টেরন হরমোন অনেকটা বেশি থাকে। কমতে থাকে ইস্ট্রোজেন। তার ফলেই বেশি চুল পড়ে। আবার সন্তানের জন্মের তিন থেকে ছ’মাস পর ধীরে ধীরে নতুন চুল উঠতে শুরু করে। তাই চিন্তার কারণ নেই। চুলের পরিচর্যা সঠিক উপায়ে করতে হবে। চুলের ঘনত্ব বাড়াতে চাইলে ক্যাস্টর অয়েলই সবচেয়ে বেশি কাজে দেবে।
ক্যাস্টর অয়েল খুব ঘন। তাই চুল আঠালো হয়ে যাবে ভেবে, অনেকেই ব্যবহার করতে চান না। কিন্তু যদি সিরাম বানিয়ে নেওয়া যায়, তা হলে চুলে মাখা সহজ হবে। ক্যাস্টর অয়েলে ওমেগা ৬ ও ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা চুলের গোড়া মজবুত করে। মাথার ত্বকে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায়, যা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। চুল শুধু ঝরে যাওয়া নয়, চুল রুক্ষ হয়ে গেলে মোটেই তা দেখতে ভাল লাগে না। যত্ন না করলে ডগা ফাটা, চুল উঠে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। তাই চুলে মসৃণতা বজায় রাখতেও ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন:
ক্যাস্টর অয়েলের সিরাম কী ভাবে বানাবেন?
উপকরণ
২ চামচ ক্যাস্টর অয়েল
১ চামচ নারকেলের তেল
১ চামচ আর্গান অয়েল
১ চামচ ভিটামিন ই তেল
এসেনশিয়াল অয়েলের জন্য
৫ ফোঁটা রোজ়মেরি অয়েল
৫ ফোঁটা পেপারমিন্ট অয়েল
৫ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল
প্রণালী
একটি কাচের বোতল নিতে হবে। সেটি আগে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। বোতলে ময়লা থাকলে সিরাম কম দিনেই নষ্ট হয়ে যাবে।
একটি পাত্রে নারকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল, ভিটামিন ই তেল, আর্গান অয়েল নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
এ বার সেই তেলে অল্প অল্প করে মেশান এসেনশিয়াল অয়েলগুলি। ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে।
এর পর তেলের মিশ্রণ কাচের বোতলে নিয়ে ভাল করে ঝাঁকিয়ে নিন। বোতলের মুখটি ভাল করে বন্ধ করতে হবে। তেলের শিশি রোদে রাখবেন না।
ব্যবহারের নিয়ম
শিশি থেকে ড্রপারে করে তেল নিয়ে মাথার ত্বকে, চুলে ভাল করে মালিশ করতে হবে। এ বার ভেজা তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন কিছু ক্ষণ। এই তেল সারা রাত মেখে রাখলে উপকার বেশি হবে। সকালে হালকা কোনও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নেবেন।
সকালে স্নানের আগেও ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে চুলে তেল মালিশ করে গরম জলে ভেজানো তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রাখতে হবে আধ ঘণ্টার মতো। এতে তেল তাড়াতাড়ি মাথার ত্বকে বসে যাবে। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন এই ভাবে ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হবে। চুল নরম ও মসৃণও হবে।